১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

রাজধানীতে যানবাহন ছিলো কম প্রবেশ দ্বারে তল্লাসীর অভিযোগ

ঘাটে ঘাটে বাঁধা, তাও থামানো যায়নি বিএনপির গণজোয়ার - নয়া দিগন্ত

বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত জনসভার দিন শনিবার রাজধানীর সড়ক গুলোতে গণপরিবহনের সংখ্যা ছিলো অনেক কম। অন্যদিনের তুলনায় এই দিন রাজধানীতে তেমন কোন গণপরিবহন দেখা যায়নি। বিএনপি’র নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করছেন, তাদের সমর্থকরা যাতে সমাবেশে পৌছাতে না পারে তার জন্য চাপ সৃষ্টি করে গণপরিবহন চলাচল কমে দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, ঢাকার প্রবেশ দ্বার গুলোতে পুলিশ সমাবেশের উদ্দেশ্যে আসা বিভিন্ন পরিবহন থামিয়ে তল্লাসীর নামে হয়রানী করেছে।

রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্ট ও জনসভাস্থল থেকে এমন সব অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে বাসের চালকরা বলছে, শনিবার সরকারী ছুটির দিন থাকায় যাত্রী কম হয়। এজন্য পরিবহন কোম্পানী গুলো তাদের সব বাস বের করেনি। আবার বিএনপির জনসভা উপলক্ষ্যে রাস্তায় যানজট থাকতে পারে এটা ভেবেও অনেকে যানবাহন তুলনামুলক কম বের করেছে।

শনিবার বিকেলে নয়া পল্টনে বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ছিলো বিএনপির সমাবেশ। বেলা ১১ টা থেকে সমাবেশে প্রবেশ করতে থাকে বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। রাজধানী ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকা গুলো থেকে দলে দলে মানুষ বাস, মিনিবাস, ট্রাক, পিকআপ ভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহনে সমাবেশস্থলে পৌছাতে থাকে। কিন্তু ঢাকার প্রবেশমুখে এসেই তাদের তল্লাসীর মুখে পড়ে হয়রানীর শিকার হতে হয় বলে অনেকেই অভিযোগ করেছেন।

বিশেষ করে মুন্সীগঞ্জ, কেরানীগঞ্জ থেকে আসা নেতাকর্মীদের বুড়িগঙ্গা ব্রীজের আশপাশের পুলিশের তল্লাসীর মুখে পড়তে হয়। অপর দিকে মানিকগঞ্জ, সাভার, আমিনবাজার থেকে আসা নেতা-কর্মীদের তল্লাসী করা হয় গাবতলী এলাকায়। নারায়নগঞ্জ থেকে আসা মানুষ তল্লাসীর মুখে পড়ের কাঁচপুরে। নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন, তাদের বহনকৃত পরিবহন গুলো ঢাকার প্রবেশ দ্বারগুলোতে পৌছালেই পুলিশ থামিয়ে দেয়। এরপর বাসের ভেতের প্রবেশ করে তল্লাসীর নামে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে রাখে। যার কারনে তারা সঠিক সময়ে জনসভাস্থলে পৌছাতে পারেনি।

এদিকে ঢাকার বেশির স্থান থেকে নেতা-কর্মীরা একত্রিত হয়ে মিছিল সহকারে সমাবেশ স্থালে গেলেও অনেকেই আলাদা ভাবে যাচ্ছিলেন। কিন্তু শনিবার রাজধানীতে সিটি সার্ভিসের বাসের সংখ্যা কম থাকায় ওই সব মানুষের নানা ধরনের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়েছে। তাদের সাথে সাধারন যাত্রীরাও ভোগান্তিতে পড়েন বলেও জানা গেছে।

আরো পড়ুন : তফসিল ঘোষণার আগে সরকারের পদত্যাগ চায় বিএনপি
নয়া দিগন্ত অনলাইন ০১ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ১৯:০৫

