২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ট্রাম্পের এত অধঃপতন!

ট্রাম্পকে হারিয়ে দিলেন পুতিন আর শি - ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন প্রশাসনের শীর্ষপদে ডোনাল্ড ট্রাম্প আসার পর থেকেই প্রেসিডেন্টের চেয়ারকে ঘিরে তৈরি হয়েছে একের পর এক বিতর্ক৷ মুখ খুললেই দেশবাসী-সহ প্রশাসনের অন্য কর্তাদের বিপদে ফেলেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ বুশ, ওবামার চেয়ারে বসে বারবারই ট্রাম্পের প্রশাসনিক দক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে৷ আর উঠবে নাই বা কেন, কারণ, এই সব ক্ষেত্রেই তার চেয়ে অনেক গুণ এগিয়ে রয়েছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং৷ কেবল দেশকে নেতৃত্ব দানেই তারা এগিয়ে নেই, বরং বিশ্বের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ট্রাম্পের তুলনায় বেশি বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন পুতিন ও জিনপিংকে৷

সম্প্রতি এমনই তথ্য প্রকাশ করেছে পিউ রিসার্চ সেন্টার নামের একটি সংস্থা৷ ২৫ দেশের নাগরিকদের মধ্যে একটি সমীক্ষা করে এই তথ্য করেছে সংস্থাটি৷ যেখানে ওই দেশের নাগরিকরা স্বীকার করেছেন যে মার্কিন প্রেসিডেন্টের তুলনায় নেতৃত্বদানের ক্ষমতায় অনেক এগিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ও চীনের প্রেসিডেন্ট৷ ট্রাম্পের চেয়ে অনেক বেশি বিশ্বাসযোগ্য পুতিন ও জিনপিং৷ ‘এই ফলাফল নতুন কিছু নয়, এটা হওয়ারই ছিল’ এমনই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা৷ এর কারণ হিসাবে তাদের ব্যাখ্যা, প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই একের পর এক ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে এসেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ প্যারিস জলবায়ু বৈঠকে মার্কিন গন্ডগোলের সূত্রপাতের জন্যও ট্রাম্পকেই দায়ী করা হয়৷ ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্তও ছিল ট্রাম্পেরই৷ ন্যাটোর সঙ্গী এবং জি৭ শীর্ষ বৈঠকে জার্মানি ও কানাডার সঙ্গে ট্রাম্পের দ্বন্দ্বের সূত্রপাত হয় তার আমলেই৷ এখানেই শেষ নয়, একটি প্লে-বয় ম্যাগাজিনের মডেলের সঙ্গে যৌন কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে যায় মার্কিন প্রেসিডেন্টের নাম৷

গত মাসে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ সভায় বক্তব্য রাখেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট৷ সেখানে নিজেই নিজের ঢাক পেটান ট্রাম্প৷ দেখাতে চান তার আমলেই সবচেয়ে বেশি অগ্রগতি হয়েছে মার্কিন মুলুকের৷ আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে তার শাসনকালেই নাকি যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটেছে৷ ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যকে ঘিরে হাসির রোল ওঠে সমগ্র সভায়৷ হাসিতে লুটোপুটি খান অন্য রাষ্ট্রনেতারা৷ যদিও পরে নিজের স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে পরিস্থিতি সামাল দেন ট্রাম্প৷ কিন্তু বিতর্ক চেপে রাখা যায়নি৷

আরো পড়ুন :

মার্কিন সমর্থন ছাড়া বাদশাহ সালমান ২ সপ্তাহও ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না
রয়টার্স

সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানকে সতর্ক করে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সমর্থন ছাড়া দুই সপ্তাহও মতায় থাকতে পারবেন না আপনি। মঙ্গলবার সৌদি আরব নিয়ে এমন মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। 

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মঙ্গলবার মিসিসিপির সাউথহ্যাভেনে এক র‌্যালিতে বক্তব্য রাখছিলেন। এ সময় তিনি বলেন, আমরা সৌদি আরবকে রা করেছি। আপনারা কী বলবেন সৌদি আরব ধনী। বাদশাহ সালমানকে আমি ভালোবাসি। তাকে আমি বলেছি, আমরা আপনাকে সুরা দিচ্ছি। আমাদের ছাড়া আপনি দুই সপ্তাহও মতায় টিকবেন না। সৌদি আরবের শাসনকর্তার সাথে কবে এ আলোচনা হয়েছিল, তা বলেননি ট্রাম্প। তার ওই মন্তব্যকে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা ‘কূটনৈতিক শিষ্টাচারবর্জিত’ বলে বলে উল্লেখ করেছেন। 

তবে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমানকে তিনি কবে বা কোনো সময়ে ওই সতর্কতা দিয়েছেন সে সম্পর্কে কিছু বলেননি ট্রাম্প। সৌদি আরব নিয়ে তিনি এমন কর্কশ শব্দ উচ্চারণ করার পর দেশটির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে তার প্রশাসন। মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের মাথাব্যথার কারণ ইরান। তাদের শায়েস্তা করতে সৌদি আরবকে হাতে রাখা খুবই জরুরি যুক্তরাষ্ট্রের। তাই গত বছর তিনি আন্তর্জাতিকপর্যায়ে যখন বের হন, তখন প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে সৌদি আরবে অবতরণ করেন।

এদিকে সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ বলছে, গত শনিবার বাদশাহ সালমানকে ফোন করেছিলেন ট্রাম্প। এ সময় তারা তেলের বাজার স্থিতিশীল রাখা এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেছেন। 

উল্লেখ্য, বিশ্বে সবচেয়ে বড় তেল রফতানিকারক দেশ সৌদি আরব। আর তাই তারা তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের মূল নেতৃত্বে রয়েছে। তবে তেলের উচ্চ মূল্যের কারণে এই ওপেকের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। গত মাসে নিউ ইয়র্কে জাতিসঙ্ঘ সাধারণ অধিবেশনে তিনি বলেছেন, বাকি বিশ্ব থেকে অর্থ তুলে নিচ্ছে ওপেক সদস্যরা। কোনো কারণেই এ দেশগুলোর প আমি নিই না। আমাদেরকে উচ্চ মূল্যের তেল দিয়ে আমাদের কাছ থেকে সুবিধা নিচ্ছে তারা। দাম বাড়ানো বন্ধ করতে তাদের আহ্বান জানাই। তাদেরকে আহ্বান জানাই দাম কমান।
ভীতিকর পরিস্থিতিতে মার্কিন তরুণেরা


আরো সংবাদ



premium cement