২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

প্রসঙ্গ : পুরুষ নির্যাতন

-

একসময় ধারণা ছিল, পারিবারিক সহিংসতার শিকার শুধু নারীরাই হন। এর ফলে নারীদের অধিকার রক্ষায় ও পারিবারিক সহিংসতা রোধ করার জন্য বেশ কিছু আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে যুগের সাথে মানসিকতার পরিবর্তন এবং প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা জানতে পারছি, পুরুষরাও পরিবারে সহিংসতার শিকার হচ্ছেন। দীর্ঘকাল ধরে পরিবারে পুরুষ যে নারী কর্তৃক শারীরিক বা মানসিকভাবে নির্যাতিত হতে পারেন সে ব্যাপারে খুব বেশি ধারণা বা আলোচনা কোনোটিই ছিল না। এর অন্যতম প্রধান কারণ একজন পুরুষ তার স্ত্রী কর্তৃক নির্যাতিত হচ্ছেন এ কথা প্রকাশ হলে সমাজে তার সম্মানহানি হবে।
পুরুষ স্ত্রী কর্তৃক নির্যাতিত হচ্ছেÑ এর চেয়ে অপমানজনক বিষয় পৃথিবীতে আর কিছু নেই। এ রকম একটি চিন্তাভাবনা মানবসমাজে সেই প্রাচীনকাল থেকেই প্রচলিত। এ কারণে পুরুষরা নির্যাতিত হলেও সেটি তেমনভাবে কখনো প্রকাশ পায়নি। অন্য দিকে নারী নির্যাতন ও পরিবারে নারীদের সুরক্ষার জন্য অনেকগুলো কঠোর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে যেগুলো এখন পুরুষ নির্যাতনের অন্যতম প্রধান হাতিয়ারে পরিণত হয়েছে। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত থেকে ইতোমধ্যে এটি প্রমাণিত যে, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা মামলার বেশির ভাগই মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। পারিবারিক কলহ কিংবা অন্য কোনো কারণে স্বার্থ উদ্ধারের জন্য এসব আইনে মামলা করে প্রতিপক্ষকে চাপে ফেলা হচ্ছে। তা ছাড়া স্বামীকে কোনো অনৈতিক ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ করে স্বার্থ হাসিলের জন্য এসব আইনে মামলার ভয় দেখিয়ে মানসিক চাপ প্রয়োগ করে থাকেন অনেক মহিলা। অনেক ক্ষেত্রে চাপ সহ্য করতে না পেরে অনেক পুরুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছেন।
এসব মানসিক বা শারীরিক নির্যাতন থেকে পুরুষদের রক্ষার জন্য তেমন কোনো আইন এখনো প্রণীত হয়নি। এর ফলে পুরুষরা আইনের আশ্রয় লাভ করতে পারছেন না এবং পর্যাপ্ত প্রতিকার পাওয়া থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন। অথচ আমাদের সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুসারে সব নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান ও সমানভাবে আইনের আশ্রয় লাভের অধিকারী। নারীদের জন্য বিশেষ আইন থাকায় তারা কোন কোন নির্যাতনের শিকার হলে যেভাবে আইনের আশ্রয় নিতে পারছেন সেভাবে একজন পুরুষ স্ত্রী কর্তৃক নির্যাতিত হলেও কোনো সুনির্দিষ্ট আইনের অভাবে পর্যাপ্ত প্রতিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
নারী-পুরুষের সমতার যে মূল বিষয়বস্তু সেটিও এখানে উপেক্ষিত হচ্ছে। নারীদের জন্য যে বিশেষ আইনগুলো করা হয়েছে সেগুলোতে শুধু নারীদের জন্য প্রতিকারের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু যদি নারী-পুরুষ লিঙ্গ বিভাজন না করে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তিকে ‘মানুষ’ হিসেবে প্রতিকার দেয়ার ব্যবস্থা করা হতো তাহলে পুরুষরাও তাদের ওপর নির্যাতনের প্রতিকারও ওই সব আইনের অধীনেই চাইতে পারতেন। বর্তমান বাস্তবতায় যেহেতু পুরুষ নির্যাতনের বিষয়গুলো বেশি উঠে আসছে তাই উচিত এ ব্যাপারে দ্রুত সুনির্দিষ্ট আইন প্রণয়ন করা অথবা প্রচলিত আইনে সংশোধনী এনে পুরুষদেরও প্রতিকার লাভের সুযোগ করে দেয়া। একতরফা আইনের মাধ্যমে পারিবারিক সহিংসতা রোধ সম্ভব নয়। সহিংসতার শিকার নারী বা পুরুষ যেই হোক তাদের সমানভাবে আইনের আশ্রয় লাভের সুযোগ দিতে হবে। নারী-পুরুষকে সমানভাবে কোনো পক্ষপাত না করে আইনের আশ্রয় লাভের সুযোগ করে দেয়ার মাধ্যমেই নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিতকরণে দেশ আরো একধাপ এগিয়ে যাবে বলে আশা করা যায়। হ

 


আরো সংবাদ



premium cement
হামাসকে কাতার ছাড়তে হবে না, বিশ্বাস এরদোগানের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১০ দেশের অংশগ্রহণে সামরিক মহড়া শুরু করল আরব আমিরাত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা? কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ উদ্ধার ভুয়া সনদ সিন্ডিকেট : কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানকে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদ ঢাকার পয়োবর্জ্য-গ্যাস লাইন পরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের

সকল