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সরকারের পদত্যাগ ও কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি জানিয়েছে দলটি।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে এ দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতে হবে, নিরপেক্ষ সরকার গঠন করতে হবে, সংসদ ভেঙে দিতে হবে, সেনা মোতায়েন করতে হবে। এ ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না, জনগণ হতে দেবে না।

শনিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকারের মধ্যে এখন বিএনপি ভীতি কাজ করছে। এ ভীতি থেকে রক্ষা পেতে আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে। তারা ভাবছে ইভিএম তাদের রক্ষা করবে, কিন্তু জনগণ তাদের রক্ষা করবে না।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজ আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, সব রাজনৈতিক দল, সংগঠনকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। জনগণের দাবি আদায় করতে হবে। অপশাসনকে পরাজিত করতে হবে। জাতিকে মুক্তি দিতে হবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা সবাইকে আহ্বান জানাব, গণতন্ত্রকামী সবাই নিজ অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধ হোন। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করুন। দেশকে স্বৈরাচারের হাত থেকে মুক্ত করুন। কারণ দেশনেত্রী কারাগারে যাওয়ার আগে বলে গেছেন এ সরকারের অপশাসনের বিরুদ্ধে একটি জাতীয় ঐক্য গঠনের জন্য। তাই আসুন সবাই ভেদাভেদ ভুলে একটি জাতীয় ঐক্য গঠন করে এ দানবকে পরাজিত করি।

মির্জা ফখরুল বলেন, দেশে একদলীয় বাকশাল থেকে গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে বিএনপি গঠন করেছেন জিয়াউর রহমান। যেভাবে ১৯৭১ সালে জাতির ক্রান্তিকালে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন, আজ আবার সেই গণতন্ত্র সংকটের মুখে আওয়ামী লীগের একদলীয় শাসনের কারণে।

দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে মহাসচিব বলেন, আমাদের আজ বুকে সাহস নিয়ে, বুকে বল নিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে। তাই আমাদের ঘুরে দাঁড়াতে হবে। আজকের জনসমুদ্র প্রমাণ করেছে আজ বাংলাদেশ আবার ঘুরে দাঁড়িয়েছে। বুকের রক্ত দিতে হবে, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, দেশকে মুক্ত করতে হবে। যারা দেশের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য জীবন দিয়েছে, তাদের রক্ত ছুয়ে শপথ নিতে হবে আমরা দেশের গণতন্ত্রকে মুক্ত করব, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব।

খালেদা জিয়াসহ কারাগারে থাকা বিএনপির নেতাকর্মীদের অবিলম্বে মুক্তির দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নেত্রীর বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মামলা বাতিল করতে হবে। তারেক রহমানের বিরুদ্ধে সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

ফখরুল বলেন, তারেক রহমানকে নিয়ে আবার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় তাঁকে সাজা দিতে চাইছে। রায়ের আগে আইনমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে দিচ্ছেন, এ মামলায় তারেক রহমানের সাজা হবে। তাহলে কি আপনারা আগেই গণভবনে রায় লিখে রেখেছেন। মনে রাখবেন, কোনো ষড়যন্ত্রের রায় দেশের জণগন মেনে নিবে না।

সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন, তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করুন। অন্যথায় কোনো পরিস্থিতি তৈরি হলে তার দায় আপনাদের নিতে হবে। দেশের জনগণ আপনাদের ক্ষমা করবে না। আমাদের কথা পরিষ্কার, খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিতেই হবে।

বিএনপির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে জনসভা শুরু হয়। সভা শুরুর আগেই সকাল থেকে দলের নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেয়। লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে পুরো এলাকা।

সভা শুরু পর থেকেই বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা। তারা তাদের বক্তব্যে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন। তারা বলেন, খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে দেশে কোনো নির্বাচন হবে না। মুক্ত খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচনে যাবে বিএনপি।

 


আরো সংবাদ



premium cement