২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আমাদের বিদেশপ্রীতি

-

দেশের অনেকের মধ্যে ইদানীং বিদেশপ্রীতি দৃষ্টিকটুভাবে বেড়েছে। ভাবনাচিন্তা ছাড়াই নেতিবাচক এই প্রবণতা আমাদের গ্রাস করছে। এর পেছনে হয়তো একটি কারণ থাকতে পারে, আমাদের মানসিক হীনম্মন্যতা। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের তৈরী পোশাক শিল্প খাতে ভিনদেশীরা কাজ করে বিপুল অঙ্কের টাকা নিয়ে নিচ্ছেন। অথচ তাদের মতো আমাদের অনেক যোগ্য কর্মী রয়েছে। শুধু নিজ দেশের বলে তাদের চাকরিতে নেয়া হচ্ছে না। চীনের নাগরিকরাও চাকরি করে বাংলাদেশ থেকে বিপুল অর্থ নিয়ে যাচ্ছেন। এটি শুধু বেসরকারি খাতে নয়, সরকারি খাতেও এমন ঘটনার উদাহরণ অনেক। যেমনÑ দেশে ভালো মানের প্রেস থাকা সত্ত্বে¡ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বই ছাপানো হয়েছে প্রতিবেশী এক দেশের ছাপাখানায়।
গত ১ অক্টোবর ২০১৯ ‘প্রথম আলো’র প্রথম পৃষ্ঠায় একটি খবরের শিরোনাম ছিলÑ ‘দেশী বাপেক্সের চেয়ে বিদেশী গেজপ্রমে বেশি আগ্রহ’। উপশিরোনাম ছিল, ‘ভোলার সম্ভাবনাময় গ্যাসক্ষেত্রগুলো আবিষ্কার করেছে বাপেক্স। তারপরও রাশিয়ার গেজপ্রমের সাথে যৌথ উদোগে মূল্যায়নের তোড়জোড় চলছে।’ এই খবর থেকে প্রথম কয়েকটি বাক্য এখানে তুলে ধরা হলো, ‘ভোলার শাহবাজপুর গ্যাসক্ষেত্র থেকে ১০ বছর ধরে গ্যাস উত্তোলন করে আসছে রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্স। ভোলাতেই গত বছর আরেকটি গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার করেছে রাষ্ট্রীয় এ কোম্পানি। এরপরও দেশের দক্ষিণের দ্বীপ জেলা ভোলায় গ্যাসের সম্ভাব্য মজুদ মূল্যায়নের নামে বাপেক্সের সাথে রাশিয়ার তেল-গ্যাস অনুসন্ধান ও উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান গেজপ্রমকে (আন্তর্জাতিক) যুক্ত করতে চাচ্ছে সরকার। এ লক্ষ্যে বাপেক্সের সাথে গেজপ্রমের যৌথ সমীক্ষায় সমঝোতা স্মারকও (এমওইউ) চূড়ান্ত করা হয়েছে। অন্য কারো সহায়তা ছাড়াই বাপেক্স ভোলা থেকে সফলভাবে গ্যাস উত্তোলন করার পরও সরকার কেন এই এমওইউ করতে যাচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তেল-গ্যাস খাতের সাথে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এর মাধ্যমে এক দিকে রাষ্ট্রীয় কোম্পানি বাপেক্সের কর্তৃত্ব খর্ব করা হবে। এ ছাড়া গেজপ্রমকে ২০১২ সালে দেশের যে ১০টি গ্যাস কূপ খননের দায়িত্ব (ঠিকাদারি) দেয়া হয়েছিল, সে অভিজ্ঞতা মোটেও ভালো ছিল না।’
এ দিকে ঈদের সময়ও দেখা যায়, ভারতীয়রা তৈরী পোশাক বাংলাদেশে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা বাণিজ্য করছে। তখন দেশীয় পোশাক উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোতে মন্দা অবস্থা থাকে। যেকোনো কিছুতেই বিদেশপ্রীতি কেন এত বেশি আমাদের? বিশুদ্ধ পানির ‘শিক্ষা’র জন্যও সরকারি কর্মচারীরা প্রচুর অর্থ ব্যয় করে বিদেশে যাচ্ছেন। মশার জন্যও বিদেশীদের ডেকে আনা হচ্ছে। ঢাকার কোনো কোনো মার্কেটে লেখা রয়েছে, এখানে দেশী পণ্য বিক্রি নিষেধ। ঢাকার অভিজাত শপিংমলগুলোতে ইংলিশ মিউজিক এবং ইংলিশ গান বাজানো হয়। এ ব্যাপারে সেলসম্যানকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, শপিংমলে এভাবে শব্দদূষণ করা হচ্ছে কেন? উত্তরে বলেছেন, ‘আমাদের দেশীয় কিছু নিষেধ করা হয়েছে। সব সময় বিদেশী গান ও মিউজিক বাজাতে বলা হয়েছে।’ হ


আরো সংবাদ



premium cement