২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ভালোবাসার শেষ ইচ্ছে

চারাগল্প
-

কতদিন এভাবে চেয়ে থাকব? ওই আকাশের শেষ সীমানায়! তাকিয়ে থাকতে থাকতে হয়তো জীবনের সব গোধূলিলগ্ন যাবে। মরণ কাছে এসে আলিঙ্গন করে বলবে, ‘চলো এবার ফিরতে হবে নীড়ে’। তবুও মনে হচ্ছে আমার শেষ স্বপ্ন অধরাই রয়ে যাবে। এমন প্রতীক্ষার প্রহর গুনতে গুনতে আজ মুখের রেখারা স্পষ্ট হতে চলেছে। জানি না এভাবে কতদিন অপূর্ণ রয়ে যাবে আমার শেষ আশা। শেষ ইচ্ছে!
বিদায়বেলায় নিলার কাছে বেশি কিছু আবদার করিনি আমি। তার হাত দুইখানা ধরে ছুঁয়ে দেখতে চাইনি। চাইনি আলিঙ্গন করে শেষ উষ্ণতা পেতে। তাকে বলেছিলাম, ‘জীবনের শেষলগ্নে হলেও আমার সাথে একবার দেখা দিয়ে যেও! তোমার দেখার আজন্ম সাধ আমার কখনোই মেটে না!’ কিন্তু আমার এই শেষ কথাটা রাখার সময়ও বুঝি নিলার নেই! জীবন ঘড়ি থেমে নেই। ধুঁকতে ধুঁকতে জীবনের শেষপ্রান্ত পর্যন্ত চলে এসেছি প্রায়ই।
অথচ এই নিলা সেই কিশোরকাল থেকে যৌবন পর্যন্ত আমাকে না দেখলে অস্থির হতো। ছটফট করত। তার এই অস্থিরতার কারণে আমাদের গোপন পুতুল খেলার বিস্ফোরণ হয়েছিল।
নিজের শিশু বোনকে দিয়ে আমাকে দেখা করার খবর পাঠিয়েছিল। এও বলেছিল আমাকে না দেখে আর থাকতে পারছে না। আমার সাথে গোপনে পুতুল খেলতে চায়! সেই শিশু না বুঝে এই গোপন কথাগুলোর গোপনীয়তা রক্ষা না করে গড় গড় করে অনেকের সামনেই আমাকে বলেছিল।
ফর্দা ফাঁস হওয়ার পর নিলার পরিবারের অনেকের টনক নড়েছিল। মেয়ে তো বড় হয়ে পড়েছে। দ্রুত ঝেড়ে বিদায় করে আমার হাত থেকে বাঁচালেন তারা। বিদায়বেলায় নিলা আমার সাথে গোপনে দেখা করতে এসেছিল। সে আমার কাছে জানতে চেয়েছিল আমার কোনো শেষ কথা আছে কিনা? আমিও নির্দ্বিধায় বলে দিয়েছিলাম, ‘যেখানেই থাকো শেষলগ্নে হলেও আমার সাথে একবার দেখা দিয়ে যেও! মরার আগে শুধু তোমাকে একবার দেখে যেতে চাই!’
সেই থেকে আশায় আশায় আমার দিন কেটে যাচ্ছে। জীবনের শেষলগ্নে পৌঁছে গেছি। কিন্তু এখনো তার দেখা পেলাম না! শেষ স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা জানি না!
পূর্ব শিলুয়া, ছাগলনাইয়া, ফেনী


আরো সংবাদ



premium cement