১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

আনন্দ আড্ডায় গানে জাবি’র সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন

আনন্দ আড্ডায় গানে লন্ডনে জাবি’র সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন - ছবি : নয়া দিগন্ত

জমজমাট আয়োজনের মধ্য দিয়ে লন্ডনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব উদযাপিত হয়েছে। এ উপলক্ষে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রছাত্রীদের আয়োজনে গেল শনিবার (২৫ জুন) রিজেন্টলেক বেঙ্কুইটিং হলে দিনব্যাপী এক মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে আগত অতিথিদের প্রথমেই গোলাপ ফুল দিয়ে বরণ করে নেন সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির সদস্যরা। তারপর রেজিস্টার্ড সদস্যদের হাতে আইডি কার্ড ও অন্যান্য উপহার সামগ্রী তুলে দেন।

একে একে আসতে থাকেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ব্যাচ থেকে শুরু করে ৪৬তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীরা। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে শুধান ‘বন্ধু কী খবর বল? কতদিন দেখা হয়নি!’

ওয়েলকাম ড্রিংকের সাথে হাল্কা নাশতা আর চা-কফি খেয়েই আড্ডায় মেতে উঠেন সবাই। রংবেরঙের বেলুন উড়ানোর মধ্য দিয়ে উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। শত শত রঙ্গিন বেলুন উড়িয়ে রাঙিয়ে তোলে নীলাকাশ। সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির আহবায়ক জহির মুহাম্মদ উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব পারভেজ মল্লিকের সঞ্চালনায় শুরু হয় অনুষ্ঠানের আলোচনা ও স্মৃতিচারণ। ক্যাম্পাসের মজার স্মৃতি সবাইকে নিয়ে যায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাসে।

উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টাওয়ার হ্যামলেটের মেয়র লুৎফর রহমান। নির্দলীয় জনপ্রিয় এই মেয়রের উপস্থিতি উৎসবে ভিন্ন একটি মাত্রা এনে দেয়। উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে মেয়র লুৎফর রহমানকে সুবর্ণজয়ন্তী উৎসবের স্মারক উপহার দেয়া হয়। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক ডেপুটি মেয়র অহিদ আহমেদ।

সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন কমিটির পক্ষ থেকে বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ম ব্যাচের ছাত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ খিজিরকে। এছাড়াও বিশেষ সম্মাননা দেয়া হয় আইঅন টিভির কর্ণধার আতাউল্লাহ ফারুক ও ইফতি আহমেদকে। স্পন্সরদের হাতে উৎসবের স্মারক তুলে দেন মো: ইকবাল হোসেন, আশরাফুন্নেসা রোজী, সৈয়দ শাহিন আহমেদ, আসমা শাহ, আব্দুর রহমান মিঠু, সিনা আকন্দ, হাবিবে আলম চৌধুরী, ওয়াকারুল আমিন রনি, সিকান্দার আলী সিকো, আনিসুর রহমান, ড. আসমা পারভিন মুক্তা, চৌধুরী নিয়াজ মাহমুদ লিঙ্কন।

দুপুরে চলে ভুরিভোজ। সবাই মিলে খাওয়া-দাওয়া সেরে আবারো শুরু হয়ে যায় আড্ডা। বিকেলে সাংস্কৃতিক সম্পাদক মাহবুবা জেবিন এবং ড. সাবের শাহ-এর প্রাণবন্ত উপস্থাপনায় শুরু হয় জমজমাট সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

প্রথমেই আলিম আল রাজী তার মিষ্টি গানের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। এরপর লন্ডনের ক্ষুদে সেনসেশন আরওয়া রশিদ দেশের গান ও লালনের গান গেয়ে অতিথিদের মন জয় করে নেন । তার কচিকণ্ঠের গাওয়া ‘বাড়ীর পাশে আরশিনগর’ গানটি সবাইকে নিয়ে যায় জাবিয়ানদের আরশিনগর জাহাঙ্গীরনগরে।

এরপর মঞ্চে আসেন ক্লোজআপ তারকা রাশেদ উদ্দিন। রাশেদ তার মায়াবি কণ্ঠের জাদুতে আবিষ্ট করে রাখেন সবাইকে। তার গানে দর্শকরা একাধারে নেচেছেন আবার ‘মা’ গান শুনে অনেকে কেঁদেছেন। এনি জামান, মাহবুবা জেবিন, রুমানা তুলি ও জাকিয়া তাসনিমের দলীয় নৃত্য ছিল অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ।

