২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আমিও বলতে চাই

নারীর কাব্য

-

সে দিন দুপুরবেলায় যখন ফার্মেসি বন্ধ করছি, ঠিক ওই সময়ে দুই আগন্তুক এলেন কাস্টমার হয়ে। দু’জনেই মধ্যবয়সের। দু’জনেই নারী। জানলাম তারা জন্মসূত্রে বোন। একজন সুস্থ হাতে প্রেসক্রিপশন নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকলেও অন্যজন অসুস্থ। ভীষণ অসুস্থ। প্রেসক্রিপশন পর্যবেক্ষণ করে দেখলাম সবই ব্যথানাশক মেডিসিন লিখেছেন ডাক্তার সোহরাব। সাথে ক্ষতস্থান ওয়াশ করার লিকুইড সামগ্রী।
জানতে চাইলাম কিসের এত ব্যথা! কিন্তু আমাকে যা শোনানো হলো, আমি আহত হলাম। সাংসারিক ঝুটঝামেলায় ভদ্রমহিলাকে তার মেজো ছেলে বাঁশ না কী দিয়ে যেনো বেদম পিটিয়ে বাড়িতে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বলতে বলতে ভদ্রমহিলা কেঁদে ফেললেন।
ঘড়ির কাঁটায় সোয়া ৩টা। লাঞ্চ শেষে বিছানায় এসেছি। মনে পড়ল সেই ভদ্রমহিলাকে। বাড়িতে তাদের এখন কী পরিবেশ কে জানে! মাকে পিটিয়ে সেই বেয়াদবের এখন মানসিক প্রতিক্রিয়া কী, জানি না। হয়তো সে মায়ের কাছে এসে নত কণ্ঠে ক্ষমা চেয়েছে, হয়তো চায়নি।
পরিবারের মেজো ছেলেরা সব সময় ত্যাড়া হয়, আমি এই ধারণায় বিশ্বাসী নই। বেয়াদব চিরকালই বেয়াদব। তার জন্ম সিরিয়ালে বড়, মেজো, সেজো হওয়া লাগে না।
গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরে বিবাদ আছেই। কিন্তু বিবাদের রেশ ধরে মায়ের গায়ে হাত তোলা, চিন্তাই করা যায় না। আমি একবার আমার দূরাত্মীয় এক চাচীর প্রসব বেদনার চিৎকার শুনেছি ঘরের কোণ থেকে। আমার বিশ্বাস ওই চিৎকার প্রতিটি সন্তান শুনতে পেলে তারা কখনো মায়ের গায়ে হাত তোলার কথা ভাবতেই পারত না।
পেশাগত দিক থেকে আমি একজন কেমিস্ট। অনেক গর্ভবতী মা আমার কাছে আসেন প্রেসক্রিপশন হাতে নিয়ে। চিকিৎসকেরা ওই সব প্রেসক্রিপশনে ওই সময়ে কী কী সাবধানতার থেরাপি লিখেন, তা আমি জানি। প্রতিটি মায়ের ওই সাবধানতা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে একটি সন্তানকে ১০ মাস পর পৃথিবীতে আনেন। যেনো মা হতে গিয়ে পৃথিবীর এসব নিয়মের কাছে তার দায় ঠেকে গেছে। আবার মাসিক (পিরিয়ড) চলাকালীন ওসব নারীকে কী পরিমাণ যন্ত্রণায় ভুগতে হয়, তা-ও আমি জানি। ফার্মাসিস্ট হতে গিয়ে আমাকে সেসব শেখতে হয়েছে।
আম্মার সাথে আমারও রাগ হয়। অভিমান হয়। ক্রোধ জমে মনে। কিন্তু তার গায়ে হাত তোলার নির্লজ্জ সাহস হয় না। দু’জন নারীকে আমি কোনো দিনও অবহেলা করব না। একজন আমার মা, অন্যজন আমার স্ত্রী। কারণ একজন মা তার জীবনের সব আলোর সাথে কঠিন যুদ্ধ করে আমাকে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন, আর অন্যজন তার জীবনের সব আলো ফেলে দিয়ে আমার ভুবনে চিরদিনের জন্য চলে এসেছে শান্তির আলো জ্বালাতে।
প্রতিটি সন্তানের কাছে তার মাকে আর প্রতিটি স্বামীর কাছে যদি তার স্ত্রীকে একজন আলোকিত নারী মনে হতো, তাহলে আমাদের এই দেশে ‘নারী নির্যাতন’ বলে কোনো কলঙ্কই থাকত না।
জোবায়ের রাজু
আমিশাপাড়া, নোয়াখালী


আরো সংবাদ



premium cement
কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ উদ্ধার ভুয়া সনদ সিন্ডিকেট : কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যানকে ডিবির জিজ্ঞাসাবাদ ঢাকার পয়োবর্জ্য-গ্যাস লাইন পরীক্ষায় কমিটি গঠনের নির্দেশ হাইকোর্টের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রয়োজন ৫৩৪ বিলিয়ন ডলার : পরিবেশমন্ত্রী সাকিবকে ডিপিএলে চান বিসিবি প্রধান নির্বাচক কাতারের সাথে যৌথ বাণিজ্য কাউন্সিল গঠনে এফবিসিসিআইয়ের চুক্তি টি-২০ খেলতে সিলেটে পৌঁছেছে ভারতীয় নারী ক্রিকেট দল খুলনায় হিটস্ট্রোকে এক ব্যক্তির মৃত্যু ভারতের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কী বলল যুক্তরাষ্ট্র? জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য বাংলাদেশের প্রাথমিক দল ঘোষণা বৃষ্টির জন্য রাজশাহীতে ইসতিসকার নামাজ আদায়

সকল