২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

তরুণ প্রজন্ম ও ভাষা

-

বছরজুড়ে পাশ্চাত্য দিবসগুলোর আনাগোনা থাকলেও ফেব্রুয়ারি মাসেই লক্ষ করা যায় এর প্রবল প্রভাব। ফেব্রুয়ারির দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হয় ‘দিবস উৎসব’। ৭ ফেব্রুয়ারি শুরু হয় গোলাপ দিবস দিয়ে। এরপর প্রপোজ ডে (প্রস্তাব দিবস), চকলেট ডে, কিস ডে (চুমু দিবস), হাগ ডে (আলিঙ্গন দিবস); এমনকি বিশ্বে আকর্ষণীয় দিবস তথা ১৪ ফেব্রুয়ারি ভ্যালেনটাইনস ডে (ভালোবাসা দিবস) এবং ২১ ফেব্রুয়ারি মাসের দিবসগুলো মোটামুটি শেষ হয়। পক্ষান্তরে আমরা জানি, একুশে ফেব্রুয়ারি অন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং এ দিবস বিশ্বব্যাপী পালিত হয়। এর ঘোষণা প্রস্তাব পাস হয়েছিল ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর প্যারিসে ইউনেস্কোর ৩০তম অধিবেশনে। এ দিবসের গুরুত্ব বাংলা ভাষা ঘিরে; সে ক্ষেত্রে আমাদের দেশেও জাতীয়ভাবে বিনম্র শ্রদ্ধার সাথে এ দিবস পালিত হয়।
জাতীয়ভাবে এ দিবস পালিত হলেও তরুণ প্রজন্ম এ দিবস কিংবা এ ধরনের জাতীয় দিবসগুলো সম্পর্কে কতটুকু জানে কিংবা ধারণ করে? অথচ দেখা যাচ্ছে, তরুণ প্রজন্ম পাশ্চাত্যে প্রবর্তিত সব দিবস সোৎসাহে উদযাপন করছে। অথচ যখন তাদের প্রশ্ন করা হয়, একুশে ফেব্রুয়ারি কী দিবস কিংবা এর মহত্ত্ব কী? সে সম্পর্কে অনেকের কোনো স্পষ্ট ধারণা নেই। যদি জিজ্ঞেস করা হয়, বাংলা কত সন এখন কিংবা বাংলা মাসগুলো কী কী, এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না। এটা কি আমাদের জাতির জন্য অশনিসঙ্কেত নয়?
সুশীল থেকে অসুশীলরা বাংলা ভাষা সব জায়গায় প্রয়োজন বোধ করেন কি না, তা নিয়েও যথেষ্ট সন্দেহ । তরুণ প্রজন্ম একটি ভাষার প্রচলন করেছে, যার নাম ‘বাংলিশ’। কারণ হিসেবে উল্লেখ করলে কতগুলো বিষয় সামনে চলে আসবে। আর টেলিভিশনে আজকাল যেসব নাটক নির্মাণ করা হয়; সেগুলোর বেশির ভাগেই বাংলা-ইংরেজি মিশ্রণের এক সমাহার দেখা যায়। এর প্রভাব যে তরুণ প্রজন্মের ওপর পড়ছে। এ ছাড়াও শিক্ষিত সমাজের বেশির ভাগ অভিভাবক তাদের সন্তানদের স্মার্ট হিসেবে তৈরি করতে বড্ড আগ্রহী। ফলে তারা নিজেদের সন্তানদের শিক্ষাজীবনের শুরু থেকে ইংরেজির প্রতি প্রাধান্য দেন এবং এ ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করান।
ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করা দোষের কিছু নয়। তবে সন্তানদের মধ্যে বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা কিংবা শ্রদ্ধা অগ্রগণ্য হওয়া উচিত নয় কি? এ অবস্থায় খুব সহজে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি দেশের তরুণসমাজে আধিপত্য বিস্তার করেছে। সে ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন পাশ্চাত্য দিবস পালন করলেও নিজস্ব জাতীয় দিবসগুলো কিংবা একুশে ফেব্রুয়ারির মতো আমাদের জাতীয় জীবনের বাঁকবদলের দিবস তাদের কাছে থাকে কুয়াশায় ঢাকা। দেশের স্বার্থে; ভাষার স্বার্থে এমনকি আমাদের জাতির অস্তিত্বের স্বার্থে তরুণ প্রজন্মকে ভাষার মর্যাদা কিংবা মহত্ত্ব সম্পর্কে জাগিয়ে তোলা জরুরি তা করতে হবে তাদের এ দিবসপ্রেম মনোভাবের মধ্য থেকে। তবে তা হবে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির আগ্রাসনের বিপরীত উপায়ে এবং তাতে করে এই তরুণ প্রজন্ম ভবিষ্যতে হয়ে উঠবে ভাষাপ্রেমিক ও সুস্থ দিবস চর্চাকারী রূপে। তবে এ নিয়ে আমাদের বুদ্ধিজীবীদের কোনো বুদ্ধির প্রতিফলন এখনো তীব্র নয়। আমাদের ভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে সর্বপ্রথম তরুণ প্রজন্মের দৃষ্টি আকর্ষণ করার কার্যকর উদ্যোগ নেয়া দরকার।হ
লেখক : শিক্ষার্থী, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২ দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেল ২৫০০ তরমুজ ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী

সকল