১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪২৯, ০৮ রমজান ১৪৪৫
`

ব্রিটেনের নির্বাচনে পাকিস্তান-ভারত লড়াই!

ব্রিটেনের নির্বাচনে পাকিস্তান-ভারত লড়াই! - ছবি : সংগৃহীত

সাগরপারের নির্বাচনেও ক্রমশ গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে জম্মু ও কাশ্মির থেকে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহারের ইস্যুটি। আগামী ১২ ডিসেম্বর ব্রিটেনে সাধারণ নির্বাচন। তার আগে ভারত ও পাকিস্তান দ্বৈরথ তাদের ভোটব্যাংকে ফাটল ধরাবে বলেই আশঙ্কা করছেন প্রার্থীরা। ইতিমধ্যেই কাশ্মিরে আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের প্রস্তাবনা পাশ করে রানির দেশে ভারতীয়দের চক্ষুশূল হয়েছে বিরোধী দল লেবার পার্টি। ব্রেক্সিট নিয়ে জটিলতার জেরে দীর্ঘদিনের কনজারভেটিভ পার্টি সরকারের পতনের আশঙ্কা এবার যথেষ্টই। পাল্লা ভারী লেবার পার্টির দিকে। কিন্তু সম্প্রতি কাশ্মির ইস্যুতে ‘ভারতবিরোধী’ অবস্থান বিপদ বাড়িয়েছে তাদের।

কিছু ভারতীয় বংশোদ্ভূত সংগঠন সোশ্যাল মিডিয়ায় এবং হোয়াটসঅ্যাপে লেবার পার্টিকে আক্রমণ করে ভোটারদের প্রভাবিত করছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। এমনকি, একটি ট্যুইট বার্তায় জেরেমি করবিনের নেতৃত্বাধীন লেবার পার্টিকে ‘ভারতবিরোধী’ বলেও উল্লেখ করা হয়েছে। কেউ কেউ আবার এও বলছেন, করবিন প্রধানমন্ত্রী হলে ভারতের সঙ্গে ব্রিটেনের সম্পর্কের অবনতি হবে।

এর মধ্যেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের এমপি তথা ব্রেক্সিট পার্টির নেতা নাইজেল ফ্যারাজ ঘোষণা করেছেন, ২০১৭ সালে কনজারভেটিভ পার্টির জেতা আসনে তার দল প্রার্থী দেবে না। কিন্তু লেবার পার্টির জেতা সব আসনেই তারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। যদিও, কাশ্মির ইস্যুটি ভোটে খুব একটা প্রভাব ফেলবে না বলেই মনে করছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত লেবার এমপি বীরেন্দ্র শর্মা। একটি বিবৃতিতে তিনি জানিয়েছেন, ‘মাতৃভূমির ভাগাভাগিকে দূরে সরিয়ে রেখে আজকের ব্রিটেনের উপর আমাদের জোর দেয়া উচিত। কাশ্মির সেখানকার মানুষদের বিষয়। এবং ভারতের সংবিধান এবং আইন মেনেই সেখানকার যাবতীয় দ্বন্দ্বের সমাধান হবে। এটা কোনোভাবেই এই নির্বাচনের ইস্যু নয়।
আমরা কোন ব্রিটেনে বাস করতে চাই, এবারের নির্বাচনে সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

তবে, বিষয়টিকে একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না ব্রিটেনের পার্লামেন্টের প্রথম পাগড়িধারী শিখ সদস্য তনমনজিৎ সিং ধেসি। ২০১৭ সালে প্রথমবার জয়ী হন এই লেবার এমপি। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের বিদ্বেষকে খুবই আশঙ্কাজনক বলে দাবি করেছেন বার্কশায়ারের স্লাও থেকে প্রার্থী হওয়া তনমনজিৎ। জেরেমি করবিনের পেশ করা কাশ্মির প্রস্তাবনা নিয়ে হওয়া যাবতীয় বিতর্ককে ভুল বোঝাবুঝি বলেই ব্যাখ্যা করেছেন তিনি।

তার মতে, কোনোভাবেই ভারতের বিরোধিতা করা তাদের উদ্দেশ্য ছিল না। তারা মানবাধিকারের উপর জোর দিয়েছিলেন। যদিও ওই প্রস্তাবনায় কাশ্মিরকে বিতর্কিত এলাকা হিসেবে মেনে নেয়া এবং কাশ্মিরিদের জাতিসঙ্ঘের প্রস্তাবনা মেনে আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার দেয়ার কথা বলা হয়েছিল।

এদিকে, প্রস্তাবনাটি প্রত্যাহারের জন্য ট্যুইটারে করবিনের উপর চাপ বাড়িয়েছে ‘রেসপেক্ট ব্রিটিশ ইন্ডিয়ানস’ নামে একটি সংগঠন। ১০০-রও বেশি ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সংগঠনের প্রতিনিধিত্ব করে তারা। এবারের নির্বাচনে ১৫ লক্ষ ভোট রয়েছে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের। ফলে তাদের হাতে রাখতে চায় সবপক্ষই। ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের বড় অংশ বরাবরই লেবার পার্টির সমর্থক হিসেবে পরিচিত। ২০১৫ সালে ডেভিড ক্যামেরনের সময় থেকেই তা চলে যায় কনজারভেটিভ পার্টির ঝুলিতে।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য বলছেন, এক্ষেত্রে একটিমাত্র ইস্যুতে ভোটকে প্রভাবিত করার চেষ্টা আদৌ হচ্ছে না। ব্রেক্সিট, করব্যবস্থা সংস্কার এবং অন্যান্য ইস্যু এবারের নির্বাচনে প্রধান ইস্যু হয়ে উঠেছে। এর উপরে জাতীয়তাবাদ বিরোধী আবেগ কাজ করলে সহজেই উপমহাদেশের বংশোদ্ভূতদের ভোটে বিভাজন ধরানো সম্ভব হবে।
সূত্র : বর্তমান


আরো সংবাদ



premium cement