১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উচ্চ আওয়াজ কষ্টকর

-

আমি একজন মুসলমান। বিধিবদ্ধ ধর্মীয় আচরণ পালনের চেষ্টা করি। নব্বই-ঊর্ধ্ব বয়সের লোক বিধায় আজকাল নামাজ পড়তে মসজিদে যেতে পারি না, ঘরেই পড়ি। আগে শুক্রবারের জুমার নামাজে যাওয়ার চেষ্টা করতাম, আজকাল তাও করি না।
আমি ঢাকা শহরের একটা আধুনিক উপশহরে বাস করি। কিছু দিন আগে পাড়ার একটা মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলাম, কাঁচাঘর পাকা দালান হয়ে গেছে এই আগ্রহে। কিন্তু আর যাবো না পণ করেছি। কারণ মসজিদ শুধু পাকা হয়নি, এয়ারকন্ডিশন্ডও হয়ে গেছে; আর হুজুরের মাইক নিঃসৃত বয়ান ও তিলাওয়াত ছিল এত কান ফাটানো যে, তা সুমধুর না হয়ে অত্যাচাররূপে কান ঝালাপালা করছিল। খোলা ময়দানে মাইকের আওয়াজ বাতাসের সাথে মিশে তীব্রতা হারায় বলে শুনতে কষ্ট হয় না। কিন্তু দরজা-জানালা বন্ধ ঘরে মাইকের শব্দ নিয়ন্ত্রণ না করলে তা কান ফাটানো হয়ে যায়। আমাদের আলেমদের এসব ব্যাপারে অবহিত না করে মুখের সামনে মাইক ধরিয়ে দেয়া হয়েছে! আমার কাছে এমন কোনো যন্ত্র নেই যে, আমার পরামর্শ দেশের সব মসজিদের ইমাম, খতিব, মুয়াজ্জিনদের কাছে পৌঁছে দেবো।
মুয়াজ্জিনদের উল্লেখ করলাম এ জন্য যে, আজানের ‘বন্যা’য়ও ইদানীং অত্যাচারিত হচ্ছি। বন্যা শব্দটা ব্যবহার করে আল্লাহ তায়ালার অসন্তুষ্টি অর্জন করছি কি না তা বুঝতে পারছি না। কিন্তু এমন একটা আক্রমণাত্মক অভিব্যক্তির কারণ হলোÑ আমার পাড়ায় যেসব প্রতিষ্ঠিত মসজিদ রয়েছে, সবগুলো থেকে প্রায় একই সময়ে আজানের শব্দ মাইকের মাধ্যমে উচ্চ ভলিউমে আসে আর আল্লাহর গুণগান শুনে খুশি হওয়ার বদলে বিরক্ত হয়ে মহামহিম আল্লাহ তায়ালার কাছে অপরাধী হচ্ছি। আল্লাহ দয়াময় অবশ্য এখনো কোনো শাস্তি দেননি। কিন্তু দোষটা কার? এসব ব্যাপারে অভিযোগ শুনে প্রতিকার করার কোনো কর্তৃত্ব যে কারো নেই। এমন কোনো একতাবদ্ধ সংগঠন আছে কি, যাদের কাছে আমার অভিযোগ পেশ করব।
আল্লাহর ইবাদতে অসদাচরণসংক্রান্ত এসব অভিযোগ পত্রিকার পাতায় দেয়ার চেষ্টা করছি, দেখি কেউ কিছু করে কি না।
কিন্তু পত্রিকার পাতায় অভিযোগ পাঠানোর আগেই ঢাকা থেকে প্রকাশিত একটি পত্রিকার পাতায় একটা সহায়ক খবর পাওয়া গেল। গত ২২ জানুয়ারি সেই পত্রিকার প্রথম পৃষ্ঠার খবর ‘উত্তরপ্রদেশে মাইকে আজান নিষিদ্ধ’। হিন্দুত্ববাদী বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নিষেধাজ্ঞা নয়, নিষেধাজ্ঞা ভারতের এলাহাবাদ হাইকোর্টের। দু’জন বিচারপতির বেঞ্চ বলেছেনÑ ‘কোনো ধর্মই এটা শেখায়নি যে, প্রার্থনা করার সময় মাইক ব্যবহার করতে হবে বা বাজনা বাজাতে হবে। আর যদি সে রকম কোনো ধর্মীয় আচার থেকে থাকে, তাহলে নিশ্চিত করতে হবে যাতে অন্যদের তাতে বিরক্তির উদ্রেক না হয়।’ আদালত আরও বলেছেনÑ ‘ভারতের সংবিধানের ২৫ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, প্রত্যেক ব্যক্তির নিজ ধর্ম পালন করার অধিকার আছে ঠিকই, কিন্তু সেই ধর্মাচরণের ফলে অন্য কারো অসুবিধা করার অধিকার কারো নেই।
‘জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ’ নামে একটি সংগঠন আছে। সেই সংগঠনের মহাসচিবের নামে তাদের পুরানা পল্টনের ঠিকানায় রেজিস্ট্রি ডাকে একটি চিঠি পাঠিয়েছিলাম গত নভেম্বরে। সেই চিঠিতে আমি অন্যান্য বিষয়ের সাথে আমার পাড়ায় মসজিদের উচ্চ আওয়াজের উল্লেখ করে এক স্থানে লিখেছিলামÑ ‘আমি যে বাড়িতে থাকি, সেই একই বাড়িতে অন্যান্য ফ্যাটে বাস করে অন্য দেশের ভিন্নধর্মী লোক। একেক সময় মনে হয়, ওরা হয়তো আমাদের ব্যাপারে ভুল ভাবতেও পারে, এতসব উচ্চ আওয়াজের কারণে।’ এ ব্যাপারে আমাদের একটা সুনির্দিষ্ট চিন্তাভাবনা থাকা উচিত। হ

 


আরো সংবাদ



premium cement
শিবপুরে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় পথচারীর নিহত চকরিয়ায় ত্রিমুখী সংঘর্ষে নিহত ১, আহত ৩ গাজা মানবিক নরকে পরিণত হয়েছে : জাতিসঙ্ঘ প্রধান রাফা হামলার পরিকল্পনা ইসরাইলের ত্যাগ করা উচিত : চীন গাজা যুদ্ধে নতুন যে কৌশল অবলম্বন করল ইসরাইল হাসপাতালের শৌচাগারে মিলল নবজাতক শিশু ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার ঢাকা সফর স্থগিত জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বিসিডিপি গঠন করা হবে : পরিবেশমন্ত্রী অননুমোদিত জমি ভরাট কার্যক্রমের সন্ধান পেলে দ্রুত ব্যবস্থার নির্দেশ ভূমিমন্ত্রীর ভাসানচর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এক ব্যক্তিকে গলা কেটে হত্যা ইসরাইলকে পারমাণবিক স্থাপনায় আঘাতের ব্যাপারে সতর্ক করলো আইআরজিসি

সকল