২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

কেউ কেউ একা

চারাগল্প
-

বোটানিক্যাল গার্ডেনে এসে ফাহিমের জন্য অপেক্ষা করছে জয়িতা। একটু আগে ফোনে কথা হয়েছে। ফাহিম একটু পর এখানে এসে নাকি কী একটা খুশির খবর দেবে!
জামরুল গাছের তলে দাঁড়িয়ে থাকা জয়িতার বড্ড চেনা চেনা লাগছে এদিকে আসা ভদ্রলোকটাকে। ভদ্রলোক কাছে আসতেই জয়িতা চিনতে পারল তিনি দেশের প্রখ্যাত গায়ক আমজাদ আলী। এই গায়কের একনিষ্ঠ ভক্ত জয়িতা। এর আগে কয়েকটি প্রোগ্রামে জয়িতা আমজাদ আলীকে খুব কাছ থেকে দেখলেও তখন অটোগ্রাফ নেয়ার সুযোগ পায়নি। আজ সেই সুযোগ হাতছাড়া করা যাবে না। ভ্যানেটি ব্যাগ খুলে কোনো কাগজের পাতা খুঁজে না পেলেও এক টুকরো টিস্যু পেপার আর কলম পেয়ে সেটি নিয়ে আমজাদ আলীর দিকে এগিয়ে এসে অটোগ্রাফ চায় জয়িতা। আমজাদ আলী জয়িতার মনোভাব অনুমান করে বুঝতে পারলেন এই মেয়ে তার বিরাট ভক্ত। কিন্তু জীবনে এই প্রথম কোনো ভক্তকে টিস্যু পেপারে অটোগ্রাফ দেয়ার অভিজ্ঞতা অর্জন করলেন তিনি। অটোগ্রাফে আমজাদ আলী লিখলেন, ‘সুখি হও মা।’ খানিক দাঁড়িয়ে দু’জনে কথাও বললেন। জয়িতা জানল প্রকৃতিপ্রেমী আমজাদ আলী প্রায়ই এখানে আসেন গাছপালা দেখতে।
আমজাদ আলী চলে যাচ্ছেন। জয়িতা অপলক তাকিয়ে থাকে মানুষটার দিকে। তার চোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ল পানি। ইচ্ছে করছে মানুষটাকে ডেকে এনে বলবে, ‘বাবা, আমি তোমার ছোট্ট সেই জয়িতা।’ টিস্যু পেপারে লেখা অটোগ্রাফের দিকে তাকাতেই বড় কান্না পেল।
ফাহিম চলে এসেছে। জয়িতার চোখে পানি দেখে প্রথমে সে অবাক হয়। পরে বিস্তারিত সব শুনে দুঃখ প্রকাশ করল। জয়িতা বলে, ‘তুমি তো জানো দেশের জনপ্রিয় গায়ক আমজাদ আলী আমার জন্মদাতা পিতা। ছোটবেলায় মা মারা যাওয়ার পর বাবা আমাকে বড়খালার কাছে রেখে আসেন। প্রথম কয়েক মাস খবর নেন। টাকা পয়সাও পাঠাতেন। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর বাবা আমার খবর নেয়া বন্ধ করে দেন। জীবনে আর একবারও আমার খবর নেননি। দ্বিতীয় সংসার, সন্তান, যশ-খ্যাতি আর তারকা জীবনে ডুবে গিয়ে বাবা ভুলে গেলেন আমাকে।’
হু হু করে কাঁদে জয়িতা। ফাহিম সান্ত্বনা দেয়। ব্যথিত জয়িতা নরম গলায় বলে, ‘এই দুনিয়াতে আমি বড় একা ফাহিম। কেউ নেই আমার।’ ফাহিম আদুরে গলায় বলে, ‘তুমি একা নও। আমি আছি। মাকে তোমার ব্যাপারে সব বলেছি। মা রাজি। শিগগিরই তোমার বড় খালার কাছে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যাবেন।’
জয়িতার কান্না ভীষণ বাড়ল। এই কান্না বড় সুখের। এতদিন নিজেকে বড় একা ভাবলেও জয়িতা এখন মনে করছে সে একা নয়। তার একজন নির্ভরতার মানুষ আছে। সেই মানুষটি ফাহিম। ফাহিমের বুকে মাথা রেখে এখন জয়িতার একটু কাঁদতে ইচ্ছে করছে। হাতের টিস্যু পেপারে বাবার দেয়া অটোগ্রাফটির দিকে আবার তাকাল। সেখানে লেখাÑ ‘সুখি হও মা।’
আমিশাপাড়া, নোয়াখালী।

 


আরো সংবাদ



premium cement
ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সেতু ভাঙ্গার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে! নাশকতার মামলায় চুয়াডাঙ্গা বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে হারল্যানের পণ্য কিনে লাখপতি হলেন ফাহিম-উর্বানা দম্পতি যাদের ফিতরা দেয়া যায় না ১৭ দিনের ছুটি পাচ্ছে জবি শিক্ষার্থীরা বেলাবতে অটোরিকশা উল্টে কাঠমিস্ত্রি নিহত রোহিঙ্গা ইস্যুতে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদন

সকল