২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরের প্রদর্শনী শুরু

শোকের মাস : গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু ভ্রাম্যমাণ রেল জাদুঘরের প্রদর্শনী শুরু - ছবি : নয়া দিগন্ত

আগস্ট শোকের মাস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নতুন প্রজন্মের সামনে তার জীবন সংগ্রাম, স্বাধীনতাযুদ্ধ আর ইতিহাস তুলে ধরার জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ভ্রাম্যমাণ একটি রেল জাদুঘর দেশব্যাপী প্রদর্শনের জন্য যাত্রা শুভ সূচনা করলো। একটি ব্রডগেজ এবং একটি মিটারগেজ কোচ নিয়ে তৈরি এই ভ্রাম্যমাণ জাদুঘর।

ভ্রাম্যমাণ এ রেল জাদুঘর দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা স্টেশনগুলোতে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত থাকবে এবং ওই অঞ্চলের মানুষের কাছে প্রদর্শন করা হবে বলে রেল কর্তৃপক্ষ জানান। গত ২৭ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটির উদ্বোধন করেন।

সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এরই মধ্যে ঢাকা থেকে জয়দেবপুর পর্যন্ত রেল জাদুঘরটি ট্রায়াল সম্পন্ন করা হয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, গতকাল থেকে মিটার গেজ শুরু হয় চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে আর ব্রডগেজ শুরু হয় গোপালগঞ্জ স্টেশন থেকে। জাদুঘর দুটিতে বঙ্গবন্ধুর জীবনের ওপর নির্মিত তথ্যবহুল ও মনোমুগ্ধকর বারোটি পৃথক চিত্র ও দুর্লভ আলোকচিত্রের সমন্বয়ে সাজানো হয়েছে।

জানা গেছে, দুটি কোচের একটি থাকবে দেশের পূর্বাঞ্চলে অন্যটি থাকবে পশ্চিমাঞ্চলের রেলস্টেশনে। জাদুঘরটি কোন রেলস্টেশনে কত দিন থাকবে তার একটি শিডিউল জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (রোলিং স্টক) মো: মঞ্জুর উল আলম চৌধুরী জানান, কোচকে সর্বোচ্চ প্রযুক্তিতে সাজানো হয়েছে। জাদুঘরটিতে ১৯২০ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধ, সংগ্রামী ঘটনা প্রবাহ তুলে ধরা হয়েছে। সাধারণ দর্শনার্থীরা টাচ স্ক্রিনে আঙুল স্পর্শ করতেই ভেসে আসবে বঙ্গবন্ধু ছবি, ভাষণ, তার জীবনের নানা দিক-নির্দেশনা। প্রায় দেড় বছর সময় ধরে এটি তৈরি করা হয়েছে। দেশের ৮০ শতাংশ রেলস্টেশন গ্রাম-বাংলায় ছড়িয়ে রয়েছে। প্রান্তিক মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক জীবন, মুক্তিযুদ্ধ, শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের মানুষের জন্য এটি উন্মুক্ত থাকবে এ জাদুঘরটি।

শিডিউল অনুযায়ী, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে একটি জাদুঘর থাকবে ১ থেকে ৫ আগস্ট, ভাটিয়ারী স্টেশনে থাকবে ৫ থেকে ৭ আগস্ট, সীতাকুণ্ড স্টেশনে থাকবে ৭ থেকে ৯ আগস্ট, চিনকিআস্তানা স্টেশনে থাকবে ৯ থেকে ১১ আগস্ট, ফেনী জংশনে থাকবে ১১ থেকে ১৫ আগস্ট, গুনবতী স্টেশনে থাকবে ১৪ থেকে ১৭ আগস্ট, নাঙ্গলকোর্ট স্টেশনে থাকবে ১৬ থেকে ১৯ আগস্ট, লাকসাম জংশনে থাকবে ১৮ থেকে ২৩ আগস্ট, চৌমুহনী স্টেশনে থাকবে ২৪ থেকে ২৫ আগস্ট, মাইজদীকোর্ট স্টেশনে থাকবে ২৬ থেকে ২৭ আগস্ট, নোয়াখালী স্টেশনে থাকবে ২৮ থেকে ২৯ আগস্ট, চাঁদপুর স্টেশনে থাকবে ৩০ আগস্ট থেকে ১ সেপ্টেম্বর, কুমিল্লা স্টেশনে থাকবে ২ থেকে ৪ নভেম্বর, আখাউড়া স্টেশনে থাকবে ৫ থেকে ৮ নভেম্বর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে থাকবে ৯ থেকে ১০ নভেম্বর, ভৈরব স্টেশনে থাকবে ১১ থেকে ১২ নভেম্বর, নরসিংদী স্টেশনে থাকবে ১৩ থেকে ১৪ নভেম্বর, টঙ্গী জংশনে থাকবে ১৫ থেকে ১৬ নভেম্বর এবং ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে থাকবে ১৭ থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।

