২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

হিলারি ফেসবুকের প্রধান হতে চান কেন?

হিলারি ফেসবুকের প্রধান হতে চান কেন? - সংগৃহীত

সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেছেন, ফেসবুক বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংবাদ প্ল্যাটফর্ম। ফেসবুক থেকেই আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষ সংবাদ পান। সেটা সত্য অথবা মিথ্যা হোক।

যুক্তরাষ্ট্রর ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ডেমোক্রেট দলীয় অ্যাটর্নি জেনারেল মাওরা হেলি সাবেক এই মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেছিলেন, তিনি কোন কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হতে চান? তার এই প্রশ্নের জবাব দিতে একটুও সময় নেননি হিলারি। সাথে সাথেই হিলারি জবাব দেন, ফেসবুক।

হিলারি বলেছেন, বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটার পর ফেসবুক তাদের ব্যবসায়িক মডেলে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। আমি আশা করছি, তাদের এই চেষ্টা সফল হবে। কারণ এটি আসলেই আমাদের গণতন্ত্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যে জনগণ সঠিক তথ্য পাওয়ার পর সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।

রাজনৈতিক ক্যারিয়ার গুটিয়ে বিশ্বের জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের দায়িত্ব নিতে আগ্রহ প্রকাশ ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হতে চাওয়ার আগ্রহ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোড়ন তৈরি হয়েছে।

২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সাবেক এই প্রতিযোগী শুক্রবার সন্ধ্যায় হার্ভার্ডে র‌্যাডক্লিফ পদক পেয়েছেন। মানবাধিকার, দক্ষ রাজনীতিক এবং সমাজ বদলে অবদান রাখায় হিলারি ক্লিনটনকে সম্মানজনক এ পদক দেয়া হয়।

২০১৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের হেরে যাওয়ার পেছনে ফেসবুক দায়ী বলে তার সমর্থকরা মনে করেন। ওই সময় হিলারিকে নিয়ে ভুয়া সংবাদ এবং বিজ্ঞাপন প্রচারের অভিযোগ উঠে ফেসবুকের বিরুদ্ধে।

হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন একজন জনপ্রিয় মার্কিন রাজনীতিবিদ। তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য, এবং নিউ ইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের প্রতিনিধি হিসাবে যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভার সিনেটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। হিলারি ক্লিনটন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি বিল ক্লিনটনের স্ত্রী। রাজনীতিতে প্রবেশের পূর্বে হিলারি আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলেন। হিলারী ক্লিনটন ইলিনয় রাজ্যের শিকাগোতে ১৯৪৭ সালের ২৬ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীই শুধু নন, রাজনীতিক হিসেবেও দক্ষ হিলারি বিশ্বের প্রভাবশালী রাজনীতিকদের একজন।  বিশ্বের প্রভাবশালী এ নারীর শুরুটা হয়েছিল সাদামাটাভাবেই। আর দশ জনের মতোই সাদামাটা ছিল হিলারির শৈশব। স্কুল আর কলেজের পাট চুকিয়ে আইন নিয়ে পড়তে চলে যান যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে।

রাজনৈতিক সচেতনতা থেকে ১৯৬৮ সালে যোগ দেন ডেমোক্রেটিক পার্টিতে। দীর্ঘদিনের বন্ধু বিল ক্লিনটনকে জীবনসংগী করতে বিয়ের গাউন পড়েছিলেন ১৯৭৫ সালে। ১৯৭৯ সালে মার্কিন রোজ ল ফার্মে প্রথম নারী আইনজীবী হিসেবে যোগ দিয়ে সেবছরই স্থান করে নেন টাইমস পত্রিকার পাতায়।

১৯৯৩ সালে বিল ক্লিনটন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হলে হিলারি মার্কিন ফার্স্ট লেডি হিসেবে প্রবেশ করেন হোয়াইট হাউসে। এসময়ই তিনি বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ২০০১ সাল থেকে ২০০৯ সাল পযন্ত নিউইয়র্কের সিনেটরের দায়িত্ব পালন করেন। তবে এসময় ইরাক যুদ্ধের মতো বেশ কিছু বিতর্কিত সিদ্ধান্তে সমর্থন দিয়েছেন হিলারি।

২০০৯ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডেমোক্র্যাট দলের পক্ষে মনোনয়ন চেয়ে মাঠে নামেন। তবে রাজনৈতিক সমঝোতায় নিজেকে প্রার্থীতা বাতিল করে প্রতিদ্বন্ধী বারাক ওবামার পক্ষেই প্রচারণা চালাতে থাকেন। নির্বাচনের পর ওবামা সরকারের পররাষ্ট্র্র্র মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পান হিলারি।

১৯৯৫ ও ২০০০ সালে দুবার বাংলাদেশ সফর করেছেন হিলারি। নোবেল জয়ী ড. মুহম্মদ ইউনূসের সাথেও দীর্ঘদিনের বন্ধুত্ব আছে হিলারি ক্লিনটনের।

হোয়াইট হাউজের দিনগুলিতে মার্কিন সিক্রেট সার্ভিস দেহরক্ষীরা মিসেস ক্লিনটনের জন্য যে কোডনেম নির্ধারণ করেছিল তার নাম ছিল `এভারগ্রিন` বা চির-সবুজ।  ১৯৯৭ সালে হিলারি ক্লিনটন আমেরিকার সেরা সঙ্গীত পুরস্কার গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। এটা ছিল নন-মিউজিক্যাল ক্যাটেগরিতে।  `ইট টেকস আ ভিলেজ` শিরোনামে হিলারি ক্লিনটনের লেখা বইটির অডিও সংস্করণ এই ক্যাটেগরিতে বিজয়ী হয়। বইয়ের মূল বিষয় ছিল শিশুদের বৃদ্ধি এবং শিক্ষা। মিসেস ক্লিনটন বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন।

হিলারি রডহ্যাম ১৯৭৫ সালের অক্টোবর মাসে যখন বিল ক্লিনটনকে বিয়ে করেন, তখন পশ্চিমা দেশের প্রথামত তিনি স্বামীর পদবী গ্রহণ করেননি। তবে কিছুদিন পর বিল ক্লিনটন যখন রাজনৈতিক পদ গ্রহণ করেন তখন মিসেস ক্লিনটনের নাম হয় হিলারি রডহ্যাম ক্লিনটন। তবে  নির্বাচনী প্রচারের ফাঁকে ওয়াশিংটন পোস্টকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, হিলারি ক্লিনটন নামেই তিনি পরিচিত হতে চান।

নিউ অর্লিয়েন্সে ২০১৪ সালে ন্যাশনাল অটোমোবিল ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সম্মেলনে হিলারি ক্লিনটন জানান, ১৯৯৬ সালের পর থেকে তিনি গাড়ি চালাননি।  মূলত তার জীবনযাপনে ধারায় তাকে আর কখনোই নিজের হাতে গাড়ি চালাতে হয়নি। তার জন্য সবসময়ই ড্রাইভার ছিল। আর এ জন্য তার মনে খুবই দু:খ।


আরো সংবাদ



premium cement