২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মসলার সাথে গরুর খাদ্য মিশিয়ে বিক্রি, আটক ১

- ছবি : নয়া দিগন্ত

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে থামছে না মসলা মিল মালিকদের ভেজাল মসলা উৎপাদন। আইনশৃংখলা বাহিনী কিছু দিন পর পর এসব ভেজাল মসলা মিলে অভিযান করে থাকেন। মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর বিভিন্ন উপাদান পেয়ে জেল-জরিমানা করলেও বন্ধ করা যাচ্ছে না তাদের কার্যক্রম।

স্থানীয় ব্যবসায়ী সূত্রে জানাযায়, দুই/তিন জন ব্যবসায়ী নেতার ছত্রছায়ায় এসব ভেজাল মসলা উৎপাদন করছে অসাধু মসলা মিল মালিকরা। জেল-জরিমানা করার পর এসব অসাধুরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠে। জেল-জরিমানার খরচ বের করতে তখন তারা ভেজাল মসলা উৎপাদনে আরো মরিয়া হয়ে উঠে। দিনে কিংবা রাতে সুযোগ বুঝে তারা মসলার সাথে রং আর গো-খাদ্য মিশিয়ে হাজার হাজার কেজি নিত্যদ্রব্য মসলা উৎপাদন করে থাকে। আর এসব ভেজাল মসলা বিক্রি করে শহর থেকে গ্রামের প্রত্যান্ত অঞ্চলের খুচরা দোকানদারের কাছে।

অভিযোগ রয়েছে, দুই/চারটি মিল ছাড়া শহরের এসব মসলা মিলের নেই কোন পরিবেশের ছাড়পত্র কিংবা অনুমোদন। সচেতন মহলের দাবী এসব অবৈধ মসলা মিলগুলোকে স্থায়ীভাবে বন্ধ করা না হলে মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়বে মানব স্বাস্থ্য।

প্রশাসন সূত্র জানায়, গত শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) রাত এগারটার দিকে শহরের সোনার বাংলা রোডে নাম বিহীন একটি মসলা মিলে অভিযান চালান সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহমুদুর রহমান মামুন। এসময় তাকে সহযোগিতা করেন শ্রীমঙ্গল থানার এসআই সুমনসহ সঙ্গীয় ফোর্স। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পরিচালিত এ অভিযানে মসলার সাথে ধানের ভূষি মেশানোর দায়ে উপজেলার জানাউড়া গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে রকিব মিয়াকে আটক করা হয়। জব্দ করা হয় গরুর খাবার ১২ বস্তা ধানের ভূষি। ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন ২০০৯-এর ধারা অনুযায়ী জরিমানা করা হয় ১০ হাজার টাকা, সাথে সিলগালা করা হয় মসলা মিলটি।

সূত্র আরো জানায়, এর আগেও কয়েকবার এ মিলটিতে অভিযান করে ডিবি পুলিশসহ ভ্রাম্যমান আদালত। জব্দ করা হয় ভেজাল চা পাতাসহ মসলা। শুধু এই মিল’ই নয় শহরে ও শহরতলির অন্তত এক ডজন মসলা মিল আছে যেগুলোতে নিয়মিতই উৎপাদন করা হচ্ছে ভেজাল মসলা। চক্রটি দীর্ঘ দিন থেকে মসলার সাথে কাঠের গুড়া, মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর কাপড়ের রং সহ বিভিন্ন ভেজাল দ্রব্য মিশিয়ে উৎপাদন করছে মসলা। আর এদের মদদ দিচ্ছেন শহরের অন্তত দুই/তিনজন ব্যবসায়ী নেতা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির এক নেতা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের অবস্থা এমন হয়েছে শস্য ক্ষেতে ভুতের মতো। একমাত্র প্রশাসনের শক্ত অবস্থান ছাড়া এদের অসাধু কারবার বন্ধ করা কঠিন।’

এ ব্যাপারে নবাগত সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহমুদুর রহমান মামুন ভেজাল বিরোধী অভিযানের কথা নিশ্চিত করে বলেন, ‘শ্রীমঙ্গলে যোগদানের পর এটাই আমার প্রথম অভিযান। ভবিষতে এ ব্যাপারে আরো কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে।’

 


আরো সংবাদ



premium cement