২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ঘুম থেকে উঠে দেখলেন ফ্যানের সাথে ঝুলছে অন্তঃসত্ত্বা বধূ 

ঘুম থেকে উঠে দেখলেন ফ্যানের সাথে ঝুলছে অন্তঃসত্ত্বা বধূ  - ফাইল ছবি

সিলেটের ওসমানীনগরে গলায় রশি দিয়ে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলন্ত এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। মৃতের নাম মায়া বেগম (২৭)। তিনি উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের নজির মিয়ার ছেলে সজ্জাদ মিয়া’র (৩২) স্ত্রী ও সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর থানার জয়দা গ্রামের আনা মিয়া মেয়ে।

প্রায় ৬ বছর আগে সজ্জাদ মিয়ার সাথে তার বিবাহ হয়। তার ৫ বছরের আনজুমা বেগম নামের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। স্বামী সজ্জাদ মিয়ার পরিবার এ মৃত্যুকে আত্মহত্যা বললেও মায়া বেগমের পরিবার এটাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করছে। পুলিশ আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মৃতের স্বামী সজ্জাদ মিয়াকে আটক করেছে।

জানা যায়, গত সোমবার দিবাগত রাত ১২টার পরে মায়া বেগমের স্বামী সজ্জাদ মিয়া পাশের বাড়ি থেকে এসে ঘরের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ পেলে তার স্ত্রীকে দরজা খোঁলার জন্য ডাকাডাকি করেন। স্ত্রী মায়া বেগম দরজা না খুললে সজ্জাদ মিয়ার মা স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হিসাবে হয়তো ঘুমিয়ে পড়েছেন, তাই তাকে অন্য কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ার জন্য বলেন। সজ্জাদ মিয়া মায়ের কথামতো অন্য একটি কক্ষে ঘুমিয়ে পড়েন।

সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠে স্ত্রীকে আবার ডাকলে স্ত্রী শয়ন কক্ষের দরজা খোলেননি। তখন তারা ঘরের অন্য কক্ষের সাথে সংযুক্ত দরজা খোলার চেষ্টা করলে এক পর্যায়ে দরজার ভেতরের লাগানো ছিটকিনি খুলে যায়। তখন বাড়ির লোকজন দেখতে পান গৃহবধূ মায়া বেগম ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রয়েছেন। তখন বিষয়টি স্থানীয় ইউপি সদস্য ও পুলিশকে জানান। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে নিহতের লাশ ঝুলন্ত অবস্থা থেকে নামিয়ে লাশের সুরত হাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য লাশ সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

মৃতের শ্বাশুরি আছিয়া বেগম (৬০) জানান, রাতে আমরা একসাথে খেয়ে যার যার কক্ষে ঘুমিয়েছি। রাত ১২টার সময় আমার ছেলে সজ্জাদ মিয়া বাইর থেকে এসে তার কক্ষের দরজা খোঁলার জন্য স্ত্রীকে ডাকাডাকি করেন। কক্ষের ভিতর থেকে দরজা লাগানো ছিল। এসময় আমি সজ্জাদ মিয়াকে বলি, তোমার স্ত্রী যেহেতু অন্তঃসত্ত্বা সেহেতু অন্য কক্ষে ঘুমিয়ে পড়। রাতে সজ্জাদ অন্য কক্ষে ঘুমিয়ে পড়ে। সকাল ৬টায় উঠে অনেক ডাকাডাকি করলে বউ দরজা খোলেননি। এক পর্যায়ে দরজার ছিটকিনি খোলে দেখা যায়, বউ ফ্যানের সাথে ঝুলে রয়েছেন। আমরা আর কিছু জানিনা।

মৃতের বাবা আনা মিয়া জানান, আমার মেয়েকে তারা হত্যা করে ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে রেখেছে। ফ্যানের একটি ডানার সাথে মাটিতে হাটুগালা দিয়ে ঝুলে একজন মানুষ আত্মহত্যা করতে পারেনা। তার লাশ মাটির সাথে হাটুগালা অবস্থায় ছিলো। আমি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

এ ব্যাপারে ওসমানীনগর থানার অফিসার্স ইন্চার্জ মোহাম্মদ রাশেদ মোবারক বলেন, ঝুলন্ত অবস্থায় একজন অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ ময়না তদন্তের জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। মৃতের বাবার পক্ষ থেকে মামলা দেয়া হচ্ছে। মৃতের স্বামীকে আটক করা হয়েছে। তাকে কোর্টে চালান করা হবে। 

 


আরো সংবাদ



premium cement