২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পৃথিবীর সর্বউত্তরের ইসলামিক উদ্যান

পৃথিবীর সর্বউত্তরের ইসলামিক উদ্যান। - সংগৃহীত

হাজার বছরের সমৃদ্ধ ইসলামিক ঐতিহ্য বর্তমান বিশ্ববাসীর কাছে তুলে ধরতে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছেন একদল স্থাপত্যশিল্পী, উদ্যানতত্ত্ববিদ ও ডিজাইনারের সমন্বিত একটি দল।

পশ্চিম কানাডার এডমন্টনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত ইউনিভার্সিটি অব আলবার্ট্রা বোটানিক গার্ডেন এ আগা খান উদ্যান নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েক বছর ধরে পরিকল্পনা গ্রহণের পর এটি নির্মাণ করতে ১৮ মাস সময় লেগেছে।

এই শুক্রবার থেকেই পৃথিবীর সর্বউত্তরের এই ইসলামিক উদ্যানটি জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হবে। এই প্রকল্পের উদ্যোক্তাদের মতে, এই উদ্যানটি ইসলামের সহনশীলতা এবং ইসলামের উজ্জল ইতিহাস তোলে ধরবে।

নেলসন বায়ার্ড ওল্টজ ল্যান্ডস্কেপ আর্কিটেক্টের প্রধান টমাস ওল্টজের মতে, এই উদ্যানটি ইসলামিক উদ্যানের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে এবং অন্যরা এর থেকে এরূপ বাগান করতে উৎসাহিত হবে।

এই প্রকল্পের প্রধান স্থপতি বলেন, এক বছর ধরে ইসলামিক উদ্যানতত্ত্ব ও এর ইতিহাস নিয়ে গরেষণা করার পর উদ্যানের গাছে গাছে পানি ব্যবহারের বিভিন্ন পদ্ধতি দেখার জন্য মিশর ও ভারতের বিভিন্ন উদ্যান দেখতে হয়েছে।

ওল্টজ আরো বলন, এসব গবেষণা ও ভ্রমনের পর ইসলামিক উদ্যানের সাথে সাধারণ উদ্যানের মৌলিক পার্থক্য কোথায় তা খুজে বের করতে হয়েছে।

এই উদ্যানের বৈশিষ্ট্য

আগা খান উদ্যানটি ১৫ শতকের মুঘল আমলে নির্মিত বিভিন্ন উদ্যান থেকে উৎসাহিত হয়েই স্থাপন করা হয়েছে।

ইসমাইলি  মুসিলিম সম্প্রদায়ের নেতা আগা খানের নিজস্ব মতামত অনুযায়ী এটা নির্মাণ করা হয়েছে।

এই প্রকল্পটির পেছনে আগা খান ২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করেছেন। এটা নির্মাণ করতে আগা খান ট্রাস্টের সাথে ইউনিভার্সিটি অব আলবার্ট্রা এবং আগা খান ইউনিভার্সিটি যৌথ চুক্তি করেছেন।

কানাডার এডমুন্টন শহর উত্তরের প্রবেশদার হিসেবে পরিচিত। সেখানে গ্রীষ্মকালে ৩০ ডিগ্রী পর্যন্ত ও শীতকালে মাইনাস ৩০ ডিগ্রী পর্যন্ত তাপমাত্রা উঠানামা করে।

কানাডার রুক্ষ জলবায়ুর কারণে আপনি এই উদ্যানে ডালিম গাছ, জলপাই গাছ বা কোন ধরণের খেজুর গাছ খুঁজে পাবেন না।

ওল্টজ বলেন, প্রথমত উদ্যানে কি ধরণের গাছ লাগানো হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়তে হয়েছে। কারণ এখানকার আবহাওয়া এশিয়ার আবহাওয়া থেকে ভিন্ন রকমের। পরবর্তীতে বোটানিকাল গার্ডেনের কর্মীরা এখানকার আবহাওয়া উপযোগী গাছ লাগানোর পরামর্শ দেন। তারপর ইসলামি কবিতা বা উদ্যানে যেসব গাছপালার নাম পাওয়া গেছে তার একটি তালিকা তৈরি করা হল। সেখান থেকে বাছাই করে উদ্যানের উপযোগী গাছগুলো দিয়েই উদ্যানটি তৈরি করা হয়।

উদ্যানে প্রবেশ পথে দর্শনার্থীরা একটি সাধারণ পাথরের দেয়াল দেখতে পাবে এবং এর মধ্য দিয়ে হেটে মন ও শরীর কী দেখতে যাচ্ছে তার প্রস্তুতি নিতে পারবে।

বাগানে পানি প্রবাহের জন্য খাল রয়েছে। এখানে অনুষ্ঠান করার জন্য একিটি এম্পিথিয়েটার রয়েছে।

একটি পুকুরের চারপাশে ফলের বাগান রয়েছে। সেখানে একটি ঝর্ণাও রয়েছে।

এই উদ্যানে ২৫ হাজার প্রজাতির বিভিন্ন উদ্ভিদ রয়েছে।এগুলোর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরণের গাছ, গুল্ম, বহুবর্ষজীবী উদ্ভিদ, একবর্ষী উদ্ভিদ এবং জলজ উদ্ভিদ।

ইসলামিক উদ্যানটির পাশে আরো দুটি সাংস্কৃতিক উদ্যান দেশীয় ও জাপানী উদ্যান রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement