২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ

-

এইচএসসি পরীক্ষায় সফলতার সাথে উত্তীর্ণ হওয়ার পর হাজারো শিক্ষার্থী উচ্চশিক্ষা গ্রহণ এবং অনেক আকাক্সার প্রতিফলন ঘটাতে অংশ নেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তিযুদ্ধে। তীব্র প্রতিযোগিতায় সীমিত সংখ্যক শিক্ষার্থীর ভাগ্যে জোটে ‘সোনার হরিণ’ নামের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সনদ। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় একজন শিক্ষার্থীর কাছে সোনার হরিণ এ জন্য যে, বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে এমন একটি জায়গা; যেখানে রয়েছে জ্ঞানচর্চার অবাধ সুযোগ ও মুক্তচিন্তার অবারিত দ্বার। রয়েছে একদল অভিজ্ঞ শিক, যাদের পাঠদান ও আন্তরিকতায় সমৃদ্ধ হয়ে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি মন ও মননশীলতা তৈরি করতে পারবে শিক্ষার্থীরা। আসলে কি তাই হচ্ছে?
যুক্তিবাদী মানুষ তৈরি ও গবেষণাকেন্দ্রিক শিক্ষায় শিতি করার পরিবর্তে অসঙ্গতি, অসততা, আধিপাত্য বিস্তার ও কাসরুম সঙ্কুচিত করার মাধ্যমে ক্রমেই শিক্ষার পরিবেশ ও সুযোগ সঙ্কুচিত হচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে। ফলে কাসের প্রতি অনীহা বাড়ছে শিক্ষার্থীদের। দেশের একটি পত্রিকায় প্রকাশিত, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ইতিহাস ও প্রাণরসায়ন বিভাগের কয়েকজন শিক এবং শ’খানেক শিক্ষার্থীর ওপর জরিপের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক শিক্ষার্থী কাস করা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন। এর নেপথ্যে থাকা প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ শিকদের কাসের প্রতি অনীহা, কাস নিলেও অনেকটা দায় সারার মতো মানসিকতা উচ্চশিক্ষার অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধক। আবার নির্দিষ্ট কোর্সের জন্য নির্ধারিত বই ফলো না করে ইন্টারনেটে কয়েক পৃষ্ঠার শিটের গৎবাঁধা মুখস্থ লেখাগুলো ঝড়ের বেগে আট থেকে ১০ লেকচারে শেষ হয়ে যাচ্ছে এক-দুই ঘণ্টার কাসে, যা কিনা উচ্চশিক্ষার প্রকৃত অর্থের সাথে সাংঘর্ষিক। শিক্ষার্থীবান্ধব আচরণের পরিবর্তে রক্তচক্ষু প্রদর্শন ক্রমেই দূরত্ব তৈরি করছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে, যা শিক্ষার জন্য অশনিসঙ্কেত।
এ ছাড়াও মতাসীন ছাত্রসংগঠনের ক্যাম্পাসে একক আধিপত্য ও ভিন্নমতের শিক্ষার্থীদের প্রতি অমানবিক আচরণ ক্রমেই নষ্ট করছে জ্ঞানচর্চার তীর্থস্থানগুলোর পরিবেশ। শিক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখেও ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষাকার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের স্বপ্নগুলো বইয়ের প্রতিটি পাতায়, প্রতিটি অরে চাপা পড়ে থাকে মাসের পর মাস। ছয় মাসের সেমিস্টার শেষ হতে লেগে যায় ৯ কিংবা ১০ মাস। ফলে সেশনজটের মতো বিষফোঁড়া নীরবে সহ্য করতে হচ্ছে হাজারো শিক্ষার্থীকে। ফলে চার বছরের অনার্স শেষ হতে লেগে যাচ্ছে ছয় বছর কিংবা তারও বেশি। সেই সাথে আমাদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের ওপর ভর করা মা-বাবা, ভাই-বোন কিংবা প্রিয়জনের অপো ও অবহেলার মাত্রাও বাড়তে থাকে।
সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২তম সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সমাবর্তন বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘অনেক ভিসি ও শিক বিভিন্ন প্রশাসনিক পদ-পদবি পেয়ে নিজেদের মৌলিক পরিচয়ই ভুলে গেছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখন ডিপার্টমেন্ট, ইভিনিং কোর্স, ডিপ্লোমা কোর্স ও ইনস্টিটিউটের ছড়াছড়ি। নিয়মিত কোর্সে অনেক শিকের খামখেয়ালি মনোভাব থাকলেও এসব বাণিজ্যিক কোর্সে খুব সিরিয়াস কর্মতৎপরতা দেখা যায়, যা কিনা সৃষ্টিশীল মানুষ তৈরির অন্যতম প্রধান প্রতিবন্ধক।’ তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন শিক্ষাঙ্গনে অস্থির পরিবেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা নিয়েও।
বিশ্ববিদ্যালয় হলো জ্ঞানচর্চার প্রাণকেন্দ্র। জ্ঞান বিতরণ ও জ্ঞান তৈরির কারখানা। বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন সংজ্ঞার যথার্থ ও বাস্তবধর্মী রূপ দিতে সব ধরনের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ নিয়োগপ্রক্রিয়া, শিকদের ইতিবাচক ও ছাত্রবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা একান্ত জরুরি। তবেই পূর্ণতা পাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৃত সত্তা। তৈরি হবে আলোকিত মানুষ। তাদের আলোয় আলোকিত প্রিয় স্বদেশ।
লেখক : শিক্ষার্থী, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
tanvirahmedcou555@gmail.com


আরো সংবাদ



premium cement
কৃষক যাতে ন্যায্যমূল্য পান, সেভাবেই ধানের দাম নির্ধারণ করা হবে : কৃষিমন্ত্রী চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে সিএনজি ও বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২, আহত ৪ ভান্ডারিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে দর্শনার্থীদের ঢল তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি চাটমোহরে ঐতিহ্যবাহী ঘোড়া দৌড় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত বিএনপি সাম্প্রদায়িক শক্তি, এদের রুখতে হবে : ওবায়দুল কাদের সাদিক এগ্রোর ব্রাহামা জাতের গরু দেখলেন প্রধানমন্ত্রী ভারতে লোকসভা নির্বাচনে প্রথম ধাপে ভোট পড়েছে ৬০ শতাংশ সারা বিশ্ব আজ জুলুমবাজদের নির্যাতনের শিকার : ডা. শফিকুর রহমান মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশী : পররাষ্ট্রমন্ত্রী চন্দনাইশ, বাঁশখালী ও বোয়ালখালীতে ৩ জনের মৃত্যু

সকল