২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি উপেক্ষা করেই এস-৪০০ ক্রয় করবে তুরস্ক

এস-৪০০ ট্রায়াম্ফ
এস-৪০০ - সংগৃহীত

রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্রয় সংক্রান্ত চুক্তি থেকে তুরস্ক সরে আসবে না বলে জানিয়েছেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ইবরাহিম কালিন। যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ককে এস-৪০০ মিসাইল না কিনতে হুমকি দিয়েছে। খবর ডেইলি সাবাহর।

ইবরাহিম বলেন, তুরস্ক একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে তার নিজের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা রয়েছে। তুরস্ক নিজেই তাদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে সিদ্ধান্ত ‍নিবে। কার কাছ থেকে কি ধরণের প্রতিরক্ষা গ্রহণ করবে তার সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার শুধুই তুরস্কের নিজস্ব ব্যাপার।

প্রেসিডেন্টেন মুখপাত্র বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তুর্কি সরকারের সুসম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু তুরস্ক কারোর সাথে এমন কোন চুক্তি করেনি যাতে করে তুরস্কের সার্বভৌমত্বের উপর বাধা আসবে।

মুখপাত্র আরো বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি নিয়ে দুদেশের সম্পর্কের মধ্যে প্রভাব পড়বেনা। এমন কোন ঘটনা ঘটলে তুরস্কও যথাযথ পদক্ষেপ নিবে বলে জানান তিনি।

এখান থেকে ফিরে যাওয়ার কোন উপায় নেই, ইতোমধ্যে চুক্তিস্বাক্ষর সম্পন্ন হয়ে গেছে। এস-৪০০ মিসাইল আগামী বছর আসবে। প্রযুক্তি আমদানিও অন্যতম একটি বিষয়। আমরা শুধু প্রযুক্তি অর্জন বা ব্যবহার নয় আমরা এগুলো উৎপাদনও করতে চাই বলেছেন প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র।

ইবরাহিম আরো বলেন, তুরস্ক প্যাট্রিয়ট মিসাইল বা অন্যান্য পশ্চিমা প্রযুক্তির ব্যবস্থা নিতে পারে যদি তারা প্রয়োজনীয় পরিবেশ তৈরি করে।

এই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে আঙ্কারাকে হুমকি দেয়া হয়েছে যে, যদি তুরস্ক রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ মিসাইল ক্রয়ের চুক্তি থেকে ফিরে না আসে তাহলে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ককে লকহেড মার্টিন এফ-৩৫ ফাইটার জেট চুক্তি থেকে সরে আসবে।

গত ডিসেম্বরে তুরস্ক রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্রয়ের জন্য সরকারিভাবে ২.৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তিস্বাক্ষর করে। এস-৪০০ রাশিয়ার তৈরি বতর্মানে সর্বাধুনিক অন্যতম প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। ন্যাটো দেশগুলোর মধ্যে সর্বপ্রথম তুরস্কই এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পেতে যাচ্ছে।

এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে আঙ্কারা দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে যাচ্ছে।তুরস্কের পাশের দুই সীমান্তবর্তী দেশ ইরাক ও সিরিয়ার যুদ্ধাবস্থা এবং পিকেকে ও দায়েশের সাথে বিভিন্ন সংঘর্ষ থেকে দেশকে সুরক্ষার জন্য তুরস্ক সর্বাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে।

এছাড়াও তুরস্ক তাদের নিজস্ব প্রযুক্তিতে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নির্মাণ করতে চায়। এজন্য তারা বিভিন্ন দেশের সাথে নির্মাণ প্রযুক্তির কৌশল বিনিময় করতে চায়। এস-৪০০ ব্যবস্থাটির সম্পর্কে ২০০৭ সালে সর্বপ্রথম জানা যায়। এটা রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। রাশিয়া এখন পর্যন্ত শুধু চীন এবং ভারতের কাছে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বিক্রি করেছে।

সবকিছু ঠিক থাকলে তুরস্ক ২০২০ সালে এস-৪০০ পেতে পরে।

 

আরো দেখুন : রাশিয়ার এস-৪০০ কিনলেই এফ-৩৫ দেয়া বন্ধ, তুরস্ককে যুক্তরাষ্ট্রের হুঁশিয়ারি

মার্কিন সরকার তুরস্কের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছে, দেশটি রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা কিনলে আঙ্কারার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পাশাপাশি তুরস্ককে এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান দেয়া বন্ধ করে দেবে ওয়াশিংটন।

মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এক ঘোষণায় এ হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে। এতে বলা হয়েছে, তুরস্কের বিরুদ্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গত গ্রীষ্মে সই করা একটি আইন প্রয়োগ করা হবে। ওই আইনে কোনো দেশ রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বাণিজ্য করলে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা বলা হয়েছে।

আমেরিকার ইউরোপ বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়েস মিশেল মার্কিন সিনেটের পররাষ্ট্র সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির শুনানিতে বলেছেন, “আমরা সাফ জানিয়ে দিয়েছি, তুরস্ক যদি রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্রয় করে তাহলে তাকে পরিণতি ভোগ করতে হবে। আমরা আঙ্কারার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করব। সেইসঙ্গে তুরস্কের কাছে এফ-৩৫ জঙ্গিবিমান হস্তান্তরের কাজও বন্ধ করে দেয়া হবে।”

রাশিয়ার এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দিয়ে ৪০২ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বের ক্ষেপণাস্ত্র, জঙ্গিবিমান ও ড্রোন শনাক্ত করে তা ভূপাতিত করা সম্ভব। এ পর্যন্ত রাশিয়ার কাছ থেকে চীন ও ভারত এই ব্যবস্থা ক্রয় করেছে। তুরস্ক গত বছর এই ব্যবস্থা ক্রয়ের জন্য রাশিয়ার সঙ্গে চুক্তি সই করেছে এবং ২০১৯ সালের শেষ নাগাদ এস-৪০০ ব্যবস্থার প্রথম চালান আঙ্কারার কাছে হস্তান্তর করা হবে বলে কথা রয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement