২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

আবিষ্কার বেগমের দিনকাল

-

‘আমি অপার হয়ে বসে আছি ওহে দয়াময়/ পাড়ে লয়ে যাও আমায়/ পাড়ে লয়ে যাও আমায়’Ñ গানের রচয়িতা বাউলসম্রাট লালন সাঁই যথার্থই বলেছেন। গানটির তাৎপর্য এবং গভীরতা মানুষের মন ছুঁয়ে দেয়; হৃদয়কে করে শীতল। আমাদের চারপাশে এমন অনেক প্রবীণ অপার হয়ে বসে আছেন। পরিবারে এরা অনেকাংশেই নিপীড়িত, নির্যাতিত ও অবাঞ্ছিত মানুষ হিসেবে গণ্য হয়ে থাকেন। এমনই এক অপারের কাণ্ডারি হয়ে বসে থাকা আমাদের সমাজের অন্যতম একজন প্রবীণ নারী আবিষ্কার বেগম।
আবিষ্কার বেগম ৮০ বছরে পা রেখেছেন। তিনি মানিকগঞ্জ জেলার সিঙ্গাইর উপজেলার আঙ্গারিয়া (আবাসন ২)-এর বাসিন্দা। স্বামীর কোনো জমি না থাকায় বর্তমানে আঙ্গারিয়া আবাসনে (২) বসবাস করছেন। স্বামী মৃত আফছার আলী ১৯৭১ সালে অসুস্থতার কারণে মারা যান। বাবার বাড়ি ঘিওর উপজেলার হাট ঘিওরে। তার দুই মেয়ে ছিল রেলিয়া ও রেজিয়া। ছোট মেয়ে রেজিয়া ১৬ বছর আগে মারা যায়। আর রেলিয়ার বিয়ে হয় মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার ঝিটকায়। রেলিয়ার এক ছেলে হওয়ার পর স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না করতে পেরে তাকে ছেড়ে দিয়ে বিদেশ চলে যায়। আবার একটা বিয়ে করে রেলিয়া বেগম। পরের স্বামীর আয়রোজগার ভালো না থাকায় ছেলেকে মায়ের কাছে রেখে বিদেশ চলে যায়। রেলিয়া বেগমের ছেলের বয়স ১৭ বছর, একটা খাবার হোটেলে কাজ করে। যতটুক রোজগার করে, তা বন্ধুবান্ধব নিয়েই খরচ করে। বৃদ্ধ নানীর দিকে কোনো খেয়াল নেই তার। নানীর কোনো কাজে সাহায্যই করে না। রেলিয়া বেগম যা আয় করেন তা স্বামীকে দেন আর মাকে চিকিৎসা বাবদ মাঝে মধ্যে কিছু টাকা দেন।
এ বয়সে (আবিষ্কার বেগম ) রান্নাবান্না করে খাওয়া তার জন্য খুবই কষ্টকর। তাকে দেখার মতো এবং দু’বেলা রান্না করে দেয়ার মতো কেউ নেই। তাই এই বয়সে শরীরের ব্যথা নিয়ে, হাত পুড়ে রান্না করে খেতে হয় তাকে। আর দুঃখ-কষ্টে সারাক্ষণ বলতে থাকেনÑ ‘আল্লাহ আমায় নিয়ে যাও’।
একান্তভাবে কথা বলে জানা যায়, পরিবার ও সামাজিকভাবে তেমন কোনো সহযোগিতা ও স্বীকৃতি তার কপালে জোটেনি। আশ্রয়ণ কেন্দ্রে বারসিকের কাজের মধ্য দিয়ে তিনি বয়স্কভাতা পান। এটি দিয়ে কোনো মতে ওষুধ কিনে ও চারপাশের আপন জালা শাকসবজি বিক্রি করে জীবন যাপন করেন। আবিষ্কার বেগমের পাশে কোনো সদয় ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি এগিয়ে এসে সহযোগিতা করে, তাহলে এই বৃদ্ধার জীবনে বড় উপকার হতো। এখনো তিনি নিজেই সব কাজ করেন, কারো ওপর নির্ভরশীল না থেকে যা পান তা দিয়েই কোনো মতে দিনাতিপাত করেন। স্বনির্ভর এক জীবনই তিনি পরিচালনা করে আসছেন। তবে জীবনসায়াহ্নে এসে তিনিও কারো না কারো সহযোগিতার প্রয়োজন বোধ করেন। আসুন, আমরা তার পাশে দাঁড়াই। যতটুকু পারি সহযোগিতা করি এই সংগ্রামী বৃদ্ধাকে।


আরো সংবাদ



premium cement
বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী

সকল