২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

ফার্স্টলেডিদেরকে রোহিঙ্গাদের করুণ পরিণতির কথা জানালেন আমেনা এরদোগান

ফার্স্টলেডিদেরকে রোহিঙ্গাদের করুণ পরিণতির কথা জানালেন আমেনা এরদোগান । ছবি - সংগৃহীত

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ের এরদোগানের স্ত্রী আমিনা এরদোগান চলতি সপ্তাহে বেলজিয়ামের ব্রাসেলসে ন্যাটো সম্মেলনে ফার্স্টলেডিদের বৈঠকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেছেন। খবর ডেইলি সাবাহর।

গত ১১ ও ১২ জুলাই অনুষ্ঠিত ন্যাটো সম্মেলনে আমেনা এরদোগান তার স্বামীর সাথে সম্মেলনে যান। এ সময়ে তিনি মধ্য আফ্রিকার রয়েল জাদুঘর পরিদর্শন করেন। পৃথিবীর অন্যান্য দেশের ফার্স্টলেডিরাও তখন উপস্থিত ছিলেন।

অন্যান্য ফার্স্টলেডিদের সঙ্গে অকপটে কথা বলার সুযোগে তিনি ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের সরাসরি দেখার অভিজ্ঞতার বর্ণনা দেন। এসময় রোহিঙ্গাদের দুঃখ দুর্দশার কথা বলে তাদের মনযোগ আকর্ষণ করেন।

তিনি বলেন, তুরস্ক সব সময় নিপীড়িত মানুষের হয়ে কাজ করে। সেটি হোক সরকারি সংস্থা কিংবা বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে। তিনি জলবায়ু সমস্যা নিয়েও কথা বলেন।

বর্জ্য পুনর্ব্যবহার বাড়ানো ও আবর্জনা কমিয়ে আনার চেষ্টায় নিজেদের মতামত ব্যক্ত করেন তিনি। আমিনা বলেন, আবর্জনা প্রকল্প শূন্যে নামিয়ে আনতে তুরস্ক সফল হয়েছে।

আবর্জনা হ্রাস নিয়ে মতবিনিময়ের সময় ফরাসি ফার্স্টলেডি ব্রিজিট ম্যাক্রনও অকপটে কথা বলেন। তারা এর ঝুঁকি ও নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন।

গত ২৪ জুনের নির্বাচনে আগামী পাঁচ বছরের জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর রিসেপ তাইয়ের এরদোগান এই প্রথম তিনি কোনো আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।

 

আরো দেখুন : পরাক্রমশালী হবে তুরস্ক

তুরস্ককে নতুন করে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছেন প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান। দেশটির নতুন শাসনব্যবস্থার প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর দেয়া ভাষণে এ অঙ্গীকার করেন তিনি। শপথ নেয়ার পর তিনি তার নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেছেন। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানী আঙ্কারার গ্র্যান্ড ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে পার্লামেন্টের ভারপ্রাপ্ত স্পিকার দুরমাস ইলমিজের সভাপতিত্বে এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। 

শপথ গ্রহণের পর উদ্বোধনী ভাষণে এরদোগান বলেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন প্রেসিডেন্ট ব্যবস্থা কার্যকরের মাধ্যমে তুরস্ক তার অগ্রযাত্রা নতুন করে শুরু করেছে।’ তিনি ‘শক্তিশালী সরকার ও শক্তিশালী তুরস্ক’ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেন। আঙ্কারায় প্রেসিডেন্ট কমপ্লেক্সে দেশী-বিদেশী বিশিষ্টজনদের উপস্থিতিতে দেয়া বক্তৃতায় এরদোগান বলেন, ‘আমরা একটি নতুন শাসনব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হচ্ছি; যেটি আমাদের ১৫০ বছর ধরে গণতন্ত্র অনুসন্ধান থেকে অনেক দূরে এবং আমাদের ৯৫ বছর বয়সী গণপ্রজাতন্ত্রের মাধ্যমে আমরা এই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি।’ তিনি বলেন, ‘সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে আমরা আমাদের দেশকে নতুন করে গড়ে তুলতে চেষ্টা করব। আমাদের যারা ভোট দিয়েছেন, আমি কেবল তাদের প্রেসিডেন্ট হবো না, তুরস্কের ৮ কোটি ১০ লাখ নাগরিকের প্রেসিডেন্ট হতে চাই।’

তিনি বলেন, নতুন এই ব্যবস্থা অতীতের প্রান্তিকীকরণ, নিপীড়ন এবং মানুষের বিচ্ছিন্নতার অবসান ঘটাবে। তিনি আরো বলেন, নুতন ব্যবস্থায় গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার, স্বাধীনতা, অর্থনীতি এবং বৃহৎ বিনিয়োগসহ সব ক্ষেত্রে এই অঞ্চলে তুরস্ক আরো এগিয়ে যাবে। জনগণকে দেয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তুরস্ককে শক্তিশালী করতে কাজ চালিয়ে যাবার অঙ্গীকার করেন এরদোগান। এরদোগানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশ বিদেশের প্রায় ১০ হাজার বিশিষ্ট ব্যক্তি ও অতিথিরা অংশগ্রহণ করেন। 

এরদোগান বলেন, অর্থনৈতিক উন্নতির জন্য, ২০১৬ সালের ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এবং দক্ষিণাঞ্চলীয় সীমান্তে সিরিয়া ও ইরাকের সঙ্গে যুদ্ধ থেকে তুরস্ককে রক্ষার জন্য নির্বাহী ক্ষমতার দিক দিয়ে প্রেসিডেন্টের অনেক বেশি ক্ষমতাশালী হওয়া গুরুত্বপূর্ণ। ভাষণে তিনি ‘শক্তিশালী সরকার ও শক্তিশালী তুরস্ক’ গড়ার প্রতিশ্রুুতি দেন।

বিদেশী নেতাদের মধ্যে কাতারের আমিরসহ ২১টি দেশের প্রেসিডেন্টরা উপস্থিত ছিলেন। দেশগুলো হচ্ছে- বুলগেরিয়া, জর্জিয়া, মেসিডোনিয়া, মলদোভা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, সার্বিয়া, কসোভো, পাকিস্তান, কিরগিজস্তান, সুদান, গিনি, জাম্বিয়া, গিনি বিসাউ, নিরক্ষীয় গিনি, সোমালিয়া, মৌরিতানিয়া, গ্যাবন, শাদ, জিবুতি, ভেনেজুয়েলা, তুর্কি প্রজাতন্ত্রের উত্তর সাইপ্রাস। এ ছাড়া, ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা এতে উপস্থিত ছিলেন। নতুন নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা করেছেন রজব তাইয়েব এরদোগান। প্রথম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেয়ার পর ১৬ সদস্যের নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন তিনি।

এরদোগান বলেন, নতুন এই প্রশাসনব্যবস্থা নির্বাহী শাখাকে আরো দক্ষ করে তুলবে। তিনি তার ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ফুয়াত ওকাতায়’র নাম ঘোষণা করেন। পূর্ববর্তী সরকারে তিনি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দুর্যোগ ও জরুরি ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মওলুদ কাভুসোগলু ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সোলায়মান সোয়োলুকে তাদের আগের পদেই বহাল রাখা হয়েছে।

নতুন মন্ত্রিসভার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন এই যে, সাবেক জ্বালানি মন্ত্রী ও এদোগানের জামাতা বেরাত আলবায়েরাক অর্থ মন্ত্রণালয়ের এবং সেনাপ্রধান হুলুসি আকার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ লাভ করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement