১৬ এপ্রিল ২০২৪, ০৩ বৈশাখ ১৪৩১, ০৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

খাসোগি বিষয়ে এরদোগান-ট্রাম্প ফোনালাপ

তুরস্ক
খাসোগি, এরদোগান ও ট্রাম্প - ছবি: সংগৃহীত

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান হত্যার শিকার সৌদি বিখ্যাত সাংবাদিক জামাল খাসোগি বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে টেলিফোনে আলোচনা করেছেন। তুরস্কের প্রেসিডেন্টের তথ্য অফিস এক বিবৃতিতে সোমবার একথা জানিয়েছে বলে খবর দিয়েছে তুর্কি রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।

বিবৃতিতে বলা হয়, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের সব দিক পরিষ্কার হওয়া প্রয়োজন বলে একমত হয়েছেন এরদোগান ও ট্রাম্প।

খাসোগিকে সর্বশেষ দেখা যায় গত ২ অক্টোবর যখন তিনি ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে ঢুকেন।

কয়েকদিন অস্বীকার করার পর শনিবার সৌদি আরব খাসোগিকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে বলে যে, দূতাবাসের ভেতর একটি ঝগড়ার সময় তিনি মারা যান।

খাসোগির নিখোঁজ হওয়ার দিন দু’টি পৃথক বিমানে করে সৌদি কর্মকর্তাসহ ১৫ ব্যক্তি ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে আসেন বলে জানিয়েছে তুরস্কের পুলিশ সূত্র। তারা পরে তুরস্ক ত্যাগ করে।

তুরস্ক ও সৌদি আরবের যৌথ তদন্ত দল ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতের বাসভবনসহ দূতাবাসে তদন্ত পরিচালনা সম্পন্ন করেছে বৃহস্পতিবার।

প্রেসিডেন্ট এরদোগান রোববার বলেছেন যে, তিনি খাসোগি হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মঙ্গলবার সংসদে তার দলের গ্রুপ মিটিংয়ে বক্তব্য রাখবেন।

সূত্রটি আরো জানিয়েছে, এ দু’নেতার টেলিফোন আলোচনায় যাজক এনড্রো ব্রুনসন, সন্ত্রাসবিরোধী যুদ্ধ এবং সিরিয়ার মানবিজ সমস্যা সমাধানে রোডম্যাপ প্রসঙ্গ ছিল।

আরো পড়ুন :
অপ্রকাশিত এক সাক্ষাতকারে যা বলেছিলেন খাশোগি
ওয়াশিংটন পোস্ট, ২২ অক্টোবর ২০১৮
‘আমাদের নেতারা ভাবেন, তারাই সব জানেন। আর আমরা শুধু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করি।’ ওয়াশিংটন পোস্টে এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছিলেন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি।

গত গ্রীষ্মে ওয়াশিংটন পোস্টের কার্যালয়ে সংবাদপত্রটির আন্তর্জাতিক মতামতবিষয়ক সম্পাদক (গ্লোবাল ওপিনিয়ন এডিটর) কারেন আতিয়াহর সঙ্গে এক আলোচনায় অংশ নেন সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগি। তিনজনের সেই আলোচনায় আরো ছিলেন ওই বিভাগের ইরানবিষয়ক মতামত লেখক ইরানি সাংবাদিক জেসন রেজাইয়ান, যাকে ইরানের কারাগারে ৫৪৪ দিন বন্দী থাকতে হয়েছিল। মধ্যপ্রাচ্য, সৌদি আরব ও ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের ব্যাপারে বিশদ আলোচনা হয় তাদের মধ্যে।

আলোচনায় অংশ নিয়ে খাশোগি বলেন, ‘সৌদি আরব দুই কোটি জনসংখ্যার দেশ। এর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ তরুণ, ৩০ বছরের কম বয়সী তারা। মোহাম্মদ বিন সালমান সব বিষয়ই তুলে আনছেন। অর্থনীতি, ধর্ম সৌদি আরব স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুতগতির ওপর রয়েছে।’ খাশোগির এই সাক্ষাৎকারের বিষয়টি তুলে ধরে সাংবাদিক জেসন রেজাইয়ান বলেছেন, তিনি আর জামাল খাশোগি বিপরীত বিষয়ে লিখলেও তা সমান সঙ্কটপূর্ণ। জামাল সৌদি নিয়ে লিখতেন আর তিনি ইরান নিয়ে। তার ভাষায়, সৌদি আরব খাশোগির আর ইরান তার বাড়ি হলেও দেশ দুইটির বর্তমান শাসকেরা এটা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, দেশে ফেরার জন্য তাদের স্বাগত জানানো হবে না। যে বিষয়টি এই সময়ে তাকে কষ্ট দেয়, দুইজনই দেশের প্রশংসা করতেন, দেশকে ভালোবাসতেন। তারা নিজেদের সমাজের আরো ভালো চেয়েছিলেন, কিন্তু সরকারগুলোর নির্যাতন, অত্যাচার ও ভুলগুলো পাশ কাটাতে চাননি।

ওই সাক্ষাৎকারে খাশোগি আরো বলেছিলেন, ‘এমনকি কিছু মানুষ যারা আমার লেখার সঙ্গে অমত প্রকাশ করেন না, তারাও আমাকে বলবেন, ‘কিন্তু এটা বলার জন্য এখন সঠিক সময় নয়।’ আমরা গণতন্ত্র থেকে অনেক দূরে। আমেরিকা, ফিনল্যান্ড ও ডেনমার্কের গণতন্ত্রে নেতারা নত হন। এটা একজন নেতাকে সড়কে চলা একজন ক্ষুদ্র মানুষের প্রতিও দায়বদ্ধ করে। আমাদের নেতারা? না। আমাদের নেতারা নিজেদের এমন ভাবেন যে, তারাই সব জানেন এবং আমি ও জেসনের মতো মানুষ শুধু তাদের সংস্কার প্রক্রিয়ায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করি।’

খাশোগিকে নিয়ে এক টুইট পোস্টে সম্পাদক কারেন আতিয়াহ বলেছেন, ‘তারা হয়তো আমার বন্ধুকে নীরব করে দিতে পেরেছে, কিন্তু তার শব্দকে তারা হত্যা করতে পারবে না...।’


আরো সংবাদ



premium cement