হতদরিদ্র মেয়েরা পাচ্ছে শিক্ষার আলো
- নবীন চৌধুরী
- ২৮ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০
ঢাকার ধামরাইয়ে নারী শিক্ষার উন্নয়নে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বেগম আনোয়ারা গার্লস কলেজ নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কলেজটি এ এলাকার মেয়েদের মধ্যে জ্ঞানের আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে।
উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে একেবারেই নিভৃত পল্লীর একটি গ্রামের নাম রাজাপুর। এ গ্রামের আশপাশের ২০ কিলোমিটারের মধ্যে নেই কোনো নারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সেখানকার সচ্ছল পরিবারের মেয়েরা শহরে বসবাস করে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হলেও পিছিয়ে পড়েছিলেন গ্রামের হতদরিদ্র পরিবারের মেয়েরা। হতদরিদ্র পরিবারের ঘরে উচ্চ শিক্ষার আলো পৌঁছে দিতে গ্রামে মায়ের নামে নামকরণ করে একটি গার্লস কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন ওই গ্রামের কৃতীসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুুল আলীম খান সেলিম।
জানা গেছে, উপজেলার চৌহাট ইউনিয়নের রাজাপুর গ্রামের আশপাশে মেয়েদের লেখাপড়ার জন্য কোনো কলেজ না থাকায় নারীরা শিক্ষায় পিছিয়ে পড়ছিলেন। অভিভাবকেরা তাদের মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে চাইলেও যাতায়াত ও অর্থের অভাবে পিছিয়ে যেতেন এবং অল্প বয়সেই তাদের বিয়ে দিতেন। এ কথা ভেবেই ওই গ্রামের কৃতীসন্তান মেঘনা ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিক্ষানুরাগী বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল আলীম খান সেলিম নিজ গ্রামে মা বেগম আনোয়ারার নামে গত ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন এ গার্লস কলেজটি। ধামরাই উপজেলায় কোনো গার্লস কলেজ নেই। এ উপজেলার এটিই একমাত্র গার্লস কলেজ। তাই একমাত্র গার্লস কলেজটির ওপর নির্ভর মেয়েরা। বর্তমানে ওই কলেজে প্রায় সাড়ে তিন শ’ শিক্ষার্থী রয়েছে। ২০১৭ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় ধামরাই উপজেলার সাতটি কলেজসহ আশপাশের ১৮টি কলেজের মধ্যে বেগম আনোয়ারা গার্লস কলেজের পাসের হার ছিল শীর্ষে। এবার ২০১৮ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় ধামরাই উপজেলার মধ্যে পাসের হারের দিক ছিল দ্বিতীয়। কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আবদুুল আলীম খান সেলিম বলেন, ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিল মেয়েদের উচ্চ শিক্ষার জন্য একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করার। তাই এই আশা আমার পূরণ হয়েছে। অধ্যক্ষ আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, চারতলা বিশিষ্ট ভবনের এ কলেজটি চার বছর পার করলেও এখনো এমপিওভুক্ত হয়নি। দূরের ছাত্রীদের কলেজে যাওয়া-আসার জন্য ফ্রি-যাতায়াতের ব্যবস্থা রয়েছে। সেই সাথে ১৩ জন শিক্ষকসহ ২৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন বহন করেন কলেজের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল আলীম খান সেলিম। শিগগিরই এ কলেজেকে ডিগ্রি কলেজে রূপান্তর করা হবে।