২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

নাড়ির টানে ছুটছে মানুষ

কমলাপুরে ট্রেনে উঠতে ঘরমুখো যাত্রীদের হুড়োহুড়ি - ছবি : নয়া দিগন্ত

বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হয়েছে ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা। এদিন অনেক প্রতিষ্ঠানের শেষ কর্মদিবস হওয়ায় দুপুরের পর থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন বাস টার্মিনাল, কমলাপুর ট্রেন ষ্টেশন ও সদরঘাটে দেখা গেছে ঘরমুখো মানুষের ভিড়।

এক দু’দিনের মধ্যেই ফাঁকা হবে ঢাকা। নতুন রূপে আবির্ভুত হবে চিরচেনা রাজধানী। এদিকে যেসব যাত্রীদের বাস বা ট্রেনের অগ্রিম টিকিট কেনা আছে টিকিট নিয়ে তাদের কোনো দুশ্চিন্তা না থাকলেও ট্রেন বা বাস টার্মিনালে ফিরতি বাস বা ট্রেনের অপেক্ষা করতে হচ্ছে তাদের। অতিরিক্ত বিলম্বের কারণে পরিবার পরিজন নিয়ে দুর্ভোগেও পড়তে হচ্ছে অনেককে।

কমলাপুরে অগ্রিম টিকিটে বাড়ি ফেরার দ্বিতীয় দিনে দেখা দিয়েছে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়। সকাল থেকে কোনো ট্রেনই নির্দিষ্ট সময়ে ঢাকা ছাড়তে পারেনি। প্রত্যেকটি ট্রেনই গড়ে দুই থেকে তিন ঘন্টা দেরিতে ছাড়ছে। কমলাপুর রেল স্টেশনের টিকিট কালেক্টর ইনচার্জ আবদুর রহিম নয়া দিগন্তকে জানান, প্রতি ঈদে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপের কারণেই শিডিউলে কিছুটা বিলম্ব হয়। বৃহস্পতিবার সকালে বেশ কয়েকটি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। তিনি আরো জানান, রাজশাহীগামী ধুমকেতু এক্সপ্রেস আড়াই ঘন্টা বিলম্বে ছেড়েছে। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ৬ টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এটি ঢাকা ছড়েছে সকাল ৮ টায়।

অন্যদিকে চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল ৮ টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছেড়েছে সকাল ১০ টায়। আর শেরপুরের মহুয়া ট্রেনটি সকালে একঘন্টা বিলম্বে ছেড়ে গেছে।

উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার কমলাপুর থেকে দেশে বিভিন্ন গন্তব্যে স্পেশাল ট্রেনসহ মোট ৫৫ টি ট্রেন ছেড়ে যাওয়ার কথা রয়েছে।

কমলাপুর ষ্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক জানান, ঈদের সময়টাতে ট্রেনের শিডিউলে কিছুটা হেরফের হবেই। কারণ হিসেবে তিনি যুক্তি দেখান প্রতিটি ট্রেনেরই যাত্রী থাকে বেশি। এই অতিরিক্ত যাত্রীদের উঠাতে নামাতে সময় লাগে বেশি। এছাড়া প্রতিটি ট্রেন ফিরতেও একইভাবে সময় লাগে বেশি। তাই ঈদের এই সময়টাতে কিছুটা বিলম্বকে ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় বলা যায় না। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের বন্যার কারণে ট্রেনগুলোর গতি কমিয়ে চালানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

রাজধানীর গাবতলী কল্যাণপুর, শ্যামলী, সায়েদাবাদ কমলাপুর টিটি পাড়া এবং মহাখালী থেকে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যের বাস ছেড়ে যাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার ও আগামীকাল শুক্রবার ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বেশি থাকবে বলে জানিয়েছেন বাসের টিকিট বিক্রির সাথে সংশ্লিষ্টরা। যাত্রীরা অভিযোগ করছেন প্রথমে অগ্রিম টিকিট নেই বলা হলেও বেশি দাম দিলে এখনো কিছু টিকিট পাওয়া যাচ্ছে । তবে প্রতি টিকিটে দাম নেয়া হচ্ছে তিনগুণ পর্যন্ত বেশি।

অন্যদিকে সদরঘাটেও দুপুরের পর থেকে ঘরমুখো যাত্রীদের চাপ বাড়ছে। দুপুরে সদরঘাট থেকে কোনো লঞ্চ না ছাড়লেও যাত্রীরা কিন্তু দুপুরের পর থেকেই ভিড় করেছেন। দক্ষিনাঞ্চলের বিভিন্ন গন্তব্যের যাত্রীরা পরিবার নিয়ে আগে ভাগেই চলে আসছেন সদরঘাটে।

মহাখালিতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই টার্মিনাল থেকে বাসের কোনো অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয় না। আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতেই এখান থেকে যাত্রীরা বাসের টিকিট কিনতে পারছেন। দুপুরের পর মহাখালীতেও যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। গাবতলীর এক পরিবহনের কর্মীরা জানান, মহাসড়কে যানজটের কারণে ঢাকামুখী সবগুলো গাড়িরই গাবতলী পৌঁছাতে বিলম্ব হয়। এ কারণে কাউন্টারে জড়ো হওয়া যাত্রীদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষায় থাকতে হয়। এছাড়া দুপুরের দিকে দুই দফা বৃষ্টির কারণে অপেক্ষমান যাত্রীদের বেশ দুর্ভোগের কবলে পড়তে হয়। এ সময় টার্মিনালমুখী যাত্রীদের অনেকেই বৃষ্টিতে কাকভেজা হয়ে কাউন্টারে পৌঁছান।

নগরী ঘুরে দেখা গেছে বৃহস্পতিবার রাজধানীর চারদিকে বাহির পথগুলোতে তীব্র যানজটে ঘরমুখো যাত্রীরা ছিল অসহায়। গুলিস্তানের পরে যাত্রাবাড়ি থেকে শুরু করে কাচপুর ব্রীজ ও পরের দীর্ঘ রাস্তাতেও তীব্র যানজটের কারণে দুভোর্গে পরেন ঘড়মুখো যাত্রীরা।

অন্যদিকে ঢাকা-মাওয়া সড়কেও ছিল যানজট। নগরীর উত্তরে গাজীপুরের মাওনা এবং উত্তরাঞ্চলের রাস্তা আশুলিয়া বাইপাল ও চন্দ্রা হয়ে কালিয়াকৈর পর্যন্ত দীর্ঘ পথেও ছিল যানজট।


আরো সংবাদ



premium cement