১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বানিয়াচংয়ে প্রতিবন্ধীর ভাতা ছিনিয়ে নিলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্য

ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধীর মকসিনা আক্তার - ছবি : নয়া দিগন্ত

হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে এক প্রতিবন্ধীর টাকা ছিনিয়ে নিলেন সমাজসেবা কর্মকর্তা ও ইউপি সদস্য। ঘটনাটি ঘটেছে বানিয়াচং উপজেলার বড়বাজারস্থ সোনালী ব্যাংক এলাকায় মঙ্গলবার বিকালে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধীর মকসিনা আক্তার বুধবার বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মামুন খন্দকারের কাছে বিষয়টি জানালে তিনি তাৎক্ষণিক উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সাইফুল ইসলামকে ডেকে এনে বিষয়টি দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করে প্রতিবন্ধীর ভাতা ফিরিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার বিকালে বানিয়াচং সোনালী ব্যাংক বড়বাজার শাখা থেকে ২৪ হাজার টাকা প্রতিবন্ধী ভাতার টাকা তুলেন সাগরদীঘি পাড় এলাকার আ: সাত্তারের প্রতিবন্ধী মেয়ে মকসিনা আক্তার। ব্যাংক থেকে ভাতার টাকা উত্তোলন করে ব্যাংকের নিচে আসামাত্র সমাজসেবা অফিসের ইউনিয়ন সমাজকর্মী রেজাউল হক রতন ও ৩নং ইউনিয়নের মেম্বার সুমন আখনজী ওই প্রতিবন্ধীর কাছ থেকে পুরো ২৪ হাজার টাকা ও ভাতার বই ছিনিয়ে নেয়। কিছুক্ষণ পরে পুনরায় আবার ১১ হাজার টাকা প্রতিবন্ধী মকসিনার মায়ের কাছে ফেরত দিয়ে অবশিষ্ট ১৩ হাজার টাকা ও ভাতার বই তাদের হাতে রেখে দেয়।

এ ব্যাপারে প্রতিবন্ধী মকসিনার মা নয়া দিগন্তকে বলেন, আমি গত মঙ্গলবার সারাদিন আমার প্রতিবন্ধী মেয়েকে নিয়ে কষ্ট করে ভাতার টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নিয়ে আসার পর সমাজসেবা অফিসের রতন ও মেম্বার সুমন আখনজী জোরপূর্বক আমার মেয়ের কাছ থেকে টাকা ও প্রতিবন্ধী ভাতার বইটি ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

তিনি কান্নাজড়িত কন্ঠে ইউএনও’র কাছে তার প্রতিবন্ধী মেয়ের ভাতার টাকা ও বই ফেরত দেয়ার আকুতি জানান।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মামুন খন্দকারের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, প্রতিবন্ধী মেয়েটি তার বাবাকে সাথে নিয়ে আমার কাছে এসে অভিযোগ দিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সমাজসেবা অফিসের রতন ও ইউপি মেম্বার সুমন আখনজীকে আমার অফিসে তলব করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ বিষয়ে বানিয়াচং উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মো: সাইফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ইউএনও মহোদয় বিষয়টি দেখার জন্য আমাকে দায়িত্ব দিয়েছেন, ইউনিয়ন সমাজকর্মী রেজাউল হক রতন ইতিমধ্যে নবীগঞ্জ উপজেলায় বদলী হয়েছেন, তিনি আমার অফিসের কর্মী নন। তার দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়ার জন্য আমার অফিসে এসেছিলেন। ভুক্তভোগী প্রতিবন্ধী মকসিনা আক্তার এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগও আমার কাছে দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, সম্প্রতি জিটুপি পদ্ধতিতে ভাতা ব্যবস্থা চালু হওয়ার পর বানিয়াচং উপজেলায় ভাতাভোগী ১০ ভাগ লোকের কোনো অস্তিত্বই খোঁজে পায়নি বানিয়াচং সমাজসেবা অফিস। কে বা কারা এই ভাতাগুলো নিয়েছে শিগগিরই ব্যাংকের মাধ্যমে তা খোঁজে বের করার উদ্যোগ নিয়েছে বানিয়াচং উপজেলা প্রশাসন।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য সুমন আখনজীর সাথে আলাপকালে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি এর সাথে জড়িত নই।


আরো সংবাদ



premium cement