২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিডিয়ায় অতিমাত্রায় সন্ত্রাসের খবরে ভীত ব্রিটিশ শিশু- কিশোররা

মিডিয়ায় অতিমাত্রায় সন্ত্রাসের খবরে ভীত ব্রিটিশ শিশু- কিশোররা - ছবি : সংগৃহীত

সংবাদ মাধ্যমে অতিমাত্রায় সন্ত্রাসী হামলা এবং কট্টরবাদীদের খবর প্রকাশের ফলে ব্রিটিশ শিশু-কিশোরদের মনে ভয় ও উদ্বেগ সৃষ্টি হচ্ছে। পাশাপাশি তাদের মধ্যে যেকোনো সময় সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়ার ভয়ঙ্কর ভীতি কাজ করছে। এমনই তথ্য উঠে এসেছে ব্রিটেনের শিশু কিশোরদের মাঝে মিডিয়ার প্রভাব নিয়ে কাজ করা মার্কেটিং গবেষণা সংস্থা চাইল্ডওয়াইজ এক সার্ভে রিপোর্টে।

চাইল্ডওয়াইজ এর গবেষকরা জানিয়েছেন, সন্ত্রাস, সংঘর্ষ, এক্সট্রিমিজম বা যুদ্ধ ইত্যাদি বিষয়ের উপর ব্রিটিশ শিশু কিশোররা মারাত্মকভাবে উদ্বিগ্ন এবং উৎকণ্ঠিত। মিডিয়ায় সন্ত্রাসের খবর ১১ থেকে ১৬ বছর বয়সী কিশোর-কিশোরীদের আচরনের উপর কি ধরনের প্রভাব ফেলে তা নিয়ে গবেষণা চালায় সংস্থাটি।

প্রায় ১৫ শ' শিশু-কিশোরের উপর চালানো জরিপে দেখা গেছে, শিশু-কিশোররা মনে করে প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সন্ত্রাস ও ভয়ের খবর বেশি প্রচার করা হয়। তারা মনে করে, সমাজে দুশ্চিন্তার বড় বড় কারণ বুলিং, রেসিজম ( বর্ণবৈষম্য), শিশু নির্যাতন এবং চাকরি প্রাপ্তি নিয়ে যে সমস্যাগুলো আছে সেগুলো পাশে রেখে বরং সন্ত্রাসকে বেশি গুরুত্ব দেয়া হয় সংবাদ প্রচার ও প্রকাশের ক্ষেত্রে। এ কারণে প্রতি ১০ জনের মধ্যে চারজন শিশু-কিশোরই সন্ত্রাসী হামলার ভয়ের কথা প্রকাশ করেছে। তারা নিজেরাই য কোনো সময় হামলার শিকার হতে পারে বলে ভয় তাদের মনে। এই উদ্বেগের ফলে যেকোনো সময় যেকোনো শিশু-কিশোরের জীবনের গতি বদলে ঝুঁকিপূর্ণ পথে যাবার আশঙ্কার কথাও রিপোর্টে উল্লেখ করেছেন গবেষকরা।

বার্মিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানি রেজা গোলামি বলেছেন, এই সার্ভে চালানোর সময় শিশু-কিশোররা যে ভাবে তাদের ভয়ের কথা জানিয়েছে, সেটি মারাত্মকভাবে বড় চিন্তার বিষয় হওয়া উচিত। তিনি বলেন, সন্ত্রাসী হামলার ঘটনাকে যেভাবে ফলাও করে মিডিয়াও প্রকাশ ও প্রচার করা হয় তাতে শিশু-কিশোরদের মনে এর প্রভাবে কতোটা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে সেই ছোট্ট বিষয়টি নিয়ে আমরা ভাবি না। এসব নেতিবাচক সংবাদগুলো শুধু সংবাদ মাধ্যম নয়, প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সামাজিক মাধ্যম হয়েও শিশু-কিশোরদের হাতে চলে যায়। বড়দের কাছ থেকেও শিশু-কিশোররা এসব ঘটনা দুর্ঘটনার কথা শুনে।

বিশ্বে এ ধরনের মন্ত্রী তিনিই প্রথম

আত্মহত্যা প্রতিরোধে প্রথমবারের মতো মন্ত্রী নিয়োগ দিয়েছে ব্রিটেন সরকার। বিশ্বে এটাই প্রথম আত্মহত্যা প্রতিরোধে মন্ত্রী নিয়োগের ঘটনা।

প্রতি বছর চার হাজার ৫০০ মানুষ আত্মহত্যার পথ বেছে নেন ব্রিটেনে। বহু সংখ্যক মানুষকে আত্মহত্যার এই প্রবণতা থেকে ঠেকাতে মন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছে ব্রিটেন সরকার। প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জ্যাকি প্রাইসকে নতুন এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়েছেন।


বিশ্বের মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা করতে লন্ডনে জড়ো হয়েছেন বিশ্বের ৫০টি দেশের প্রতিনিধিরা। ঠিক এমন সময়ে দেশটির পক্ষ থেকে আত্মহত্যা প্রতিরোধে মন্ত্রী নিয়োগের ঘোষণা এলো।

মন্ত্রী নিয়োগের পাশাপাশি বিনামূল্যে মানসিক চিকিৎসা সেবা দিতে অর্থও বরাদ্দ করেছে থেরেসা মের সরকার। মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেয়া অলাভজনক এক সংগঠনকে ১৮ মিলিয়ন পাউন্ড অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে সরকার, বাংলাদেশী মুদ্রায় যা প্রায় ২০ কোটি টাকার সমান। আগামী চার বছর ওই অর্থে বিনামূল্যে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দেবে সংগঠনটি।

২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত যুক্তরাজ্যে কম বয়সীদের মধ্যে আত্মহত্যার হার বৃদ্ধি পায় ৬৭ ভাগ। নতুন ঘোষণায় থেরেসা মের সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, মানসিক স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে নতুন টিম গঠন করে প্রতিটি স্কুলে পাঠানো হবে। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং তাদের মানসিক অবস্থার উন্নয়নে পরামর্শ দেবে তারা।

প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে বলেছেন, যে বাস্তবতা নীরবে মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে রাখে আর আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়, আমরা সেই বাস্তবতার অবসান ঘটাতে চাই।


আরো সংবাদ



premium cement