এরপর মঞ্চ মাতাতে আসেন শারমিন দিপু। দিপুর জমজমাট পরিবেশনা সবাইকে নাচতে উৎসাহিত করে। মঞ্চ থেকে নেমে এসে সবার সাথে নাচে যোগ দেন দিপু। চলতে থাকে সমবেত গান আর নাচ।

সবশেষে মঞ্চে আসেন লন্ডনের জেমস খ্যাত রাজ হাসান। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে পরিণত হয় ‘চলো বদলে যাই’ ও মীরাবাঈ গানের মূর্ছনায়। রাজের পরিবেশনার মাধ্যমে শেষ হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

এরপর উপদেষ্টা মো: শহীদুল ইসলামের পরিচালনায় শুরু হয় আগত আপু এবং ভাবীদের অংশগ্রহণে ‘মিউজিক্যাল পিলো পাসিং’ । টানটান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে প্রায় অর্ধশত অংশগ্রহণকারীর মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতার মাধ্যমে টানা দ্বিতীয়বারের মতো অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হন মুন্নি রহমান। অংশগ্রহণকারী সেরা পাঁচজনকে পুরস্কৃত করা হয়।

এরপর র‌্যাফেল ড্র-এর মাধ্যমে ১০ জন বিজয়ীর হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। এভাবেই হাসি আনন্দের মধ্য দিয়ে বিদায়ের সুর বেজে ওঠে। শেষ হয়েও যেন হলো না শেষ। শেষ হলো না কথার মালা। শেষ হলো না সেলফি তোলা।

‘চলেছি সবাই দূর দিগন্ত পেরিয়ে, অপার কোনো এক শান্তির খোঁজে।’ আমরা কি খুঁজে পেয়েছি সেই শান্তি দূর পরবাসে? জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০ বছর পূর্তিতে যুক্তরাজ্যে সম্মিলিতভাবে সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনের মাধ্যমে সাবেক শিক্ষার্থীরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন, সকলে মিলে বিলেতে একটি জাহাঙ্গীরনগর পরিবার গড়ে তুলতে।

উৎসবে পরিবারসহ আরও অংশগ্রহণ করেন মো: সিদ্দিক, ডক্টর মাধু আচার্য, কামাল মুস্তাফা, একেএম রাকিবুদ্দিন শাহিন, রুবিনা আক্তার রেখা, মো: নজরুল ইসলাম, নাসিমা সুলতানা চৌধুরী, হুমায়ুন কবির, মো: আসাদ উল্লাহ, ইন্দ্রজিত সাহা, সুফিয়া কমর বেবি, মো: নুর হাসান মামুন টুটুল, আশরাফুল আলম, মো: নিয়াজ উদ্দিন বাবু, মতিয়ার রহমান, মো: আখতার আজাদ পাপ্পু, ড. শাকিল আহমেদ, হাফিজা আক্তার, মনির মোহাম্মদ জামান, সাঈদ উদ্দিন আহমেদ, মুকিত শামস জয়, মো: আলমগীর হোসেন বিদ্যুৎ, ড. নজরুল ইসলাম বিদ্যুৎ, ফারহানা ইয়াসমিন চমন, মোরশেদ ঠাকুর, হোসনে তৌহিদ পাভেল, কামরুল হাসান মঞ্জু, মো: শফিউল আজম সুমন, সৈয়দ ইফতেখার ইফতি, মুসফিকুর রহমান ভুঁইয়া জেম, আহমেদ হাসান, কাজী মহিবুল ইসলাম লিমন, আজিজুল করীম লিপু, সাবিহা সুলতানা, সোনিয়া করীম, ড. মিজানুর রহমান জামী, বুলবুল আহমেদ, সজীব ভুইয়া, মাহবুবা আক্তার দীপা, নাজমুস সাকিব, মো: শফিকুজ্জামান চৌধুরী জাভেদ, মো: রায়হানুর রহমান, রানা নাজিমুদ্দিন, আহসানুল চৌধুরী নাহিয়ান, আলী মোহাম্মদ, মো: সাইদ হোসেন তুষার, তানজিম মাহবুব, মো: হাসান অয়নসহ আরো অনেকে।


আরো সংবাদ



premium cement