অন্যদিকে আরেকটি কোচ পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ের গোপালগঞ্জ স্টেশনে থাকবে ১ থেকে ৫ আগস্ট, কাশিয়ানী স্টেশনে থাকবে ৬ থেকে ৭ আগস্ট, ভাটিয়াপাড়া ঘাট স্টেশনে থাকবে ৯ থেকে ১০ আগস্ট, মধুখালী জংশনে থাকবে ১২ থেকে ১৩ আগস্ট, রাজবাড়ী স্টেশনে থাকবে ১৫ থেকে ১৭ আগস্ট, ফরিদপুর স্টেশনে থাকবে ১৯ থেকে ২০ আগস্ট, পাংশা স্টেশনে থাকবে ২২ থেকে ২৩ আগস্ট, কুমারখালী স্টেশনে থাকবে ২৫ থেকে ২৬ আগস্ট, কালুখালী জংশনে থাকবে ২৮ থেকে ২৯ আগস্ট, কুষ্টিয়া স্টেশনে থাকবে ৩০ থেকে ৩১ আগস্ট, খুলনা স্টেশনে থাকবে ২ থেকে ৭ নভেম্বর, দৌলতপুর স্টেশনে থাকবে ৯ থেকে ১০ নভেম্বর, নোয়াপাড়া স্টেশনে থাকবে ১২ থেকে ১৩ নভেম্বর, যশোর স্টেশনে থাকবে ১৫ থেকে ১৮ নভেম্বর, বেনাপোল স্টেশনে থাকবে ২০ থেকে ২১ নভেম্বর, নাভারণ স্টেশনে থাকবে ২২ থেকে ২৩ নভেম্বর, মোবারকগঞ্জ স্টেশনে থাকবে ২৫ থেকে ২৬ নভেম্বর, দর্শনা স্টেশনে থাকবে ২৮ থেকে ২৯ নভেম্বর এবং চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে থাকবে ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত।

প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের কাছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ, অধিকার আদায়ে আন্দোলন, সংগ্রাম এবং তার কর্মজীবন পৌঁছে দিতে দেশে প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠা হলো ‘বঙ্গবন্ধু রেল জাদুঘর’।

কোচ দুটি উদ্বোধন করেন রেলপথমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন। প্রধান অতিথি হিসেবে গোপালগঞ্জে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদর্শনীর শুভউদ্বোধন করেন তিনি।

তিনি বলেন, কেউ যদি রেলের সাথে ধাক্কা খেয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়, এটার দায় রেলের উপর দেয়া ঠিক না। আমি তো ধাক্কা দেই না। রেল তার নিজস্ব লাইনে চলে। অন্যের দায়ের দায় কেন রেল নেবে। তিনি বলেন, কোনো দুর্ঘটনা বা মৃত্যুর কাম্য না। কিন্তু এসব ঘটনা রেলের না।

তিনি বলেন, আপনি সড়ক করেছেন, আমাকে অনিরাপদ করেছেন। আমরা যদি যৌথভাবে সড়কের যেসব রাস্তা রেল লাইনের উপর দিয়ে দেয়া হয়েছে তার জন্য বসে পথ বের করতে হবে। কিভাবে জনগণকে পথচারিকে নিরাপদ করা যায়।

বক্তব্য রাখেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলী খান, রেলওয়ের মহাপরিচালক ডি এন মজুমদার, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা, জেলা প্রশাসক।


আরো সংবাদ



premium cement