১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর

- ছবি : সংগৃহীত


যাত্রা শুরু করেছে তুরস্কের ইস্তাম্বুলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবন্দর। দেশটির প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বিমানবন্দরটি কিছুদিন আগে উদ্বোধন করেন। তুর্কি প্রজাতন্ত্রের ৯৫তম বার্ষিকীতে স্থানীয় সময় বিকেল চারটা ৩০ মিনিটে এর উদ্বোধন করা হয়। এ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তুর্কি সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট, কাতারের আমির ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ১৮টি দেশের ৫০ জন উচ্চ পর্যায়ের অতিথি উপস্থিত ছিলেন।

লিম্যাক, কোলিন, সেনগিজ, মাপা ও ক্যালন -বৃহৎ পাঁচটি কোম্পানির মিলিত কনসোর্টিয়াম এই বিমানবন্দরটি নির্মাণ করে।

কামাল আতাতুর্ক বিমানবন্দরের পরিবর্তে এখন থেকে এটিই ইস্তাম্বুলের প্রধান কেন্দ্র হিসেবে বিবেচিত হবে। তুরস্কের নিজস্ব অর্থায়নে দুই হাজার ৬০০ কোটি ইউরো ব্যয়ে বিমানবন্দরটি নির্মিত হয়েছে। সাত কোটি ৬০ লাখ বর্গমিটার আয়তনের এ বিমানবন্দর দিয়ে বর্তমানে বছরে ৯ কোটি যাত্রী যাতায়াত করতে পারবে। প্রথম পর্যায়ের এই অংশের কাজ সম্পন্ন করতে ব্যয় হয়েছে ৬০০ কোটি ইউরো।

১০ সহস্রাধিক লোক এ প্রকল্পে কাজ করেছে। এতে তুরস্ক ও বিদেশের মোট ২৫০ জন স্থপতি এবং পাঁচ শতাধিক প্রকৌশলী এই নির্মাণকাজে যুক্ত ছিলেন। তুরস্কের পরিবহন ও অবকাঠামো বিষয়ক মন্ত্রী সেহিত তুরহান জানান, আপাতত দুটি রানওয়ে ও একটি টার্মিনাল চালু করা হবে, যা দিয়ে বছরে নয় কোটি যাত্রী যাতায়াত করতে পারবেন। এর সাথে একটি প্রধান এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল টাওয়ার, একটি কার্গো হাউজও চালু হবে। চালু হওয়া দুই রানওয়ের একটি চার দশমিক এক কিলোমিটার এবং অপরটি তিন দশমিক ৭৫ কিলোমিটার লম্বা। এ অংশে আপাতত ৩৪৭টি বিমান অবস্থান করতে পারবে। কামাল আতাতুর্ক থেকে প্রধান ফ্লাইটগুলো এ বিমানবন্দরে সরিয়ে আনতে ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগবে।

২০২৩ সাল নাগাদ এ বিমানবন্দরের কাজ সম্পূর্ণভাবে শেষ হবে। তখন এতে যুক্ত হবে পৃথক ছয়টি রানওয়ে। ৫০০ টি বিমান তখন এক সঙ্গে এ বিমানবন্দরে অবস্থান করতে পারবে এবং বছরে ২০ কোটি যাত্রী এ বিমানবন্দর ব্যবহার করবে। একই সাথে তখন এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় করমুক্ত শপিং কমপ্লেক্সেও পরিণত হবে, যার আয়তন হবে ৫৩ হাজার বর্গমিটার।

বিমানবন্দরটি প্রথম ফ্লাইট হিসেবে আগামীকাল একটি বিমান আঙ্কারার উদ্দেশে রওয়ানা হবে। একই দিন প্রথম আন্তর্জাতিক ফ্লাইট যাবে তুর্কি সাইপ্রাসে। এ বছরের শেষ নাগাদ বিমানবন্দরটিতে প্রতিদিন ৩৫০টি গন্তব্যের জন্য বিমান ২০০০ বার উঠানামা করবে বলে আশা করা যাচ্ছে।

সূত্র : ডেইলি সাবাহ ও টিআরটি

আরো দেখুন : তুরস্কে চালু হচ্ছে বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা
ডেইলি সাবাহ; ২৫ অক্টোবর ২০১৮, ১৭:৩২

তুরস্কে বর্তমান বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা রাশিয়ার তৈরি এস-৪০০ স্থাপনের কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। ২০১৯ সালের অক্টোবরে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চালু করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষা বিষয়কমন্ত্রী হুলুসি আকর।

বর্তমানে এস-৪০০ প্রতিরক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক কর্মী রাশিয়া প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।

পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের সাথে এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের যৌথ কার্যক্রমও চালিয়ে যাচ্ছে তুরস্ক বলে নিশ্চিত করেছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী আকর।

সেপ্টেম্বরে তুরস্ক ২ বিলিয়ন ডলার দিয়ে দুটি এস-৪০০ কেনার জন্য চুক্তি করেছে। আঙ্কারা বলছে, তারা শুধুমাত্র নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যব্স্থার জন্যই এস-৪০০ কিনতে যাচ্ছে।

রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ কেনার ফলে ন্যাটো দেশগুলোর মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে।

বর্তমানে রাশিয়ার সবচেয়ে উন্নত প্রযুক্তির বিমানবিধ্বংসী ও ক্ষেপণাস্ত্রবিধ্বংসী ব্যবস্থা এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ। এস-৪০০ বর্তমানে সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। এস-৩০০ এর উত্তরসরি ও আপগ্রেড ভার্সন এই এস-৪০০, এই সিস্টেমটা -স্টেলথ, সেমি স্টেলথ, বোমারু বিমান, জনহীন বিমান (ড্রোন), দ্রুত গতির জেট এবং ক্রুজ মিসাইল ধ্বংসে সহায়তা করবে। এ ক্ষেপণাস্ত্র চারশ' কিলোমিটার দূরের বিমান এবং ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রকে আকাশে থাকা অবস্থায় ধ্বংস করে দিতে পারে বলে দাবি করা হচ্ছে। মার্কিন নির্মিত এমআইএম-১০৪ প্যাট্রিয়ট ক্ষেপণাস্ত্র থেকে আড়াইগুণ বেশি দূরত্বে আঘাত হানতে পারে এই এস-৪০০ সিস্টেম।

ভারত রাশিয়ার কাছ থেকে সর্বাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ কিনতে যাচ্ছে। যার মাধ্যমে ভারত চীন ও পাকিস্তানের মতো পরমানু ক্ষমতা সম্পন্ন দেশগুলোর বিপক্ষে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে পারে। এদিকে, ওয়াশিংটন মস্কোর বিরুদ্ধে কাউন্টারিং আমেরিকাস অ্যাডভাসারিস থ্রু স্যাঙ্কশনস অ্যাক্ট (সিএএটিএসএ) আরোপ করেছে। যার একটি ধারায় বলা হয়েছে রাশিয়া থেকে যদি কোন দেশ উচ্চমূল্যের সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করে তবে সেই দেশের উপর অবরোধ আরোপ করা হবে। তবে সিএএটিএসএ অবরোধ ভারতের উপর আরোপ করা হবে কিনা তা নিয়ে নয়া দিল্লি ও ওয়াশিংটনের মধ্যে আলোচনা চলছে। ইতোমধ্যে এই ক্ষেপনাস্ত্র ব্যবস্থা চীন তাদের প্রতিরক্ষায় স্থাপন করেছে। বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলো এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা তাদের সামরিক বহরে যুক্ত কতে যাচ্ছে। চলুন দেখে নেয়া যাক কি আছে এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ এর আদ্যোপান্ত


১. ১৯৯০ সালে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলি বিশ্বের অন্যতম এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ তৈরি করে। ২০০৭ সালের ১ লা জুলাই রাশিয়ান আর্মড ফোর্স ইলেকট্রোস্টাল শহরের কাছে সর্বপ্রথম এস-৪০০ মিসাইল স্থাপন করে।

২. এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ কেবলমাত্র একটি ক্ষেপণাস্ত্র নয়। এটি আসলে স্বয়ংসম্পূর্ণ আকাশসীমা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

৩. এতে ক্ষেপণাস্ত্র ছাড়াও রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্রের লঞ্চিং প্যাড, ক্ষেপণাস্ত্রবাহী গাড়ি, শক্তিশালী রাডার এবং স্বয়ংক্রিয় আক্রমণে প্রতিপক্ষকে বিপর্যস্ত করার সমস্ত রকমের বন্দোবস্ত।

৪. এর রাডার এতটাই শক্তিশালী যে স্টেলথ্ ফাইটার অর্থাৎ গোপনে আক্রমণকারী যুদ্ধবিমানের হামলাকেও রুখে দিতে সক্ষম এই স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।

৫. এর ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ৪০০ কিলোমিটার। যে কোনও অত্যাধুনিক যুদ্ধবিমান, ড্রোন এবং ব্যালিস্টিক মিসাইলেরও হামলা রুখে দিতে সক্ষম।

৬. এই বিশেষ ব্যবস্থা একসঙ্গে ৩০০ টি টার্গেটে নজর রাখতে পারে।একসঙ্গে ৩৬ টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ে ৩৬টি আলাদা আলাদা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।

৭. এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ থেকে নিক্ষিপ্ত ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ৪.৮ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড এবং ১৭০০০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা।

৮. ভারত ৩৯০০০ কোটি টাকা খরচ করে এই অত্যাধুনিক এয়ারডিফেন্স সিস্টেমের ৫ টি ইউনিট নিতে চাচ্ছে।

৯. ভারতের উত্তর ও পশ্চিম সীমান্তে প্রতিপক্ষের আগ্রাসনের আশঙ্কা সবচেয়ে বেশি। সেদিকেই মোতায়েন করা হতে পারে বিশেষ এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ।

১০. এস-৪০০ কে বর্তমানে সবচেয়ে অত্যাধুনিক প্রতিরক্ষাব্যবস্থা হিসাবে চিহ্নিত করা হয়ে থাকে।


আরো সংবাদ



premium cement