১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাকি সেনা প্রত্যাহার হবে না : মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী

- সংগৃহীত

মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মার্ক এস্পার বলেছেন, উত্তর-পূর্ব সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহার সম্পন্ন করছে যুক্তরাষ্ট্র। এভাবে স্থানান্তর ও কমানোর মাধ্যমে দেশটির বাকি অংশে মোতায়েন যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যসংখ্যা প্রায় ৬০০ স্থিতিশীল থাকবে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এস্পার এসব কথা বলেন। অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রাথমিকভাবে সিরিয়া থেকে সেনা প্রত্যাহারের আদেশ দেয়ার পর সিরিয়ায় মার্কিন সামরিক উপস্থিতিকে ঘিরে অস্পষ্টতা ও অনিশ্চয়তার পরিসমাপ্তির ইঙ্গিত পাওয়া যায় এস্পারের মন্তব্যে। ট্রাম্পের ওই আদেশের পর সিরিয়ায় মার্কিন সৈন্যসংখ্যা এক হাজার থেকে প্রায় শতকরা ৪০ ভাগ কমেছে।

এস্পার পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে প্রয়োজন অনুসারে সিরিয়ায় অল্পসংখ্যক সেনা রেখে বাকিদের অন্যত্র সরিয়ে নেয়ার ওপর জোর দেন। সেনাবাহিনীর সংখ্যা অদূর ভবিষ্যতের জন্য ৬০০’র কাছাকাছি থাকবে বলে ইঙ্গিত দেন তিনি। লন্ডনে ন্যাটো শীর্ষ সম্মেলন থেকে ফেরার সময় গত বুধবার এস্পার বলেন, ‘সিরিয়ায় মার্কিন সেনার সংখ্যা এর কাছাকাছিই হবে। তবে যদি আমরা সেখানকার ঘটনাগুলো দেখতে পাই, তবে আমি বলতে পারি যে সেনা প্রত্যাহারে আরো কিছুটা সময় লাগবে।

ইউরোপীয় মিত্ররা সিরিয়া মিসনে আরো এগিয়ে এলে সিরিয়ায় মার্কিন সেনা সংখ্যা আরো কমাতে সক্ষম হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করেননি এস্পার। তিনি বলেন, ‘ন্যাটো জোটে আবার অনেক কথা হচ্ছে। আমরা দেখতে চাই কিছু মিত্র দেশ স্বেচ্ছায় সেনা পাঠাবে। অবশ্য দ্রুত কোনো নতুন অবদানের ইঙ্গিত দেননি তিনি। তিনি বলেন, আমাদের মিত্র বা ন্যাটোর কোনো একটি দেশ যদি আমাদের ৫০ জন লোক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তবে আমরা ৫০ জনকে ফেরত আনার সক্ষমতা অর্জন করতে পারি।’

মার্কিন সেনাবাহিনী জানিয়েছে, সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের পুনরুত্থান ঠেকাতে সজাগ দৃষ্টি রেখেছে তারা। গত মাসে একটি অভিযান পরিচালনা করেছে যে অভিযানে ইসলামিক স্টেট নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির মৃত্যু হয়েছে।

ইসলামিক স্টেটের সংক্ষিপ্ত রূপ ব্যবহার করে লন্ডনে ট্রাম্প বলেছিলেন, সিরিয়ার তেলের মজুদ যাতে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হাতে না পড়ে তা নিশ্চিত করতে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর অবশিষ্ট সেনাদের রেখে দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা তেল ধরে রেখেছি। যে তেল ভাণ্ডার থেকে আইএসআইএস জ্বালানি নিয়েছিল।

তুরস্কের এস -৪০০ এর ব্যাপারে পদক্ষেপ নেই

কংগ্রেসের তীব্র প্রতিক্রিয়ার পরেও সিরিয়া থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহারের পরিকল্পনা শ্লথ করেছিলেন ট্রাম্প। রিপাবলিকানদের মধ্যে অনেকে বলেছিলেন যে তিনি সিরিয়ায় কুর্দি বাহিনীর বিরুদ্ধে দীর্ঘমেয়াদি তুর্কি আগ্রাসনের পথ পরিষ্কার করছেন; অথচ তারা ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমেরিকার শীর্ষ মিত্র। ১৯৫২ সাল থেকে ন্যাটো সদস্য ও মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র দেশ তুরস্ক একতরফাভাবে কাজ করেছে। তারা মার্কিন-সমর্থিত বাহিনীর বিরুদ্ধে সিরিয়ায় আক্রমণ চালিয়েছে। রাশিয়ার বিমান প্রতিরক্ষার উন্নত ব্যবস্থা এস-৪০০ কিনেছে। এসব নিয়ে ন্যাটো কূটনীতিকরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

ওয়াশিংটন বলেছে, এস-৪০০ বিমান প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা ন্যাটোর বিমান প্রতিরক্ষার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। লকহিড মার্টিন কর্পের এফ-৩৫ যুদ্ধ বিমানের জন্যও হুমকিস্বরূপ। জুলাই মাসে তুরস্ককে এফ-৩৫ প্রোগ্রাম থেকে সরিয়ে দেয়ার ঘোষণাও দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র। সম্ভাব্য মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকিতেও রয়েছে আঙ্কারা। ট্রাম্প ও এরদোগানের মধ্যে শীর্ষ সম্মেলনে আলোচনার পরে এস্পার বলেন, এস-৪০০ ইস্যুতে আঙ্কারা এখনও অবস্থান বদল করেনি। এই মুহূর্তে এই ব্যাপারটি নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসহ ন্যাটো জোটের তদবির শেষে বাল্টিক রাষ্ট্রগুলো ও পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষা পরিকল্পনা রোধ করার হুমকি থেকে সরে এসেছেন এরদোগান। মিত্ররা সিরিয়ায় কুর্দি যোদ্ধাদেরকে সন্ত্রাসবাদী ঘোষণানা করলে তিনি বাল্টিক পরিকল্পনায় বাধা দেয়ার হুমকি দেন।

তুরস্কের অবস্থান পরিবর্তনের বিষয়ে এস্পার বলেন, ‘আমি মনে করি এটি এগিয়ে যাওয়ার ইতিবাচক পদক্ষেপ। তারা প্রথম দিক থেকেই কয়েক দশক ধরে ন্যাটোর একটি মূল্যবান অংশ ছিল। সুতরাং আমরা তাদের আস্থায় রাখতে পারি।’ সূত্র : রয়টার্স।


আরো সংবাদ



premium cement