২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বইমেলার স্মৃতি

জীবনের বাঁকে বাঁকে
-

২০১৫ সাল, বাংলা ভাষার মাস, ফেব্রুয়ারি চলছে। অফিসের কী যেন একটা কাজে আমি ঢাকায় এসেছি। অফিসের কাজ শেষ করে গাজীপুরে ফিরে যাবো। শাহবাগে আমার এক বন্ধু থাকে। ফোন করে বলল, আমি যেন ওর বাসায় যাই। ছোট বেলার বন্ধু বলে কথা! শেষ বিকেলের সূর্যের আলো নিভু নিভু করছে। আমি চলে এলাম বন্ধুর বাসায়। একটু বিশ্রাম শেষে বন্ধু বলল। চলো আমরা বাংলা একাডেমির একুশে বইমেলা থেকে ঘুরে আসি। যদিও এর আগে টিভিতে, খবরের কাগজে অনেক দেখেছি এবং পড়েছি বাংলা একাডেমির বইমেলার বিষয়ে। তবে জীবনে কখনো বই মেলায় যাওয়া হয়নি। বন্ধু বইমেলার কথা বলতেই লোভ সামলাতে পারলাম না। বন্ধুর সাথে বেরিয়ে পড়লাম বইমেলার উদ্দেশে। যতই মেলার কাছাকাছি চলে আসছি ততই অবাক হচ্ছি। বইমেলার বাইরে মানুষ আর মানুষ। শত শত তরুণ-তরুণী, শিশু-কিশোর। কেউ বাবা-মায়ের সাথে। আর কেউ বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে দলবেঁধে মেলার দিকে চলছে। স্কুল কলেজ পড়–য়ারাও দল বেঁধে চলছে। আহা! বাংলা ভাষার প্রতি, বাংলা বইয়ের প্রতি সমাজের সব পেশার মানুষের এমন ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ হলাম। দেখতে দেখতে আমি আর বন্ধু, মিশে গেলাম মানুষের সমুদ্রে। বইমেলার মূল ফটকে গিয়ে দেখি। বিশাল লম্বা লম্বা দু’টি লাইন। বইমেলায় ঢোকার জন্য সবাই সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। কেউ কাউকে ধাক্কাধাক্কিও করছে না। একসময় বইমেলার ভেতরে প্রবেশ করলাম। শুধু বইমেলাকে কেন্দ্র করে এত বড় আয়োজন! বইমেলায় না এলে হয়তো আমি কখনো কল্পনায়ও ভাবতাম না। বিশাল বড় মাঠ জুড়ে, যত দূরে চোখ যায় শুধু মানুষ আর বইয়ের স্টল। প্রতিটি স্টল সাজানো নানা রঙে! বড় বড় লেখক কবির ছবিও শোভা পাচ্ছে স্টলের দেয়ালজুড়ে। প্রতিটি স্টলে নানা বয়সের মানুষের ভিড় লেগে আছে। আমি আর বন্ধু মিলে মেলাজুড়ে অনেক স্টল ঘুরে ঘুরে দেখলাম। পাঁচটা বইও কিনে নিলাম। আহা! নতুন বইয়ের ঘ্রাণ! মনের মাঝে অন্যরকম অনুভূতি খেলা করছে। দু’জন লেখকের হাত থেকে তাদের লেখা বই অটোগ্রাফসহ কিনলাম। লেখকের হাত থেকে বই নিয়েছি। এই কথা ভাবতেই যেন শিহরণ বয়ে যায় আমার অবয়বজুড়ে। সুন্দর মুহূর্তগুলো খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়! দেখতে দেখতে রাত ৮টা বেজে গেল। আমি আর বন্ধু চলে এলাম বইমেলা থেকে। বাসে চড়ে ফিরে আসছি গাজীপুর। তবে বইমেলার স্মৃতি আমি কিছুতেই ভুলতে পারি না। বাংলা ভাষার প্রতি, বাংলা লেখার প্রতি অন্যরকম একটা ভালোবাসার জন্ম নিলো আমার মনে। সেদিন রাতে বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে, বিছানায় শুয়ে, বইমেলা থেকে কিনে আনা বইগুলো থেকে একটি পড়লাম। সেদিনের পর থেকে আস্তে আস্তে বইয়ের প্রতি আমার ভালোবাসা বেড়ে গেল। বই হলো আমার জীবন চলার সাথী। এখন এক দিন বই না পড়লে আমার ভালো লাগে না। অবসর সময়ে, নানা রকম গল্প ছড়ার বই পড়ি। মাঝে মাঝে টুকটাক নিজেও লেখার চেষ্টা করি। দৈনিক পত্রিকাগুলোর সাহিত্য পাতায় মাঝে মাঝে নিজের লেখা ছাপতে দেখলে আনন্দে মনটা আত্মহারা হয়ে ওঠে। সেদিনের সেই বইমেলার স্মৃতি আজো আমি ভুলতে পারি না। কারণ ওই বইমেলার সাথে জড়িয়ে আছে আমার লেখক হওয়ার পেছনের গল্প।
দুর্গাপুর, কুড়িগ্রাম

 


আরো সংবাদ



premium cement
আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত জমি রেজিস্ট্রি করে না দেয়ায় বাবার কবরে শুয়ে ছেলের প্রতিবাদ ইসরাইলি হামলায় গাজায় আরো ৭১ জন নিহত পানছড়ি উপজেলায় চলমান বাজার বয়কট স্থগিত ঘোষণা আওয়ামী লীগ দেশের স্বাধীনতাকে বিপন্ন করেছে : দুদু

সকল