২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ঠাণ্ডা থাকার গরম থেরাপি

-

বর্তমানে সবার মুখে মুখে যে কথাটা সব থেকে বেশিবার উচ্চরণ হয়, এইটা যে গরম তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আপনি আমি সবাই কাবু এই গরম নামের গ্রীষ্ম ঋতুর কাছে।
আপনিও কি আমার মতো করে গরম নামক যন্ত্রণার হাত থেকে বাঁচার উপায় খুঁজছেন? তবে আপনার জন্য আমার আজকের এই থেরাপি! পড়ে ভালো লাগলে আপনিও একটু চেষ্টা করে দেখতে পারেন। সেদিন দুপুর বেলা প্রচণ্ড গরমে আমি হাসফাস করছি। পুকুর পাড়ে বসে আছি, হঠাৎ করে কানে এলো হাঁড়ি পাতিল ভাঙার শব্দ। শব্দটা যে মফিজ ভাইয়ের রুম থেকে আসছে এটা আমি একদম শিওর।
যাই হোক, আমি দৌড়ে গেলাম মফিজ ভাইয়ের বাসায়। রুমের ভেতরে ঢুকে আমি তো অবাক! বিষয়টা কিছুই বুঝতেছি না! এ কী এলাহি কাণ্ডরে বাবা! মফিজ ভাইয়ের বউ, মফিজ ভাইকে উদ্দেশ করে সমানে গালি দিচ্ছে। রুমের হাঁড়ি পাতিল থেকে শুরু করে আলমারি ভর্তি সব আসবাবপত্র ভেঙে তছনছ করছে। মফিজ ভাইয়ের বউ মনের সুখে আসবাবপত্র ভাঙছে আর রুমের এক কোনায় ঢিল ছুড়ছে। দেখে মনে হচ্ছে গায়ের সব শক্তি দিয়ে বক্সিং খেলছে! আমি কিছুক্ষণ এমন দৃশ্য দেখার পরে বুকে সাহস এনে বললাম, এই যে ভাবী! কী এমন হয়েছে যে আসবাবপত্রগুলো তছনছ করে ফেলছেন? আমার কথা শুনে ভাবী বললেন, আর বলিস না। আগে আমার মনের গরমটা মিটাইতে দে।
আমি মনে মনে ভাবলাম অতিরিক্ত গরমে মনে হয় ভাবীর মাথায় সমস্যা হয়েছে। তাই আবারো বললাম, আরে ভাবী সমস্যা কোথায়, একটু বলবেন তো?
এবার ভাবী আমার দিকে তাকিয়ে চোখ বড় বড় করে বললেন, শোন তাহলে। কালকে বিকেল বেলা তোমার ভাইয়ারে বলছি বাজারে গিয়ে বড় সাইজের একটা মাছ কিনে আনতে। অনেক দিন পরে আমার ছোট বেলার বান্ধবী আজ আমার বাড়ি বেড়াতে আসবে। আমি আনতে বলছি বড় সাইজের মাছ। আর তোমার মফিজ ভাই বাজার থেকে কিনে আনছে বড় সাইজের একটা বাঁশ! বাঁশ কিনে এনে আমাকে মধুর সুরে বউ গো ও বউ বলে ডাকছে। আমি রুম থেকে বের হতে গিয়ে ওই বাঁশের সাথে মাথায় গুঁতা খেলাম। অল্পের জন্য চোখটা হারালাম না।
ভাবীর কথা শুনে আমি তো একদম বরফের মতো ঠাণ্ডা হয়ে গেলাম! বললাম, মফিজ ভাই কই ভাবী?
ভাবী বলল, সে আর কই থাকবে! ওই যে ঘরের কোনায়। যে আসবাবপত্রগুলো ঢিল ছুড়ছি ওই জাগায় আছে। ওইগুলোর নিচে চাপা পড়ছে।
ভাবীর কথা শুনে তাড়াতাড়ি করে ভাঙা হাঁড়ি পাতিল সরিয়ে যখন মফিজ ভাইকে বের করে আনলাম তখন দেখি এই আগুন ঢালা গরমের মাঝেও শীতে ঠক ঠক করে কাঁপার মতো কাঁপছেন মফিজ ভাই। কথা বলতে পারছেন না।
তার এত শীত লাগার কারণ অবশ্যই স্রোতারা বুঝতে পারছেন? আর যদি বুঝে থাকেন, তবে এই মুহূর্তে বাড়ি গিয়ে আপনিও কোনো একটা কাজ ভুল করে বসেন।
আমি গ্রান্টি দিয়ে বলতেছি, এই আগুন ঢালা গরমেও আপনার গায়ে শীতের কাঁপুনি আসবে! ভাবছেন আমি ভুল বলছি! যদি আপনার বাড়িত বউ থাকে তবে বাসায় গিয়ে একবার ট্রাই করে দেখুন। অবশ্যই আপনার বাসার ঠিকানা আমাকে জানাবেন। কারণ আমিও এই গরমে একটু ঠাণ্ডা থাকতে চাই।


আরো সংবাদ



premium cement