২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

আমি কেবল একজন নারী নই বরং নারীবাদীও হতে চাই : মেগান মার্কেল

ভিন দেশ
-

মেগান মার্কেল। বিশ্বে এখন বেশ আলোচিত এই নাম। সম্প্রতি মেগান বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হন ব্রিটিশ প্রিন্স হ্যারির সঙ্গে। আলোচনার ঝড় ওঠার এটাও একটা কারণ। এ দিকে মেগান মার্কেল এক দিকে যেমন মার্কিন অভিনেত্রী হিসেবে পরিচিত, তেমনি সমাজসেবক হিসেবেও কম পরিচিতি নেই। অনেকের কাছে তিনি সমাজসেবক হিসেবেই বেশি পরিচিতি বা খ্যাতি লাভ করেছেন।
এখন ব্রিটিশ রাজপরিবারের সদস্য মেগান মার্কেল। ডাচেস অব সাসেক্স হয়েছে সমাজসেবক মেগানের। কেমন জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানে তার অভিষেক হয়েছে তা বোঝাই যায়। গণমাধ্যমসহ নানা স্থানে রয়েছে তার কৃতিত্ব বা অর্জনগুলো।
মেগান মার্কেল সম্প্রতি বলেছেন, আমি কেবল একজন নারী নই, বরং নারীবাদীও। এমন একটি উক্তি তিনি করেছিলেন নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘের সম্মেলনে ২০১৫ সালে। সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করছেন ছোট বয়স থেকেই। তিনি মনে করতেন, আমাকে এমন কিছু কাজ করতে হবে, যাতে মানুষের উপকারে আসে। নিজের কৃতিত্ব জাহির করাই মূল কথা নয়। নানা স্থানে উল্লেখ রয়েছে তার দাতব্য কাজগুলোর কথা। অবাক বিষয় হলো, যৌনতাপূর্ণ বা খারাপ ভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল একটি প্রতিষ্ঠানে।
তা প্রচার করা হয়েছিল টেলিভিশনে। তিনি দেখেন, এই হীন প্রবণতা সমাজ নষ্ট করবে। সঙ্গে সঙ্গে এর বিরুদ্ধে জোর প্রচারণায় নামেন মেগান। তখন তার বয়স ছিল মাত্র ১১ বছর। তার এই সাহসের কাজ দেখে সবাই তাকে বাহবা দিতে লাগল।
একটু বড় হলে মেগান সামাজিক ন্যায়বিচারের দিকেও নজর দিতে থাকেন। এসবই তাকে তৈরি করে দেয় তার নারীর ক্ষমতায়নের দৃঢ় অবস্থান। নারীর অংশগ্রহণের পক্ষে জোর প্রচার চালান জাতিসঙ্ঘের নারীবিষয়ক সংস্থার হয়ে। তা করেন ২০১৫ সালে। ২০১৬ সালে তিনি নিয়োগ পান দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশনের বৈশ্বিক দূত হিসেবে। তার বিয়েতে কানাডার প্রধানমন্ত্রী তার (মেগান) সমাজসেবামূলক কৃতিত্ব শুনে খুশি হয়ে তার দাব্য সংস্থায় কানাডা ৩৮ হাজার মার্কিন ডলার অনুদান দেবে বলে জানান।
মেগান অভিনেত্রী হিসেবে কাজ করেন ২০০২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত। নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইলিনয়েস) পড়াশোনা করে সেখান থেকে থিয়েটার অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ বিষয়ে ডিগ্রি অর্জন করেন ২০০৩ সালে। পরে তিনি ইন্টারন্যাশনাল চ্যারিটি ওয়ান ইয়ং ওয়ার্ল্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। এরপর ২০১৪ ও ২০১৬ সামিটে অংশ নেন। সেখানে তিনি মানব তথা নারীর বৈষম্যের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় তুলে ধরেন এবং তা বেশ গুরুত্বও পায়। ২০১৪ সালে তিনি আফগানিস্তান ও স্পেন ভ্রমণ করেন। ওই সময় তিনি ইউনাইটেড সার্ভিস অর্গানাইজেশনের চেয়ারম্যানের পদ নিয়ে ‘জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ হলিডে ট্যুরের’ প্রতিনিধিত্ব করেন। ২০১৬ সালে মেগান ওয়ার্ল্ড ভিশন কানাডার হয়ে গ্লোবাল অ্যাম্বাসেডর পদ লাভ করেন। পরে তিনি রুয়ান্ডা যান নিরাপদ পানি আন্দোলনসংক্রান্ত কাজে।
এর লক্ষ্য হলো, কিভাবে নিরাপদ পানযোগ্য পানি মানুষ সহজে পেতে পারে। এ ব্যাপারে জনসাধারণকে উদ্বুদ্ধ করতে তিনি এশিয়ার কিছু স্থানও ভ্রমণ করেন। তাতে এসংক্রান্ত সচেতনতা বাড়ে। নারীস্বাস্থ্য বিষয় নিয়ে কাজ করতে থাকেন। ‘ইউনাইটেড নেশনস এনটিটি ফর জেন্ডার ইকুয়ালিটি অ্যান্ড দ্য এমপাওয়ারমেন্ট অব উইমেন’-এর উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করেন। চলতি বছর অর্থাৎ ২০১৮ সালে তিনি গণমাধ্যমে বিশেষ নারীবাদী ব্যক্তিত্ব হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেন। ব্রিটেনের গণমাধ্যমেও (ভোগ) তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয় নারীবাদী হিসেবে স্থান পান।
নানা গুণে গুণান্বিত এই নারী ১৯৮১ সালের ৪ আগস্ট আমেরিকার ওয়েস্ট পার্ক হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তার নানামুখী প্রতিভা দেখে সবাই অবাক হয়ে বলত, মেগান বিশ্বে নতুন কিছু আবিষ্কার করবে। মেগানের পুরো নাম রাচেল মেগান মার্কেল। তবে অনেকেই তাকে ডাকে মেগান বলে।

 


আরো সংবাদ



premium cement