২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আমিও বলতে চাই

কেন এ বিদেশ যাওয়া?

-

বিদেশে গিয়ে এ দেশের নারীরা নির্যাতিত হচ্ছেন। কেউ কেউ সে নির্যাতনের শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পেতে আকুতি জানাচ্ছেন। অনেকেই ফিরে আসা শুরু করেছেন। আবার কেউ কেউ প্রাণও হারাচ্ছেন। কথা হচ্ছে, এ দেশের নারীরা কিসের প্রলোভনে বিদেশ যাচ্ছেন? কেন যাচ্ছেন? যেখানে তাদের নিরাপত্তা নিয়ে আজ শঙ্কিত সবাই।
দারিদ্র্যের করালগ্রাস থেকে মুক্তি পেতে নারীরা বিদেশ যাচ্ছেন! কেউ কেউ তাদের এই দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে প্রলোভনে ফেলছে। আর্থিক সচ্ছলতার লোভ দেখিয়ে বিদেশ যেতে রাজি করাচ্ছে। কিন্তু নিরাপত্তার গ্যারান্টির কথা দিচ্ছে কি না তা সন্দেহ রয়েছে।
প্রবাসী বাংলাদেশীর মধ্যে বড় একটা অংশ হচ্ছে নারী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এক কোটি ৪৬ লাখ ৭৮৯ জন বাংলাদেশী শ্রম অভিবাসীর মধ্যে সাত লাখ ২৭৮ জন নারী রয়েছেন। বিভিন্ন পত্রিকা সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালে নারী শ্রম অভিবাসী ছিলেন এক লাখ ২১ হাজার ৯৮৫ জন। এর মধ্যে ৮৩ হাজার নারী শ্রমিক সৌদি আরবে। বর্তমানে দুই লাখ চার হাজার ৭২৯ জন নারী রয়েছেন সৌদি আরবে। এসব নারী অভিবাসী উল্লিখিত দেশগুলোতে গৃহকর্মী, হাসপাতাল, পোশাক শিল্পসহ বিভিন্ন কলকারখানায় কর্মরত। পুরুষ কর্মীদের বিদেশে যাওয়া তাদের পরিবার ও সমাজ ভালোভাবে গ্রহণ করলেও নারীরা নানাভাবে পারিবারিক ও সামাজিকভাবে সমস্যার মধ্যে বিদেশে কাজ করে বৈদেশিক মুদ্রা উপার্জন করছেন। বিদেশে অবস্থানরত এই নারী শ্রমিকদের বেশির ভাগই যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশে নারী নির্যাতনের হার অনেক বেশি। তাদের বৈদ্যুতিক শক, সিগারেটের আগুন দিয়ে ছেঁকাসহ অমানসিক নির্যাতন সহ্য করতে হয়।
বাংলাদেশ থেকে কাজের জন্য বিদেশে যাওয়া নারীদের ৮০ শতাংশের গন্তব্য সৌদি আরব। সেখানকার বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম উইং থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সম্প্রতি পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, গত বছরের জানুয়ারি থেকে এ বছরের মার্চ পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন দুই হাজার ২২২ নারী গৃহকর্মী। আরো অনেকেই দেশে ফেরার জন্য সেফ হোমে (নিরাপদ আবাস) অবস্থান করছেন। নতুন করে অনেকে সেফ হোমে আসছেন।
মোটকথা, নিজের জীবনের যদি আশঙ্কা থাকে। নিজের ইজ্জতের যদি ভরসা না থাকে। তবে বিদেশ যাওয়ার কী দরকার? আর যদি যেতেই হয় তবে তা নির্দিষ্ট নীতিমালা বা নিরাপদ চুক্তির মাধ্যমে যাওয়া উচিত। চুক্তি আর নীতিমালা তখনই নিরাপদ থাকবে, যখন এতে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ থাকবে। আমার দেশের মা-বোনদের বিদেশের মাটিতে নিয়ে কিসের মধ্যে ঠেলে দেয়া হচ্ছে, এতেও সবার নজর রাখা উচিত।
কাজী সুলতানুল আরেফিন
ফেনী


আরো সংবাদ



premium cement