১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যামু না

-

ঝাক্কাসদা বাড়ি থেকে বেরুলেন। তাকে ধানমন্ডি যেতে হবে যত জলদি পারা যায়! দাদার মোহাম্মদপুরের বাসার সামনে থেকে ধানমন্ডি যাওয়ার বাস লেগুনা নেই। রিকশাই ভরসা। তাই বাড়ির ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি অপেক্ষা করছিলেন রিকশার জন্য। কয়েক মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর একটা খালি রিকশা পাওয়া গেল। ঝাক্কাসদা তার চালককে ডেকে বললেন, চাচা ধানমন্ডি যাবেন?
Ñনা বাজান? দেহেন না মাথার উপর মেলা গরম। ওহন একটু জিরান লাগব।
ঝাক্কাসদা আর কিছু বললেন না। সেই রিকশাটা চলে গেল দাদার সামনে দিয়ে। আবারো অপেক্ষা। পরবর্তী খালি রিকশা পাওয়া গেল ১০ মিনিট পর। এতক্ষণ রোদে দাঁড়িয়ে থেকে দাদা কাহিল। গলগল করে ঘামছিলেন। কপালের ঘাম মুছে রিকশাওয়ালাকে বললেন, এই মামা যাবা ধানমন্ডি?
Ñহয়, যামু।
Ñভাড়া কত?
Ñ১০০ টাকা।
Ñমোহাম্মদপুর থেকে ধানমন্ডির ভাড়া তুমি ৫০ টাকা চাইতে পারো। ১০০ টাকা চাও কোন আক্কেলে?
Ñআপনের রিকশায় যাওন লাগব না। এমনে কিপটামি করলে রাস্তায় হাঁইটা যাওয়া-আসা করন লাগব।
ঝাক্কাসদার মুখের ওপর এ কথা বলে রিকশাওয়ালা চলে গেল। ঝাক্কাসদার উত্তরের অপেক্ষা করল না। দাদা হাঁ করে দাঁড়িয়ে রইলেন। আর মনে মনে বললেন, হোয়াট দ্য চটপটি! এইটা কী হইল।
ঠিক তখনই আরেকটি খালি রিকশা এসে ঝাক্কাসদার সামনে থামল।
Ñবস যাইবেন নি?
Ñহ্যাঁ মামা। ধানমন্ডি যাবা?
Ñচানমন্ডি হেইয়া আবার কই?
Ñআরে চানমন্ডি না ধানমন্ডি।
Ñওই তো ছানমন্ডি। আপনে ওডেন। ঢাকায় নতুন আইছি তো, রাস্তাঘাট চিনি না। চেনায় লইয়া যাইয়েন।
যেই লোক ধানমন্ডিরে চানমন্ডি ছানমন্ডি বানায় দেয়। তার রিকশায় উঠতে মন সায় দিলো না। আবার পূর্ববর্তী রিকশাওয়ালার কটুক্তি। সব মিলিয়ে দাদার মাথা ছিল আগ্নেয়গিরির লাভার মতো গরম। তাই দাদা জবাব দিলেন, যখন চিনই না। আর চেনোনোর দরকারও নেই।
যেই গ্রামতে আইছো, সেই গ্রামেই ফিরা যাও।
এই বলে ঝাক্কাসদা গেটের ভিতরে ঢুকে গেলেন। তিনি আজ আর রিকশাতেই উঠবেন না। রিকশাওয়ালা দাদার এমন ব্যবহারে হতচকিত। দাদা চলে যাওয়ার পর সে বাতাসে বলল, হালার দেশটায় পাগল ছাগলে ভইরা গেল।

 


আরো সংবাদ



premium cement