১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

শোভাপুরের কাজী আবেদীন মসজিদ : আধুনিক নান্দনিকতার স্মারক

শোভাপুরের কাজী আবেদীন মসজিদ : আধুনিক নান্দনিকতার স্মারক। - ছবি : সংগৃহীত

বাংলাদেশে নান্দনিক কিংবা দৃষ্টিনন্দন যতো স্থাপত্য রয়েছে তার মধ্যে মসজিদের সংখ্যাই বেশি। দেশের বিভিন্ন স্থানে নান্দনিক বা দৃষ্টি কেড়ে নেয় এমন মসজিদের সংখ্যা অনেক। সাভারের শোভাপুরের কাজী আবেদীন জামে মসজিদও ঠিক সেরকম-ই।

মসজিদটি সাভার হাইওয়ে রোড সংলগ্ন শোভাপুরের কাজী এন্টারপ্রাইজের সামনে অবস্থিত। ২০১৯ সালের ৪ মে প্রায় ১৫-২০ শতাংশ জায়গার ওপর কিউএ গ্রুপের মালিক আলহাজ্ব মুহাম্মাদ কাজী আবেদীন এটি প্রতিষ্ঠা করেন।

মসজিদটির নয়নাভিরাম দৃশ্য যে কারো চোখকে আটকে দেবে, নিমিশেই মনকে করবে প্রশান্ত। চারভাগের তিনভাগ-ই স্বচ্ছ কাঁচ দিয়ে তৈরি এই মসজিদটি দূর থেকে দেখলে মনে হবে এটি কোনো কাঁচের ঘর কিংবা রাজকীয় প্রাসাদ। এর রয়েছে বিশালাকার একটি মিনার। মিনারের ঠিক মাথায় আজানের মাইক রয়েছে। যা দেখতে অনেকটা পাখির চোখের মতো দেখায়।

অপরূপ সৌন্দর্য ও চোখ ধাঁধানো ডিজাইনের মিশ্রণে এই মসজিদটি সবাইকে মুগ্ধ করে। তাই আশপাশ থেকে অনেক মানুষই মসজিদটি দেখতে আসে। আবার দূরপাল্লার পথচারীদের মধ্য থেকেও কেউ কেউ সময়-সুযোগ করে তাতে নামাজ আদায় করতে আসেন।

চারপাশে খোলামেলা জায়গার মধ্যে মসজিদটি তার সৌন্দর্য নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রাস্তার পাশে হওয়ায় কিংবা মসজিদের আশেপাশে তেমন বসতি না থাকায় বড় মসজিদ হওয়া সত্ত্বেও মুসুল্লির সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম। তবে মসজিদের নান্দনিকতার খবর পেয়ে অনেকেই এটি দেখতে আসেন। তারাই ওয়াক্ত হলে আসর-যোহর নামাজ আবার অনেকেই তাহিয়্যাতুল মসজিদের (নফল নামাজ) নামাজ আদায় করেন।

মসজিদের উত্তর-পূর্ব কোণে তাকালে মিলবে বড় বড় গাছ আর সামনের দিকে কাশবন। এখানকার শ্রমজীবীরা এই মসজিদে নামাজ পড়তে আসেন। দুইতলা মসজিদটিতে একসাথে প্রায় প্রতিদিন নিয়মিত ২০০-২৫০ মুসুল্লি জামাতে নামাজ পড়েন এবং জুমার দিন নামাজ পড়েন প্রায় ১০০০-১২০০ মুসুল্লি।

ইমাম ও খতিব মুফতি মুহাম্মাদ নুরুল ইসলাম সিরাজী (৪৪) জানান, শুরু থেকেই আমি এ মসজিদের ইমাম ও খতিব। মসজিদটি আমার কাছে বেশ পছন্দের। এতে প্রধান ফটক আছে দুই-তিনটি। চারপাশ থেকে মসজিদের ভেতর আলো প্রবেশের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাঁচের ভেতর দিয়ে আসা প্রকৃতির আলোয় ভেতরে চমৎকার এক পরিবেশ তৈরি হয়। জুড়ায় মুসুল্লিদের মন। মসজিদের পাশে আমার থাকার জন্য আলাদা ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

মসজিদের খাদেম গোলাম কিবরিয়া জানান, অনেক দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন মসজিদটি দেখতে আসে, দেখতে এসে এখানে নামাজ আদায় করে। নিরিবিলি পরিবেশ। প্রতিষ্ঠাতা মসজিদ বানানোর মতো যেই কাজটি করেছেন— এটি অত্যন্ত ভালো কাজ।

সাদ্দাম হোসেন নামের এক মুসুল্লি বলেন, আমি পাশের একটি ফ্যাক্টরিতে চাকরি করি। সুযোগ পেলেই এখানে নামাজ পড়তে আসি। মসজদটি আমার খুব ভালো লাগে। কাঁচের মসজিদ হওয়াতে চারিদিক থেকে মসজিদের ভেতরে আলো প্রবেশ করে, এটি দেখতে বেশ সুন্দর মনে হয়।

মসজিদ চত্বরে মুসুল্লিদের জন্য অজুখানা রয়েছে। অজুখানাতে ঢুকতে ডানদিকে ও মসজিদের সিঁড়ির বামপাশে গোলাপফুলসহ বেশ কিছু ফুলের গাছ রয়েছে, যা প্রতিনিয়তই মসজিদের শোভাবর্ধন করছে।


আরো সংবাদ



premium cement