২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শুধুই কান্নার শব্দ শেখ হাসিনা বার্ণ ইনস্টিটিউটে

স্বামীহারা সুরাইয়া বেগম - ছবি : নয়া দিগন্ত

নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণে স্বজনহারাদের আহাজারি আর আর্তনাদে বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে। চোখের পানিতে ভাসছে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট। শুধুই কান্নার শব্দ। দুঃখ আর আর্তনাদে মানুষ। কেউ লাশ নিয়ে গ্রামে ফিরছেন। কেউ বা আবার দগ্ধ স্বজনের খোঁজখবর নিতে বসে আছেন। কিন্তু বসার চোখেই পানি।

নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের কর্মচারী নুর উদ্দিন বলেন, বেঁচে থাইকা আর কী লাভ। কী নিয়ে বাঁচব। সব শেষ হয়ে গেলো। কখনো ভাবনি দুই সন্তান একসঙ্গে হারাবো। আল্লাহ আমাকেও দুনিয়া থেকে নিয়ে যান। ৮ হাজার টাকা বেতন পেয়েছি। তা দিয়ে ভালোই চলছিল সংসার। সব হারিয়ে আমার জীবনে আর কিছু রইল না। আমি আর কোনো দিন বাপ ডাক শুনবো না। আর্তনাদ করে কথাগুলো বলছিলেন সন্তানহারা বাবা নুর উদ্দিন। তিনি বলেন, আমি যুদ্ধ হেরে গেলাম। সন্তানরা আর লেখাপড়া করতে পারলো না।

শুধু নুর উদ্দিন নয়, একইভাবে কান্না করতে দেখা যায় আরেক বাবা ইব্রাহিম হোসেনকে। তাকে বলতে শোনা যায়, সারাদিন রিকশা চালিয়ে সন্তানকে লেখাপড়ার খরচ দিছি। আমার ছেলে একদিন অনেক বড় হবে। সেই আশা আর পূরণ হলো না। আল্লাহ আমাকে নিলেন না কেন। আমাকে নিয়ে যাও খোদা। বেঁচে থেকে লাভ কী।

সন্তান হারিয়ে আহাজারি করছেন মা আকলিমা বেগমও। তিনি বলেন, এ কেমন পরীক্ষা আল্লাহ, মানুষের বাসায় কাজ করে ছেলেকে খাইয়ে পড়িয়ে বড় করেছি। কোনো আবদার অপূর্ণ রাখিনি। এখন ভালো টাকা বেতনে চাকরি করে সংসার চালায়। আমার ছেলে আমাকে আর অন্যের বাসায় কাজ করতে দেয় না। ছেলে আয় সংসার খরচ চলে। আল্লাহ আমার কপাল থেকে সুখ নিয়ে গেলেন। এ কেমন বিচার?

স্বামীহারা শেফালী বেগম বলেন, কী কইয়া গেলা, কার কাছে রেখে গেলা, কী নিয়ে বাঁচব।

একইভাবে কান্না করছেন এই বৃদ্ধা। কোনো ছেলে সন্তান নেই। কে খাওয়াবে। আল্লাহ আমি কী করে বাঁচব। আমাকেও নিয়ে যান।

শুক্রবার রাতে এশার নামাজ চলাকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার পশ্চিমতল্লা এলাকার বাইতুস সালাত জামে মসজিদের এয়ার কন্ডিশনার (এসি) বিস্ফোরণের ঘটনায় ৩৮ জন দগ্ধ হন। হাসপাতালে ভর্তিদের বেশিভাগেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। মসজিদের এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় শনিবার রাত ১২ পর্যন্ত মসজিদ ইমামসহ মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ২১ জন।


আরো সংবাদ



premium cement