মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ক্ষতি করতে পারছে না তুরস্কের
- ডেইলি সাবাহ
- ০৬ অক্টোবর ২০১৮, ১২:৪৯, আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৮, ১৩:০৪
মার্কিন খ্রিস্টান ধর্মযাজক অ্যান্ড্রু ব্রানসনকে মুক্তি দেয়া বা না দেয়া নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় তুরস্কের উপর অর্থনৈকতক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বসেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশেষ করে তুরস্কের স্টিল ও ইস্পাত শিল্পকে টার্গেট করে ওয়াশিংটন এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করলেও তা আসলে কতটা কার্যকর হতে পেরেছে?
বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুরস্কের স্টিল ও ইস্পাত শিল্প তথা তুরস্কের বাণিজ্যে কোনো প্রভাবই ফেলতে পারছে না। নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও স্টিল রফতানিতে তুরস্কের কোম্পানিগুলো চলতি বছরের নয় মাস শেষে ইতোমধ্যেই ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। দীর্ঘ ছয় বছর পর আবারো তুরস্কের স্টিল রফতানি ১১ বিলিয়ন মাকিন ডলার অতিক্রম করলো।
২০১৮ সালের মার্চ মাস থেকে চীন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের মাধ্যমে চলা বাণিজ্য যুদ্ধ এখন পর্যন্ত চলতি বছরের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। তবে এর পরে তুরস্ক ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ নতুন রূপ নিয়েছে। মাবর্কন যুক্তরাষ্ট্রে তুরস্কের স্টিল রফতানি বন্ধ হলেও ইউরোপে সেটা অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।
গত বকছরের নয় মাসের তুলনায় বর্তমান বছরের প্রথম নয় মাসে তুরস্কের স্টিল রফতানি বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত তুরস্ক ৮.১৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের স্টিল রফতানি করে। ২০১৮ সালে এরই মধ্যে এর পরিমান ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এর আগে সর্বশেষ ২০১২ সালে বছরের প্রথম নয় মাসে তুরস্কের স্টিল রফতানি ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
অন্যদিকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করায় একক বৃহৎ বাজার হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তুরস্কের স্টিল রফতানি হ্রাস পেয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্রে তুর্কি স্টিলের রফতানি কমেছে প্রায় ২৭ দশমিক এক শতাংশ।
এই সময়ে ইউরোপের দেশ ইতালিতে তুরস্কের স্টিল রফতানি প্রায় ৪৪৪.২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বৃদ্ধি পেয়েছে। বেলজিয়াম ও স্পেন, দুই দেশেই ২৪৮.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার করে বৃদ্ধি পেয়েছে। এতেই বোঝা যাচ্ছে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তুর্কি স্টিল আমদানি বন্ধ করে দিলেও ইউরোপীয়ান দেশগুলো তুরস্কের এই ঘাটতির সিংহভাগ পূরণ করে দিয়েছে।
তুরস্কের স্টিল এক্সপোর্টারস অ্যাসোসিয়েশনের (সিআইবি) বোর্ড অব ডিরেক্টরস’র চেয়ারম্যান আদনান আরসালান বলেন, তুরস্কের স্টিল শিল্পের সফলতার পিছনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে আমাদের স্টিলের মান, সঠিক ও মানসম্মত উৎপাদন, প্রতিযোগিতামূলক দাম ও নির্দিষ্ট সময়ের আগেই পণ্য প্রস্তুত করে রফতানির জন্য সরবরাহ করা।
আরো পড়ুন : এবার তুরস্কের বিরুদ্ধে বাণিজ্যযুদ্ধ ট্রাম্পের
নয়া দিগন্ত অনলাইন, ১১ আগস্ট ২০১৮
চীনের পর এবার তুরস্কের বিরুদ্ধে বাণিজ্যযুদ্ধে নামতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার হোয়াইট হাউজ ঘোষণা করেছে, তুরস্ক থেকে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে নতুন করে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ১৩ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে নতুন এই শুল্ক। এর ফলে ন্যাটো মিত্র তুরস্কের সাথে নতুন করে বিরোধী জড়িয়ে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র।
এই আইন কার্যকর হলে নতুন চ্যালেঞ্জে পড়বে তুরস্কের রজব তাইয়েব এরদোগান সরকার। এমনিতেই সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশটির অর্থনীতি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যে রয়েছে। মার্কিন ডলারের বিপরীতে তুর্কি মুদ্র লিরার মান কমছে ক্রমশ। সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বিপুল জনসমর্থন নিয়ে জিতলেও এটি তার সরকারের জন্য উদ্বেগের বিষয়।
যুক্তরাষ্ট্রের এমন ঘোষণা আসতে পারে সেটি জানাই ছিলো। হোয়াইট হাউজ শুল্ক আরোপের আগে বিষয়টি টুইটারে জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেছে, তুরস্কের সাথে আমাদের সম্পর্ক ভালো নয়। দেশটি থেকে আমদানিকৃত অ্যালুমিনিয়ামের ওপর ২০ শতাংশ ও স্টিলের ওপর ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের আইনে স্বাক্ষর করেছি।
এই টুইটের পরই গত কয়েকদিনে ডলারের বিপরীতে তুর্কি মুদ্রার মান কমেছে কয়েক দফা। সব মিলে চলতি বছরের শুরু থেকে তুর্কি লিরা ডলারের বিপরীতে ৩০ শতাংশ মান হারিয়েছে। ফলে এরদোগান আবারো তুর্কি নাগরিকদের আহ্বান জানিয়েছেন, স্বর্ণ ও ডলারের বদলে লিরা সংরক্ষণ করতে। শুক্রবার এরদোগান, বলেছেন, অর্থনৈতিক শত্রুদের বিরুদ্ধে জাতীয় যুদ্ধ শুরু হয়েছে। কৃষ্ণ সাগর পাড়ের শহর রাইজে এক বক্তৃতায় তিনি বলেন, ডলার কখনোই আমাদের অগ্রযাত্রা রুখতে পারবে না। তাই আমি আবারো বলছি, আপনাদের যাদের কাছে ডলার ও স্বর্ণ মজুদ আছে, ব্যাংকে গিয়ে সেগুলোর বিনিময়ে লিরা সংগ্রহ করুন।
এরদোগান বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এগুলো নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। তাদের যেমন ডলার আছে, আমাদের আছে আল্লাহ ও আমাদের জনগন। আমরা প্রতিদিন উন্নতি করছি। গতকালকের চেয়ে আজ ভালো আছি, আগামীকাল আরো ভালো থাকবো।
যুক্তরাষ্ট্র যেসব দেশ থেকে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানি করে, তুরস্ক তার মধ্যে উপরের দিকে। ২০১৭ সালে দেশটি থেকে একশো কোটি ডলারের বেশি স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানি করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক শুল্ক বৃদ্ধির ঘটনাকে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নীতি বহির্ভূত বলে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে তুরস্ক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা