২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
বাবা দিবস

গল্পের জাদুকর

-

অ্যান্টার্কটিকার বরফের মধ্যে পেঙ্গুইনরা কিভাবে বাস করে কিংবা কিভাবে আফ্রিকার জঙ্গল থেকে হাতি ধরা হয়, কিভাবে তাকে পোষ মানানো হয়Ñ এসবই যেন দু’চোখের সামনে ভাসতে দেখতাম শৈশবে। দেখতাম দুপুরে খাওয়ার পর আব্বার সাথে ঘরের চৌকিতে শুয়ে শুয়ে। তার বলার মুনশিয়ানায় যেন চোখের সামনেই ভাসত সব। এভাবে ঘরে বসেই পুরো পৃথিবী চিনিয়েছিলেন আব্বা।
প্রাচুর্য না থাকায় পৃথিবী, দেশ ঘুরিয়ে দেখাতে পারেননি। দেখতে পারেননি নিজেও; কিন্তু সন্তানের চোখের সামনে পুরো পৃথিবী তুলে ধরতে চেষ্টার কমতি ছিল না তার। তা হতো গল্পের ছলে। তাই তো ঘরে বসেই জেনেছি নদীতে বাঁধ দিয়ে কিভাবে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করা হয়, গ্রহ-নক্ষত্র, ছায়াপথ কিভাবে মহাকাশে বিচরণ করে। গাছের খাদ্য তৈরির পদ্ধতি থেকে মহাবীর নেপোলিয়নের যুদ্ধজয়Ñ কী ছিল না সেই গল্পে!
শিক্ষক ছিলেন আব্বা। স্কুল থেকে ফিরে দুপুরের খাবারের পর শুরু হতো তার গল্পের আসর। দুপুরের রোদে আমার খেলতে নামা ঠেকিয়ে রাখাও ছিল সেই গল্পের একটা উদ্দেশ্য। গল্পের ছলেই শিখিয়ে দিতেন দেশ, দুনিয়া, জীবন। বই পড়ার পোকাটাও শৈশবে মাথার মধ্যে ঢুকিয়ে দিয়েছেন। বড় হয়ে শুনেছি, তিন বছর বয়সের সময় আমি ১৭ পর্যন্ত গুনতে পারতাম, কারণ তখন আমার বই ছিল ১৭টি। আব্বার শহরে যাওয়া মানেই ছিল আমার একটি নতুন বই পাওয়া।
মজার মজার সব গল্প বলার বিষয়েও আব্বার সুখ্যাতি আছে। বোকা লোককে ঠকিয়ে ‘ঘোড়ার ডিম’ বিক্রি করা কিংবা নিজের নাক কেটে রাজার যাত্রা ভঙ্গ করার আব্বার গল্পগুলো নিখাদ বিনোদন দিত আমাকে।


আরো সংবাদ



premium cement