২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পদ্মা পাড়ি দিতে চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা

পদ্মা পাড়ি দিতে চরম ভোগান্তিতে যাত্রীরা - ছবি : সংগৃহীত

পদ্মা নদীর বিরূপ আচরণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন দক্ষিণবঙ্গের যাত্রীরা। এই নদীর শিমুলিয়া ও কাঁঠালবাড়ি রুটে আগে থেকেই বন্ধ ছিল সব ধরনের ফেরি চলাচল। তার পরও যানবাহন পারাপার না করা গেলেও লঞ্চে যাত্রী পারাপার হয়েছিল। কিন্তুসম্প্রতি নাব্যতার অভাবে লঞ্চও চলাচল করতে পারছে না। যার কারণে ট্রলার ও স্পিডবোটে করে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছিল। গত দু’দিনের বৈরী আবহাওয়ার কারণে ট্রলার ও স্পিডবোট বন্ধ রয়েছে। এতে এই রুটের সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকায় কার্যত ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। একমাত্র দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ফেরি চলাচল করায় যানবাহন এই রুটে ভিড় করছে। ফলে দৌলতদিয়া ও পাটুরিয়া দুই প্রান্তেই তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। এতে করে দুর্ভোগে পড়ছেন যাত্রীরা। বিশেষ করে দুর্গাপূজা উপলক্ষে গ্রামের বাড়ি যাওয়া যাত্রীদের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।

সরেজমিন শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গতকাল সকাল থেকে আবহাওয়ার কিছুটা উন্নতি হওয়ায় স্পিডবোট ও ট্রলার চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়েছিল। এ খবরে দুই প্রান্ত দিয়েই যাত্রীরা ঘাটে ভিড় জমাতে থাকেন। কিন্তু বিকেলের পর থেকে আবার তা বন্ধ করে দেয়া হয়। এর আগের দিন শুক্রবারও একইভাবে খুলনা, যশোর, মংলা, পিরোজপুর, বাগেরহাট, গোপালগঞ্জসহ দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ঢাকাগামী যাত্রীরা কাঁঠালবাড়ি ঘাটে পৌঁছান। কিন্তু বিকেল পর্যন্ত বসে থেকেও তারা পদ্মা নদী পার হতে পারেননি। এ দিকে ঘাটে আশ্রয় নেয়ার ভালো কোনো ব্যবস্থা না থাকায় মুষলধারে হওয়া বৃষ্টিতে ভিজতে হয়েছে তাদের। গতকালও একই দুর্ভোগে পড়তে হয় যাত্রীদের।

শুক্রবার পিরোজপুর থেকে বাসে ঢাকায় ফেরার কথা ছিল আল মামুনের। প্রয়োজন থাকায় বৃষ্টি উপেক্ষা করে তিনি সকাল সাড়ে ৭টার বাসে করে ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন বলে জানান। কিন্তু কাঁঠালবাড়ি ঘাটে পৌঁছে বিকেল পর্যন্ত আর নদী পার হতে পারেননি। বিকল্প হিসেবে দৌলতদিয়া রুটে গিয়ে ফেরিঘাটে তীব্র যানজটে পড়তে হয় তাকে। অবশেষে গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় ঢাকায় পৌঁছেন তিনি।

যাত্রীরা জানান, ঢাকা থেকে দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় যাওয়ার জন্য ফেরি ও লঞ্চ পারাপারের দুই ধরনের গাড়ি রয়েছে। মূলত একই কোম্পানির দু’টি বাস নদীর দুই প্রান্তে থাকে। একটি বাসে করে শিমুলিয়া ঘাটে নেমে লঞ্চে করে নদী পর হন তারা। এরপর কাঁঠালবাড়ি থেকে অপর বাসে চড়েই গন্তব্যে যান। নদীতে নাব্যতার অভাবে এই রুটে অনেক আগেই ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হলেও সম্প্রতি তা-ও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। লঞ্চের স্টাফরা বলছেন, বৈরী আবহাওয়ার আগে থেকেই লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে। পদ্মা সেতুর কাছে থেকে থাকা চ্যানেলে পলি জমে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে যেকোনো লঞ্চই আর চলতে পারছে না।

জানতে চাইলে বিআইডাব্লিউটিএর এক কর্মকর্তা বলেন, পদ্মার পলি ও বালু এমন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে যে ড্রেজিং করেও তা দূর করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, নাব্যতার কারণে ফেরি ও লঞ্চ চলাচলের জন্য তারা সব সময় ড্রেজিং করে চ্যানেল তৈরি করে থাকেন। কিন্তু এ বছর চ্যানেল তৈরি করেও তা রাখা যাচ্ছে না। এমনকি যে ড্রেজিং মেশিন দিয়ে পলি কেটে সরানো হচ্ছে, কিছু সময়ের মধ্যে পলি ওই মেশিনকেই আটকে ধরছে। মাঝে মধ্যে ওই ড্রেজিং মেশিনকে উদ্ধারের জন্য অপর মেশিনের সহায়তার প্রয়োজন হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ে আলোচনা চলছে। শিগগিরই ভালো কোনো ফলাফল পাওয়া যাবে।


আরো সংবাদ



premium cement