২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

লকডাউনের মধ্যে চলবে বইমেলা

লকডাউনের মধ্যে চলবে বইমেলা -

সোমবার থেকে এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘোষণা করা হলেও চালু থাকছে বাংলা একাডেমি আয়োজিত অমর একুশে গ্রন্থমেলা। বেলা ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে বলে জানিয়েছে বাংলা একাডেমি।

বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ এই মেলাকে শিল্প-কারখানা খোলা রাখার সাথে তুলনা করছে।

সোমবার সকাল ৬টা থেকে ১১ এপ্রিল রাত ১২টা পর্যন্ত এই লকডাউন ঘোষণা করেছে বাংলাদেশের সরকার। এই সময় সকল প্রকার পরিবহন, জরুরি সেবা ছাড়া অফিস, শপিংমল ইত্যাদি বন্ধ থাকবে।

রোববার দুপুরে সংসদ অধিবেশনে দেয়া ভাষণে শেখ হাসিনা বলেন, ‘করোনার দ্বিতীয় ঢেউ চলছে। এটি সামলাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

আগে বয়স্করা সংক্রমিত হতো কিন্তু এখন তরুণ ও শিশুরা সবাই আক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘দ্বিতীয় ঢেউ সামলাতে মানুষের কিছুটা সমস্যা হবে। কিন্তু তারপরও জীবনটা অনেক বড়। জীবনটা আগে। মানুষের জীবন বাঁচাতে হবে’।

তিনি বক্তব্যে বিয়ে-শাদি, অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ বন্ধ, ভিড়ের জায়গা এড়িয়ে চলা, পর্যটন ও অবাধে চলাফেরা বন্ধ করার নির্দেশনাও দিয়েছেন।

তার মধ্যেই বইমেলার মতো একটি বড় আয়োজন খোলা থাকার সিদ্ধান্ত এলো।

বইমেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবিবুল্লাহ সিরাজী বলেছেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, লকডাউনের মধ্যেও দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত বইমেলা চলবে। সরকারের সিদ্ধান্ত, মন্ত্রণালয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, আমরা সেটা কার্যকর করছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ীই বইমেলা খোলা রাখার চেষ্টা করছি। যেভাবে সরকার গার্মেন্ট ইন্ডাস্ট্রি ও অন্য শিল্প-কারখানা খোলা রাখছেন, সেইভাবে বইমেলা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত সরকারই নিয়েছে। আমরা শুধু সেটা এক্সিকিউট করছি।’

কিন্তু যেখানে লকডাউন চলার সময় ভোর ৬টা থেকে বিকেল ৬টা পর্যন্ত সবাইকে ঘরের ভেতর থাকার জন্য বলা হয়েছে, সেখানে বইমেলা খোলা থাকলেও বইমেলায় মানুষ কীভাবে আসবে জানতে চাইলে, বাংলা একাডেমি মহাপরিচালক বলছেন, ‘সেটা তো আমার পক্ষে বলা মুশকিল। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবং মন্ত্রণালয় ও সরকারের সিদ্ধান্ত, ১২টা থেকে ৫টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকবে।’

প্রকাশনা জগতের বিক্রি-বেচার সবচেয়ে বড় অংশটি এই বইমেলাকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বইমেলা খোলা রাখার বিষয়ে প্রকাশকদের তরফ থেকে চাপ রয়েছে। এই কারণে লকডাউন থাকলেও বইমেলা চালু রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে এই বছর বইমেলা ভার্চুয়াল বা অনলাইনে করার প্রস্তাব উঠেছিল। তবে প্রকাশকদের দাবির মুখে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি চত্বরে গত ১৮ মার্চ ৩৭তম অমর একুশে বইমেলা শুরু হয়।

ওই সময় সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার বইমেলার উদ্বোধন করবেন তবে করোনা সংক্রমণ বাড়লে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে এবং মেলা স্থগিত হতে পারে।

আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত মেলা চলবে। এবারের মেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে মোট ৫৪০টি প্রতিষ্ঠানকে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একাডেমি প্রাঙ্গণে ১০৭টি প্রতিষ্ঠানকে ১৫৪টি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৩৩টি প্রতিষ্ঠানকে ৬৮০টি ইউনিট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement