২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

বিপজ্জনক চ্যালেঞ্জর মুখে মুসলিম বিশ্ব : এরদোগান

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান। ছবি - সংগৃহীত

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, মুসলিম বিশ্ব বিপজ্জনক চ্যালেঞ্জ মুখোমুখী এসে দাড়িয়েছে। নিয়ে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন। রোববার সৌদি আরবের জাতীয় দিবস উপলক্ষে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের কাছে পাঠানো এক বার্তায় এরদোগান এ কথা বলেন। তিনি মুসলিম বিশ্বের স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনার প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

তুর্কি প্রেসিডেন্ট বলেন, ইসলামি বিশ্ব এখন গুরুতর চ্যালেঞ্জের মুখে রয়েছে। অন্য যেকোনও সময়ের চেয়ে এখন শান্তি ও স্থিতিশীলতা বেশি প্রয়োজন। বন্ধুত্বপ্রতীম দেশগুলোর সাধারণ লক্ষ্যে সংহতি জানানো প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

আরব অঞ্চলে একাধিক সংঘাত চলমান রয়েছে। বিশেষ করে সিরিয়া, ইয়েমেন ও লিবিয়ায় চলমান সংঘাতে মধ্যপ্রাচ্যের অনেক দেশ জড়িয়ে পড়েছে। ইয়েমেনে সৌদি আরবের নেতৃত্বে আরব জোট ইরান সমর্থিত হাউছি মিলিশিয়াদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে। অভিযানে বেসামরিক লোকজনের প্রাণহানির ঘটনায় আন্তর্জাতিক সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনের সমালোচনা মুখে পড়েছে সৌদি আরব। সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে সরাসরি সামরিক অভিযানে অংশ নিচ্ছে তুরস্ক। দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে সমর্থন ও সহযোগিতা দিচ্ছে তারা।

 

ওদের আছে ডলার, আমাদের আছেন আল্লাহ : এরদোগান
বিবিসি ও আনাদোলু, ১২ আগস্ট ২০১৮

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান যুক্তরাষ্ট্রকে উদ্দেশ করে বলেছেন, ‘ওদের যদি ডলার থাকে, তাহলে আমাদের আছে আমাদের জনগণ, আমাদের অধিকার এবং আমাদের আছেন আল্লাহ।’ শুক্রবার আঙ্কারায় এক ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।

এরদোগান বলেন, আমাদের বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এগুলো নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। তাদের যেমন ডলার আছে, আমাদের আছে আল্লাহ ও আমাদের জনগণ। আমরা প্রতিদিন উন্নতি করছি। গতকালের চেয়ে আজ ভালো আছি, আগামীকাল আরো ভালো থাকব। এরদোগান আরো বলেন, অর্থনৈতিক শত্রুদের বিরুদ্ধে জাতীয় যুদ্ধ শুরু হয়েছে। ডলার কখনোই আমাদের অগ্রযাত্রা রুখতে পারবে না। তাই আমি আবারো বলছি, আপনাদের যাদের কাছে ডলার ও স্বর্ণ মজুদ আছে, ব্যাংকে গিয়ে সেগুলোর বিনিময়ে লিরা সংগ্রহ করুন। তাছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে তিনি বলেছেন, ওয়াশিংটন যদি ‘একলা চলার ও সম্মান না দেখানোর’ পথ ত্যাগ না করে তাহলে তার দেশ নতুন বন্ধু ও মিত্র খুঁজে নেবে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শুক্রবার তুরস্কের ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানির ওপর দ্বিগুণ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেয়ার পর নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত এক লেখায় এ মন্তব্য করেন এরদোগান। তিনি লেখেন, যুক্তরাষ্ট্রকে তুরস্কের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মান দেখাতে হবে। 

এরদোগান লিখেছেন, ‘এমন একটি সময়ে যখন শত্রু দেশগুলো ওঁৎপেতে আছে সেই মুহূর্তে তুরস্কের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র এক তরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যারা দশকের পর দশক ধরে আমাদের মিত্র। এই পদক্ষেপে শুধু যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ ও নিরাপত্তাই বিঘ্নিত হবে।’ এরদোগান আরো বলেন, সন্ত্রাসের অভিযোগে তুরস্কে বিচারাধীন মার্কিন ধর্মযাজক অ্যান্ডু ব্রানসনের ব্যাপারে বিচারের প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার অপেক্ষা না করেই ওয়াশিংটন পাল্টা ব্যবস্থা নিয়ে উত্তেজনা বৃদ্ধি করেছে।

