২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অস্ত্র বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

অস্ত্র বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র - সংগৃহীত

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ এক টুইটার বার্তায় বলেন, মার্কিন সরকার সমরাস্ত্র বিক্রি করে বিশ্বকে অশান্ত করে তুলছে এবং অস্ত্র বিক্রি করে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নিজেকে বিশ্বের প্রধান সমরাস্ত্র রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে যে দাবি করে তার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ জাওয়াদ জারিফ। তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটনের এই সমরাস্ত্র রফতানির কারণে বিশ্ব শান্তি বিপন্ন হয়ে উঠছে।

চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে যেখানে দেখানো হয়, গত ৬৭ বছরে আমেরিকা থেকে বিশ্বব্যাপী হাজার হাজার কোটি ডলারের সমরাস্ত্র রফতানি করা হয়েছে।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২০০১ সালের ১১ই সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলায় প্রমাণিত হয়েছে, এত বেশি অস্ত্র রফতানি করা সত্ত্বেও আমেরিকা নিজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি।

টুইটার বার্তায় জারিফ আরো বলেন, আমেরিকা বিশ্বের মোট সামরিক ব্যয়ের ৩৫ শতাংশ খরচ করে। তা সত্ত্বেও তারা ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের হামলা থেকে আমেরিকাকে রক্ষা করতে পারেনি ওয়াশিংটন। ওইদিন সৌদি আরবের ‌মাত্র ১৫ নাগরিক মিলে আমেরিকার ৯,০০০ মানুষকে হতাহত করেছে।

চলতি সপ্তাহের গোড়ার দিকে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক ঘোষণায় বলেছে, প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার সমরাস্ত্র বিক্রির পরিকল্পনায় সবুজ সংকেত দিয়েছেন।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি অস্ত্র বিক্রি করছে যুক্তরাষ্ট্র
নিউ ইয়র্ক টাইমস২৮ ডিসেম্বর ২০১৬

দুনিয়াজুড়ে গত বছর অস্ত্র বিক্রির পরিমাণ কমলেও এ খাতে আয় বেড়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেশনাল রিসার্চ সার্ভিসের এক প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, ২০১৫ সালে সারা বিশ্বে ৮০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি হয়েছে, আগের বছর যার পরিমাণ ছিল ৮৯ বিলিয়ন ডলার।

এর মধ্যে কেবল যুক্তরাষ্ট্রই ৪০ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বক্রি করেছে, যা আগের বছরের চেয়ে ৪ বিলিয়ন ডলার বেশি। সরবরাহকারীদের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ফ্রান্স বিক্রি করেছে ১৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র; যা ২০১৪ সালের তুলনায় ৯ বিলিয়ন ডলার বেশি।

‘কনভেনশনাল আর্মস ট্রান্সফারস টু দ্য ডেভেলপিং নেশনস, ২০০৮-২০১৫’ শীর্ষক ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৪ সালের মতো গত বছরও উন্নয়নশীল দেশগুলোই ছিল অস্ত্রের মূল ক্রেতা। এর মধ্যে কাতার সবচেয়ে বেশি, ১৭ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনেছে গত বছর। মিসর ১২ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র কিনতে চুক্তি করেছে। পিছিয়ে নেই সৌদি আরবও, গত বছর তারা এ খাতে ব্যয় করেছে ৮ বিলিয়ন ডলারের বেশি। অস্ত্র কেনার তালিকায় এরপরের দেশগুলোর নাম দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, ইসরাইল, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইরাক। 

অন্য দিকে বিক্রির তালিকায় যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্সের পর আছে রাশিয়া ও চীনের নাম। পরের স্থানগুলোয় আছে সুইডেন, ইতালি, জার্মানি, তুরস্ক, যুক্তরাজ্য ও ইসরাইল। রাশিয়া গত বছর ১১ দশমিক এক বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে বলে ওই প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস; এর বেশির ভাগ কিনেছে ভেনিজুয়েলা।

২০১৪ সালে অস্ত্র বিক্রি খাতে রাশিয়ার আয় ছিল ১১ দশমিক দুই বিলিয়ন ডলার। চীন গত বছর বিক্রি করেছে ছয় বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র, যা তাদের ২০১৪ সালের আয়ের দ্বিগুণ। ন্যাটো জোটের বন্ধু দেশগুলো অস্ত্র উৎপাদনে তাদের আধিপত্য বজায় রেখেছে; এর মধ্যে জার্মানি উন্নততর নৌ সরঞ্জাম আর যুক্তরাজ্য আধুনিক যুদ্ধবিমানের উৎপাদন বাড়িয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলোয় বাজারজাত করছে।

অবশ্য বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দাভাব বজায় থাকায় অস্ত্র কেনাবেচায় একটি বড় অংশ বাকিতে চলছে বলে এ কংগ্রেসনাল রিপোর্টের অন্যতম রচয়িতা ক্যাথরিন এ থিওহারি জানিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি পলিসির এ বিশেষজ্ঞ বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ বাজেট ঘাটতিতে উদ্বিগ্ন অনেক দেশই নতুন অস্ত্র কেনার ইচ্ছা বাদ দিয়েছে বা কমিয়ে এনেছে।

 


আরো সংবাদ



premium cement