ধর্ষণের আসামি ছিনিয়ে নিতে পুলিশের উপর হামলা
- ওসমানীনগর (সিলেট) সংবাদদাতা
- ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ২১:৩৩
সিলেটর ওসমানীনগরে পুলিশের কাছ থেকে ধর্ষণ মামলার আসামি ছিনিয়ে নিতে আসামির সহযোগী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে বলে জানা গেছে। পুলিশ পাল্টা জবাব দিতে ১১ রাউন্ড গুলি ছুড়লে আসামির সহযোগীরা পালিয়ে যায়।
এসময় পুলিশ সংঘর্ষের স্থানের কিছু দূর থেকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করেছে। ধৃত আসামির নাম খোকন মিয়া বালি (২৮)। তিনি বাগেরহাট জেলার কচুয়া থানার ধননগর গ্রামের জাহাঙ্গীর বালির ছেলে। তাকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জানা যায়,গত ৮/৯ মাস পূর্বে অভিযুক্ত খোকন মিয়া বালি খুলনা জেলার দৌলতপুর থানার দফাদার পাড়া (কুলি বাগান) গ্রামের নুর মুহাম্মদ শেখ এর মেয়ে রুনা বেগম (৩৪) এর ছেলে আশিক মিয়া হাওলাদারকে ট্রাক চালনা শেখানোর কথা বলে সম্পর্ক গড়ে তুলেন। এক পর্যায়ে রুনা বেগমের সাথে তার অবৈধ সম্পর্ক হয়ে যায়। তখন তারা স্বামী-স্ত্রীর ন্যায় ৬/৮ মাস একটি বাসায় একত্রে বসবাস করেন। শুধুমাত্র ট্রাক চালনার আয় দিয়ে তাদের সংসার চলে না এ অজুহাত দেখিয়ে খোকন রুনার কিছু গহনাপাতি, বাসার জিনিসপত্র বিক্রি করেন বলেও জানান রুনা বেগম। এসময় রুনা বেগম বিবাহের জন্যে খোকনকে চাপ দেন।
গত ১৪ আগস্ট খোকন বালি রুনা বেগমের মেয়ে আয়েশা আক্তারকে ফুসলিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দেন। এরপর থেকে খোকন আর আয়েশাকে খোঁজে পাওয়া যায়নি। গত ৪ সেপ্টেম্বর আয়েশা আক্তার খোকন বালির ব্যবহৃত মোবাইল নং ০১৮৯১৯৯১০৮১ থেকে তার মা রুনা বেগমকে ফোন করে জানায়, খোকন তাকে সিলেটের ওসমানীনগর থানার উমরপুর ইউনিয়নের কামালপুর গ্রামের প্রবাসী মাহমুদ আলীর বাড়িতে আটকে রেখে পালাক্রমে ধর্ষণ করেছে।
বিষয়টি শুনে রুনা বেগম গোপনে ওসমানীনগর থানার কামালপুরস্থ প্রবাসী মাহমুদ আলীর বাড়িতে এসে সত্যতা নিশ্চিত হন। রুনা বেগম ঐদিন বিকেলেই ওসমানীনগর থানায় এসে একটি লিখিত এজাহার দায়ের করেন। পুলিশ এজাহারের আলোকে তদন্ত করতে গিয়ে ঐদিন রাতে কামালপুর গ্রামে প্রবাসী মাহমুদ আলীর বাড়িতে অভিযান চালিয়ে খোকন বালিকে গ্রেফতার করেন।
খোকন বালিকে গ্রেফতারের পর থানায় নিয়ে আসার পথে রাত সাড়ে দশটায় উপজেলার লামা ইসবপুরস্থ পথে খোকন বালির সহযোগীরা দেশীয় অস্ত্র ও লাটি-সোটা নিয়ে পুলিশের গাড়ির ইপর হামলা চালিয়ে গ্রেফতারকৃত আসামি খোকন বালিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এসময় পুলিশ আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছুড়লে আসামিদের সহযোগীরা পালিয়ে যায়। পুলিশ তখন দেড়শ গজ দূরে একটি দেওয়ালের পাশে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় খোকন বালিকে উদ্ধার করে।
এছাড়া দেশীয় সুলফি হাতে জাহাঙ্গীর বালি নামের আরেকজনকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে থানা পুলিশ। সংঘর্ষ চলাকালে পুলিশের এসআই ইয়াসির আরাফাত চৌধুরী, সাইফুল মোল্লা, কনস্টেবল জীবন ও শিমুল আহত হন।
পুলিশ আহত খোকনকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে। আহত পুলিশ কর্মকর্তাদের বালাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। পুলিশ রুনা বেগমের এজাহারকে মামলায় নথিভূক্ত (মামলা নং-১০) করেন। পুলিশি কাজে বাঁধা দেওয়ার অপরাধে ধৃত খোকনের বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা (মামলা নং-১১) নথিভূক্ত করা হয়েছে।
ওসমানীনগর থানার অফিসার্স ইনচার্জ এস এম আল মামুন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা