১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

হাতের লেখা প্রতিযোগিতায় প্রথম হাতবিহীন সারা!

লিখে চলছে সারা - ছবি : সংগৃহীত

১০ বছরের ছোট্ট সারা ছবি আঁকে। রং করে। তৈরি করে মাটির পুতুল। লিখতে পারে ইংরেজি ও ম্যান্ডারিন ভাষা। এই বছরই প্রথম টানা হাতের লেখা লিখতে শিখল সে। তারপর জাতীয় হাতের লেখা প্রতিযোগিতায় সেরার শিরোপা জিতে নিল সারা হিনসেলে।

মজার ব্যাপার হচ্ছে, জন্ম থেকেই সারার নেই হাতের কব্জি থেকে বাকি অংশ। কিন্তু টানা হাতে লেখা প্রথম শুরু করতে অসুবিধা হয়নি? নিজের কাজে নিমগ্ন থাকতে থাকতে ১০ বছরের ছোট্ট সারার উত্তর, একেবারেই না। বরং পুরো ব্যাপারটাকেই আমার খুব সহজ মনে হয়।

সারার শিক্ষিকা শেরিল চুরিললা বলেন, আমি না কখনো ওকে ‘আমি পারব না’ কথাটি বলতে শুনিনি। বরং যা আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব, অন্য কেউ হয়তো সেটি করারও চেষ্টা করবে না, সারা সেই কাজটিও হাসিমুখে করে দেবে। ওর অভিধানে ‘হেরে যাওয়া' বলে কোনো শব্দই নেই।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মেরিল্যান্ডের ফ্রেডেরিকের সেন্ট জন'স রিজিওনাল ক্যাথলিক স্কুলের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী সারা হিনসেলে টানা হাতের লেখার জন্য ২০১৯ সালের নিকোলাস ম্যাক্সিম পুরস্কার বিজয়ী হয়। প্রতি বছরই এই পুরস্কারটি দুজন বিশেষ শিক্ষার্থীকে দেয়া হয়। একটি হাতের লেখার জন্য আরেকটি স্ক্রিপ্টের জন্য।

সারা'র মা ক্যাথরিন বলেন, সারা কোনো কাজে অন্য কারো কোনো সাহায্য নিতে চায় না। সবটাই ও নিজের করবে। এতটাই আত্মবিশ্বাস ওর।

লেখার জন্য নিজের দুই বাহুর সাহায্য নেয় সারা। দুই বাহুর মধ্যে পেনসিলটা চেপে ধরে লিখে যায় সে। তার নজর তখন অক্ষরের দিকে। শব্দের দিকে।

নিজের লেখার বর্ণনাও সুন্দর ভাবে দিয়েছে সারা। সে বলে, একটি অক্ষর তৈরি হয়, যেভাবে কয়েকটি অক্ষর নিয়ে একটি শব্দ তৈরি হয়, আমার সেই পুরো প্রক্রিয়াটাই খুব পছন্দের। এটাকে আমার শিল্প বলে মনে হয়। আর যেহেতু, এটি একটি শিল্প, তাই চেষ্টা করি, লেখার সময়ও ওই ভাবটি বজায় রাখার। আসলে লেখা নয়। আমি অক্ষর আঁকতেই ভালোবাসি বেশি।

যে লেখে না, অক্ষর আঁকে, তাকে ঠেকাবে সে সাধ্য আছে কার?

 

আরো পড়ুন : চুরি করেছ বলার কিছু নেই, ঠিক মতো পানি দিও
নয়াদিগন্ত অনলাইন, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:৩০

পৃথিবী জুড়ে কোটি কোটি মানুষের প্রিয় বনসাই গাছ। জাপানেই প্রথম এ শিল্পের সূচনা হয়েছিল বলে ধারণা করা হয়। বিশেষ চাষ কৌশলের মাধ্যমে বনসাই গাছকে সুক্ষ্ম শিল্প কর্মের আকার দেয়া হয়। ক্ষুদে এসব গাছ পাত্রে বেড়ে উঠে; যা পূর্ণাঙ্গ গাছের আকৃতি ধারণ করে, তবে এগুলোর জন্য প্রয়োজন বিশেষ যত্ন-আত্তির।

জাপানের টোকিওর কাছের শহর সেইতমার বাসিন্দা সেইজি ইউমুরা পারিবারিকভাবেই বনসাই ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পাঁচ প্রজন্ম ধরে বনসাই তৈরির সাথে যুক্ত তারা। ইডো পিরিয়ড (১৬০৩-১৮৬৮) থেকেই ইউমুরা পরিবার বনসাই শিল্প ও ব্যবসার সাথে জড়িত।

সিএনএনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইউমুরার সেই বনসাই থেকে সম্প্রতি ৭টি বনসাই চুরি হয়ে গেছে। মুদ্রামানে এগুলোর দাম ছিল এক কোটি ৩০ লাখ ইয়েন বা বাংলাদেশি প্রায় ৯৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩৬৭ টাকা। কিন্তু অর্থের চেয়েও মূল্যবান ছিল এসব বনসাই। কারণ শুধু বছর নয়, বরং প্রজন্মের সাক্ষী ছিল এসব গাছ। এদের মধ্যে এমনও গাছ ছিল যেটির বয়স চারশ পেরিয়েছে।

সেইজি ইউমুরার স্ত্রী, ফুইয়ুমি ইউমুরা জানান, ক্ষুদ্রাকৃতির এ গাছগুলোকে তারা সন্তানের মতো করেই লালন-পালন করেন। কিন্তু এসব গাছ চুরি হয়ে যাওয়ায় এখন তারা চরম হতাশ। কারণ সামান্য অযতেœ এ দামিগাছগুলো মরে যাবে।

‘শিমপাকু’ নামের গাছগুলো পানি ছাড়া একেবারেই বাঁচে না। চুরি যাওয়া গাছগুলোর মধ্যে এ প্রজাতির বনসাইও রয়েছে। সপ্তাহখানেক যদি পানি দেয়া না হয়, তাহলে গাছগুলোর আশা আর না করাই ভালো।

ফলে দুঃখ পেলেও চোরদের উদ্দেশে অশ্রুভেজা আবেদন জানিয়েছে ইউমুরা পরিবার। চোরদের কাছে তারা আবেদন জানিয়েছেন যেন গাছগুলোতে নিয়মিত অন্তত পানি দেয়া হয়।

ফেসবুকে ইমুরা লিখেছেন, আমাদের এখন কেমন লাগছে সেটি বর্ণনা করার কোনো ভাষা নেই। মনে হচ্ছে আমরা যেন আমাদের সন্তানদের হারিয়ে ফেলেছি। বনসাইগুলো আমাদের কাছে মহা মূল্যবান ছিল।

এগুলোর মধ্যে শিমপাকু প্রজাতির বনসাইটি প্রায় ৪০০ বছর ধরে বেঁচে আছে। এর জন্য বিশেষ যতœ দরকার এবং পানি ছাড়া এক সপ্তাহও বাঁচতে পারবে না। এটা চিরকাল বেঁচে থাকতে পারে, এমনকি আমরা মারা যাওয়ার পরও। যে নিয়ে গেছে আমি তাকে বলতে চাই, গাছগুলোতে যেন যথাযথভাবে পানি দেয়া হয়।

ধারণা করা হচ্ছে কালোবাজারে চড়া দামে বিক্রি করতে চোরেরা এসব বনসাই নিয়ে গেছে। কিন্তু পানির অভাবে যদি মারাই যায় গাছগুলো, তাহলে এতসব অপচেষ্টা তো মাঠে মারা যাবে।

এই শিমপাকুর একটি ইতিহাসও রয়েছে। চার শতাব্দী আগে একটি পাহাড় থেকে এটি সংগ্রহ করে আনা হয়েছিল। এর পর থেকে এটিকে বনসাই বানাতে চেষ্টা চালিয়ে যান ইমুরার পরিবার। শেষ পর্যন্ত এটি তিন ফুট লম্বা এবং দুই ফুট প্রস্থ সাইজে আনা নিয়ে আসা হয়।


আরো সংবাদ



premium cement