২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

  সন্তান হত্যার বিচার চান মা

-

পঞ্চগড়ে সন্তান হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে মা। দশম শ্রেণীর ছাত্রী লক্ষ্মী রানী পুতুলকে গলাটিপে হত্যার অভিযোগে (২৩ জানুয়ারি) পঞ্চগড় আমলি আদালত-৫, আটোয়ারি, পঞ্চগড়ে মা শান্তি বালা (থুইনী) বাদি হয়ে সৎমা চায়না রানী ও সাবেক স্বামী হৃদয় শর্মা সাকালুর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আদালত মামলা গ্রহণ করে আটোয়ারি ওসি মামলা রেকর্ড করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। ঘটনাটি ঘটেছে, আটোয়ারি উপজেলার বলরামপুর ইউনিয়নের নাপিতপাড়া গ্রামে। জানা যায়, শান্তি বালার সাথে হৃদয় শর্মা সাকালুর বিয়ে হয়। তাদের তিনটি সন্তান। ছোট মেয়ের নাম লক্ষ্মী রানী পুতুল। এরপর সাকালু শান্তিবালাকে ডিভোর্স দেয়। শান্তি বালা বাবার বাড়িতে আশ্রয় নেন। মামলার আরজির সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, গত ২০ জানুয়ারি ৮টার সময় লক্ষ্মী রানী পুতুল স্কুলে পিকনিকে যাওয়ার জন্য চারশত টাকা তার বাবা সাকালুর কাছে চায়। এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে তার সৎমা চায়না ও সাকালু অমানবিক মারধর করে গলাটিপে হত্যা করে পুতুলকে। পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড়ে পাঠান। কিন্তু আসামি গ্রেফতার না হওয়ায় জনমনে নানা প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। অবশেষে মা শান্তি বালা আদালতে মামলা করেন। সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হকিকুল ইসলাম বলেন, চায়না গলাটিপে হত্যা করেছে পুতুলকে এটি অসংখ্যক লোকের সামনে স্বীকার করেছে। এ ব্যাপারে সাকালু বলেন, চড়-থাপ্পড় মেরেছিলাম। মামলার সাক্ষী সন্দেপ চন্দ্র বর্মণ বলেন, আমি ফাঁসির ওড়না খুলে দিয়ে পুতুলকে মাটিতে নামিয়ে ছিলাম। ততক্ষণে পুতুল মারা গেছে। মামলার সাক্ষী আবদুল কুদ্দুস, প্রভাত চন্দ্র, খাদেমুল ইসলাম বলেন, সাকালু ও চায়নাকে কোনোভাবেই ক্ষমা করা যায় না। শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার পুতুল। বলরামপুর দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মাওলানা আফতাব উদ্দীন বলেন, লক্ষ্মীরানী পুতুল একজন ভালো ছাত্রী। তার আচার-আচরণও ভালো। বলরামপুর মির্জা গোলাম হাফিজ বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জগদীশ চন্দ্র বর্মণ বলেন, লক্ষ্মী রানী আমার স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী। মেয়েটি চরম জুলুম নির্যাতনে শিকার। সাকালু ও চায়নার শাস্তি হওয়া উচিত। শান্তি বালা থুইনীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মির্জা নাজমুল ইসলাম কাজল, অ্যাডভোকেট শামিম আহম্মদ সবুজ, অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান মিঠু বলেন, থুইনীর মতো অসহায় মহিলা কন্যা হত্যার বিচার পাবে না এটি হয় না। যেকোনো মূল্যেই তিনি সন্তান হত্যার বিচার পাবেন। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে আটোয়ারি থানার ওসিকে রেকর্ড করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আশা করি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে। আবদুল্লাহ অটোরাইস মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শিল্পপতি দেলোয়ার হোসেন বলেন, সাকালু ও চায়না যদি পুতুলকে গলাটিপে হত্যা করে থাকে তাহলে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হওয়া উচিত বলে আমি মনে করি। আদালতের আদেশ পেলেই আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আটোয়ারি পুলিশ জানিয়েছেন। মামলার বাদিনী থুইনী বলেন, আসামি সাকালু ও চায়নার ফাঁসি চাই।

 


আরো সংবাদ



premium cement