১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দেশব্যাপী করোনার টিকাদান শুরু আজ

দেশব্যাপী করোনার টিকাদান শুরু আজ -

রাজধানীসহ সারাদেশে আজ থেকে একযোগে করোনা টিকাদান কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। গতকাল শনিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত সারাদেশে মোট তিন লাখ ২৮ হাজার ১৩ জন টিকা নেয়ার জন্য সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করেছেন। এ কর্মসূচি সফল করতে ইতোমধ্যেই সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

সারা দেশের সরকারি-বেসরকারি ১ হাজার ৫টি হাসপাতালে দেয়া হবে করোনার টিকা। শুরুর দিন ৩ লাখ ৬০ হাজার মানুষকে টিকা দেয়ার প্রস্তুতি আছে স্বাস্থ্য অধিদফতরের। তবে নিবন্ধন হয়েছে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম।

দেশব্যাপী দুই হাজার ৪০০ টিম দেশব্যাপী করোনার টিকা দিতে শুরু করবে। সুরক্ষা নামক সরকারি ওয়েবসাইটে যারা জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করে নাম নিবন্ধন করেছেন তারাই টিকা পাবেন। সকাল ৮টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত টিকা দেয়া হবে। তবে আনুষ্ঠানিকতা শেষ করার জন্য বিভিন্ন স্থানে নিজেরাই সময় ঠিক করে নিতে পারবেন।

রোববার রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন স্বস্ত্রীক টিকা নেবেন। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও টিকা নেবেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক টিকা নেবেন মহাখালী শেখ রাসের গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে।

শেখ রাসের গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে আরো কয়েকজন ভিআইপি করোনা টিকা নেবেন বলে শনিবার স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক এ বি এম খুরশীদ আলম মহখালীস্থ অধিদফতরের নতুন অফিসে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মহাপরিচালক জানান, রাজধানী ঢাকা ৫০টি হাসপাতালে ২০৪টি টিম এবং দেশের অন্যান্য স্থানের ৯৫৫টি হাসপাতালে দুই হাজার ৯৬টি অর্থাৎ দেশব্যাপী এক হাজার পাঁচটি হাসপাতালে দুই হাজার ৪০০ টিম রোববার থেকে ব্যাপকভাবে টিকা দিতে শুরু করবেন। এ ছাড়াও ভ্যাকসিন বিষয়ক কার্যক্রমের জন্য টিম প্রস্তুত রয়েছে সাত হাজার ৩৪৪টি। আপাতত দুই হাজার ৪০০ জনকে দিয়ে কালকের কর্মসূচি শুরু হচ্ছে।

মহাপরিচালক বলেন, ‘ঢাকার কিছু কেন্দ্র আমরা ঘুরে ঘুরে দেখেছি। সবগুলোর প্রস্তুতি ভালো। আশা করছি, কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই আমরা টিকার কাজ শুরু করতে পারবো। তবে কিছু কিছু ছোট কেন্দ্রে বিশেষত মাতৃসদনের মতো কেন্দ্রগুলোতে খানিকটা প্রস্তুতির ঘাটতি রয়েছে। আশা করছি সন্ধ্যার মধ্যে সেসব কেন্দ্রেও প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারবো। রাতে আবার সব কেন্দ্রের সাথে কথা বলবো আবার। তখন যেখানে যা অভাব রয়েছে বা যে সমস্যা রয়েছে সেগুলো সমাধানের চেষ্টা করবো।’

তিনি জানান, ‘প্রথম ডোজ দেয়ার পর চার থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে করোনা টিকার দ্বিতীয় ডোজ দিয়ে দেয়া যায়। তবে আমাদের দেশে চার সপ্তাহ বা ২৮ দিন পর দ্বিতীয় দিয়ে দেয়া হবে। একই সাথে প্রথম ডোজও দেয়া হবে নতুনদের। টিকা সংরক্ষণে কোল্ড চেইন মেইনটেইন করা হচ্ছে না কি না জানতে চাইলে জানানো হয় যে সঠিকভাবে কোল্ডচেইন বজায় রেখে ঢাকা থেকে জেলা সদরে টিকাগুলো নেয়া হচ্ছে। আবার জেলা সদর থেকে কোল্ড বক্সে করে টিকাগুলো উপজেলা সদরে পাঠানো হচ্ছে।’

১৮ বছরের নিচের বয়সী, গর্ভবতি, দুগ্ধদানকারী মায়েদের টিকা দেয়া যাবে না বলে জানান মহাপচিালক। এর বাইরে যাদের অনেক জ্বর থাকবে তাদের টিকা দেয়া যাবে না। আবার মাঝারী থেকে তীব্র মাত্রার করোনা আক্রান্তকেও টিকা দেয়া যাবে না বলে জানান সংবাদ সম্মেলনে। করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন, কিন্তু চার সপ্তাহ অতিক্রম করেনি এমন করোনা আক্রান্তকেও টিকা দেয়া যাবে না। ওষুধ নিলে যাদের মধ্যে অ্যালার্জি হয়ে থাকে তাদেরও টিকা দেয়া যাবে না।

২৭ জানুয়ারি টিকা নিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহপরিচালক অধ্যাপক নাসিমা সুলতানা। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, যারা টিকা নিয়েছেন তাদের মধ্যে জটিল কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। টিকা দেয়ার স্থানটি লাল হয়ে গেছে, কিছুটা জ্বর হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন অপর অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এবং অন্যান্য পরিচালকরা।


আরো সংবাদ



premium cement