শুক্রবার হোয়াইট হাউজ ঘোষণা করেছে, তুরস্ক থেকে স্টিল ও অ্যালুমিনিয়াম আমদানিতে নতুন করে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র। আগামী ১৩ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে নতুন এই শুল্ক। এর ফলে ন্যাটো মিত্র তুরস্কের সাথে নতুন করে বিরোধী জড়িয়ে পড়বে যুক্তরাষ্ট্র। শুল্ক বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্তের পর থেকে ডলারের বিপরীতে তুর্কি মুদ্রা লিরার ১৮ শতাংশ দরপতন হয়েছে। ট্রাম্পের এ ঘোষণার পরপরই মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা শুরু হয়, ইউরোর দর ১৩ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন হয়ে পড়ে, ডলারের দাম বাড়ে এক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। শুল্ক বাড়ানোর পদক্ষেপকে ‘বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়মবিরোধী’ অভিহিত করে ওয়াশিংটনের সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে আঙ্কারা। যুক্তরাষ্ট্রকে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার অ্যাখ্যা দিয়ে তুরস্কের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোও আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলবে বলে প্রত্যাশা আমাদের’। 

ট্রাম্প শুল্ক বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করে টুইট করার কিছু পরই এরদোগান ফোনে কথা বলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে। লিরার দর পতনের প্রেক্ষাপটে তুরস্কের ব্যাংকগুলোর নিয়ন্ত্রকরা এ নিয়ে একটি জরুরি বৈঠক করতে যাচ্ছেন এমন এক খবর বের হলেও পরে নিয়ন্ত্রকেরা তা অস্বীকার করেন। এরদোগান ওয়াশিংটনের ওপর ক্ষুব্ধ। কারণ সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত কুর্দি যোদ্ধাদের অস্ত্র দিচ্ছে আমেরিকানরা, তা ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত ফতহুল্লাহ গুলেনকেও তারা বিচারের জন্য তুরস্কের হাতে তুলে দিচ্ছে না। এ ছাড়া আংকারা যে রাশিয়ার কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধী ব্যবস্থা কেনার পরিকল্পনা করছে সেটাও একটা বড় কারণ। অন্য দিকে আঙ্কারার অভিযোগ, ফতহুল্লাহ গুলেন পেনসিলভানিয়ায় তার বাড়িতে বসে এরদোগানের বিরুদ্ধে এক ব্যর্থ অভ্যুত্থানের কলকাঠি নেড়েছিলেন।


ব্রানসনের বিরুদ্ধে তুরস্কের অভিযোগ এই যে, তার সাথে বিচ্ছিন্নতাবাদী কুর্দি ওয়ার্কার্স পার্টি ও ফতহুল্লা গুলেনের সম্পর্ক আছে। আমেরিকার শক্তিশালী ইভানজেলিকাল খ্রিষ্টান লবি এ নিয়ে হইচই শুরু করার পর এর জবাবে তুর্কি স্বরাষ্ট্র ও বিচারমন্ত্রীর ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ওয়াশিংটন। তুরস্কের মন্ত্রীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার কিছু দিন পরেই ট্রাম্প এই শুল্ক বৃদ্ধির ঘোষণা দিলেন। এ ছাড়া আরো কারণ আছে। তুরস্ক তাদের প্রায় অর্ধেক তেল আমদানি করে ইরান থেকে। সে কারণে ইরানের ওপর পুনঃআরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা তুরস্কের অর্থনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে বলে মনে করা হয়। তুরস্কের মাটিতে আছে ন্যাটো জোটের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইনজারলিক সামরিক বিমান ঘাঁটি। ইসলামিক স্টেটের বিরুদ্ধে আক্রমণের জন্য ন্যাটো এ ঘাঁটিটি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করেছে।

এ ঘাঁটিটি বন্ধ করে দেয়ার জন্য তুরস্কে অভ্যন্তরীণ চাপ আছে। তুরস্কের কিছু সরকার সমর্থক আইনজীবীর অভিযোগ ইনজারলিকে মোতায়েন কিছু আমেরিকান সেনাকর্মকর্তা এরদোগান-বিরোধী অভ্যুত্থানের পেছনে ভূমিকা রেখেছিলেন এবং তাদের বিরুদ্ধে আদালতের কাছে গ্রেফতারি পরোয়ানাও চেয়েছিলেন তারা। গত সপ্তাহে এক অভিযোগে এই আইনজীবীরা বিচারকের প্রতি আবেদন জানান যেন ইনজারলিক থেকে সব বিমান উড্ডয়ন বন্ধ করে দেয়া হয়।


আরো সংবাদ



premium cement
এলডিসি থেকে উত্তরণের পর সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে কার্যকর পদক্ষেপ নিন : প্রধানমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি আহসান উল্লাহ ‘ট্রি অব পিস’ পুরস্কার বিষয়ে ইউনূস সেন্টারের বিবৃতি আনোয়ারায় বর্তমান স্বামীর হাতে সাবেক স্বামী খুন, গ্রেফতার ৩ ফতুল্লা প্রেস ক্লাবের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত বদরের শিক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে : সেলিম উদ্দিন ইসলামের বিজয়ই বদরের মূল চেতনা : ছাত্রশিবির পরিবেশ দূষণে বাংলাদেশে বছরে ২ লাখ ৭২ হাজার মানুষের মৃত্যু : বিশ্বব্যাংক নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ

সকল