১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ইসলামবিদ্বেষী বর্ণবাদের নজির এ হামলা : এরদোগান

- ছবি : সংগৃহীত

নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে ইসলামবিদ্বেষ ও বর্ণবাদ বৃদ্ধির সর্বশেষ দৃষ্টান্ত এ হামলা।

এরদোগান বলেন, মুসলমানরা বারবার গণহত্যার শিকার হচ্ছে। আর এ বিষয়টি অলসভাবে দেখছে বিশ্ব। আগে বিভিন্ন জায়গায় মুসলমানদেরকে ব্যক্তিগতভাবে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার করা হতো। কিন্তু শুক্রবারে চালানো ওই হত্যাকা-ের মাধ্যমে বিষয়টি এখন গণহত্যায় রূপ নিয়েছে। এরদোগান আরো বলেন, এখনই যদি এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হয়, তাহলে হয়তো আরো বড় বিপর্যয়ের খবর আমাদের শুনতে হবে।

সন্ত্রাসী এ হামলার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই নিহতদের ক্ষমা করে দেবেন। পাশাপাশি এ হামলার ঘটনায় মুসলিম বিশ্বের পক্ষ থেকে নিউজিল্যান্ডের হতাহত নাগরিকদের প্রতি আমি শোক জানাচ্ছি।

এরদোগান বলেন, আমরা পুরো বিশ্বকে, বিশেষ করে পশ্চিমা দেশগুলোকে এই বিপজ্জনক প্রবণতার বিরুদ্ধে সতর্ক হওয়ার এবং এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার আহ্বান জানাচ্ছি।

এ ব্যাপারে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী মওলুদ কাভুসুগলো বলেন, শুধু হামলাকারী নয়, তার পাশাপাশি কিছু রাজনীতিক ও গণমাধ্যম এর জন্য সমানভাবে দায়ী। তারা সবসময় ইসলামবিদ্বেষ বাড়িয়ে তোলে।

আরো পড়ুন : দেশীরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তায়, বাংলাদেশীদের নিরাপত্তা কোথায়?
বিদেশি কোনো ক্রীড়াদল বাংলাদেশে আসলে তাদের জন্য সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু বাংলাদেশের কোনো দল বিদেশে গেলে তাদের জন্য সে পর্যায়ের বা তার নিচের পর্যায়ের নিরাপত্তার ব্যবস্থা আদায় করে নিতে পারেন না বাংলাদেশের কর্মকর্তারা। আজ শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের মসজিদে ভয়াবহ হামলার প্রেক্ষিতে সে সত্যটাই আবার চোখের সামনে ধরা দিয়েছে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট দল নিউজিল্যান্ড গিয়েছে ৬ ফেব্রুয়ারি। কিন্তু সেখানে যাওয়ার পর থেকে টাইগারদের জন্য উল্লেখযোগ্য তেমন কোনো নিরাপত্তার ব্যবস্থা দেখা যায়নি। এমনকি শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে হামলা চালানোর প্রেক্ষিতে যখন বাংলাদেশী দল গাড়িতে পৌঁছলেন এবং সেখান থেকে নিজেদের গন্তব্যে ফিরেন তখনও তাদের পাশে নিরাপত্তাবাহিনীর কোনো সদস্যকে দেখা যায়নি।

টিভি সংবাদে দেখা যায়, হামলার পর তামিম, মিরাজ, তাইজুলরা দ্রুত হেঁটে বাসে ফিরছেন। এ সময় তাদের পাশে বা বাসের পাশে কোনো নিরাপত্তা ব্যবস্থা লক্ষ্য করা যায়নি। এ অবস্থায় তাদেরকে আজ মসজিদে জুমা না পড়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। তবে বাংলাদেশী ক্রিকেট দলের সবাই সুস্থ আছে।

পাকিস্তানে কয়েক বছর আগে হামলার প্রেক্ষিতে সেখানে সেই যে আন্তর্জাতিক খেলা বন্ধ হয়েছে, এখনো সেখানে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের কোনো খেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। এ অবস্থার পরও নিউজিল্যান্ডে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।

ক্রাইস্টচার্চে এ হামলায় নিহতের সংখ্যা ২৭-এ পৌঁছেছে বলেও অনেকে জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, দুটি মসজিদে একাধিক হামলা চালানো হয়েছে। তবে এ হামলার সাথে ঠিক কতজন জড়িত তা এখনো পরিষ্কারভাবে জানা যায়নি।

প্রত্যক্ষদর্শী এক ব্যক্তি জানান, প্রথমে মসজিদের বাইরে গুলি চালানো হয়। এরপর হামলাকারী মসজিদের ভেতরে ঢুকে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়তে শুরু করে। মেঝেতে পড়ে থাকা লাশের ওপর একের পর এক গুলি চালিয়ে যায় হামলাকারী। সে তিনবার তার গুলি রিলোড করেছে। সব দিকেই সে গুলি ছুড়েছে বলে জানান ওই প্রত্যক্ষদর্শী।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, একজন বন্দুকধারী দৌড়ে মসজিদে ঢুকছে এবং ভেতরের লোকজনের উপর এলোপাতাড়ি গুলি চালাচ্ছে। বন্দুকধারীই নিজে ভিডিওটি করে এবং অনলাইনে লাইভ প্রচার করে বলে জানা গেছে। ওই ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা গেছে যে, এটি একটি সন্ত্রাসী হামলা। কিন্তু নিউজিল্যান্ডের পুলিশ জানাচ্ছে, প্রচারিত ভিডিওটি এ হামলার না-ও হতে পারে। তাই তারা ওই ভিডিও বেশি প্রকাশ না করতে অনুরোধ করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement