২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
আমিও বলতে চাই

দহন

-

জীবন যখন যন্ত্রণার দুয়ারে এসে দাঁড়ায় তখন মানুষ পাথরের মতো আঘাতের প্রতিঘাত হয়ে ওঠে। কোনো ভীতি-সংশয় আর হারানোর চিন্তা থাকে না। অবিরাম চলতে থাকে প্রতিশোধ গ্রহণের দহন, না হয় মুক্তির চেষ্টা।
অহনার জীবনে এখন অদ্ভুত এক পরিবর্তন এসেছে।
অনেক শুনেছে একটা বাজে কথা। সন্তান দু’টির কী হবে? এসব ভাবতে ভাবতে ১৫ বছর পার হলো। কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এসব উদ্ভট শুভাকাক্সক্ষী সমাজে, আত্মীয়স্বজনের মধ্যে ব্যাঙের ছাতার মতো উজাতে থাকে। এগোতে গেলে টেনে ধরে এই আরেকটু ভাবো, সন্তান দু’টির কী হবে? এমন কুমন্ত্রণা আর পিছুটানের বেড়াজালে অহনা আটকে আছে। গত ১৫ বছর তার সেই বিবর্তনের দিন আর আসেনি। আজ বরং খুব মজার একটা উপহার সে পেল।
বাবা না থাকলে এ সমাজে অহনার মেয়ে পরিচয় দিতে পারত না, এতিম হতো, টিটকারি শুনতÑ এমন ভয় তাকে দেয়া হয়েছিল। আজ সেই বাপের পরিচয় নিয়ে মেয়েরা বাইরে বের হতে পারছে না। স্কুল বন্ধ করে বাড়ি বসে আছে। ভবিষ্যতে মেয়েদের হয়তো আত্মহত্যা করতে হবে সেই বাপের পরিচয় নিয়ে থাকলে।
ভবিষ্যতে কেন? এখনই বুঝদার হলে ওরা তাই করত।
অহনার স্বামী রিয়াজ হ্যান্ডসাম, উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। সমাজের উচ্চ স্তরের ভদ্রলোক। সুন্দরী অহনাকে দিনের পরদিন ফেলে রেখেছে। তবুুও অহনা সয়ে নিয়েছে। নিজেকে ধিক্কার দিয়েছে, হয়তো তার ক্ষমতা নেই স্বামীকে আটকে রাখার। সব কিছু সহ্য করেছে সন্তানদের জীবনের কথা চিন্তা করে।
আজকে ফেসবুক, খবরের কাগজ, টিভিসহ সব গণমাধ্যমে রিয়াজ আহমেদের পরকীয়ার ভিডিও ফুটেজ শিরোনাম হয়েছে। মেয়েদের দেখলে মানুষ জোরে টিজ করছে, হাসছে, নোংরা শব্দে উত্ত্যক্ত করছে। যেসব শব্দ ওরা জীবনে শোনেনি তা শুনতে হচ্ছে। আতঙ্ক আর ভয়ে প্রতিবন্ধীর মতো মুখ থুবড়ে পড়ে আছে ওরা।
অহনা চুপ করে থাকল। তার মুখ থেকে শব্দ বের হচ্ছে না। কিছু বলার যদি হতো, তবে তো সে অনেক আগেই বলতে পারত। আজ তার সন্তানের সামনে মেঘাচ্ছন্ন কালো আকাশ। কোনো মিথ্যা ওদের আকাশ নীল করতে পারবে না। অতএব, অহনা মিথ্যা বলবে না। সবটা উন্মুক্তচিত্তে মিডিয়ার সামনে তুলে ধরবে।
জোবায়দা আক্তার জবা, গোপালগঞ্জ


আরো সংবাদ



premium cement