২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তাহিরপুরে শিক্ষার্থী রুবেল হত্যা মামলায় বাবা ও ২ ছেলের যাবজ্জীবন

-

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলায় শিক্ষার্থী রুবেল পুরকায়স্থ হত্যা মামলায় বাবা ও তার দুই ছেলকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে। সেই সাথে প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো দুই মাসের সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছে আদালত।

নিহত রুবেল পুরকায়স্থ তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামের রনজিৎ পুরাকায়স্থের জ্যেষ্ঠ পুত্র ও বাদাঘাট পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল।

আজ সোমবার সকাল ১১টায় এই দন্ডাদেশ দেন সুনামগঞ্জের দায়রা ও জজ আদালতের অতিরিক্ত দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন।

দন্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামের মৃত জোয়াহের আলীর পুত্র মীর্জা হাছন আলী ও তার দুই পুত্র নোমান মিয়া ও কালা মিয়া।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডিশনাল পি.পি সোহেল আহমদ সইল মিয়া এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এছাড়াও এই ঘটনায় মীর্জা মশ্রব আলী, নাছির উদ্দিন খান, শায়েস্তা মিয়া ও বাবুল মিয়া নামে চারজনকে মামলা থেকে খালাস দেয়া হয়েছে।

নিহত রুবেলের বাবা রনজিৎ পুরকায়স্থ এ রায়ে অসন্তুষ্টির কথা জানিয়ে বলেন, আমরা ফাঁসির দাবি জানিয়েছিলাম। মামলায় সাতজন আসামি ছিল। কিন্তু আদালত তিনজনের যাবজ্জীবন দিয়েছে। বাকিদের খালাস দিয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে যাব।

মামলা সূত্রে জানান যায়, ২০০০ সালের ২০ আগস্ট রাতে তাহিরপুর উপজেলার চিকসা গ্রামের রনজিৎ পুরাকায়স্থের জ্যেষ্ঠ পুত্র রুবেলকে পড়ার টেবিল থেকে কাজের কথা বলে বাড়ির বাইরে নিয়ে যায় প্রতিবেশী মীর্জা হাছন আলীর ছেলে নোমান মিয়া। মধ্যরাত হওয়ার পরও ছেলে না আসায় ঘুমিয়ে পড়েন রনজিৎ ও তার স্ত্রী। রাত ২টায় বাইরে চোর চোর চিৎকার শুনে রনজিৎ ও স্ত্রী উষারাণী এগিয়ে গেলে তখন প্রতিবেশি আলীর পুত্র মীর্জা হাছন আলী ও তার দুই ছেলে নোমান মিয়া ও কালা মিয়া চোর অপবাদ দিয়ে ছেলে রুবেলকে খুনের হুমকি দিয়ে শাসিয়ে যান।

এসময় রনজিৎ ও স্ত্রী উষারাণী ছেলে রুবেলের রক্তাক্ত দেহ পুকুর পারে পড়ে থাকতে দেখেন। গুরুতর আহত রুবেল তার মা-বাবাসহ সাক্ষীদের জানায়, চোর অপবাদ দিয়ে প্রতিবেশী মীর্জা হাছন আলী ও তার দুই পুত্র নোমান মিয়া ও কালা মিয়া ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা করেছে তাকে। এক পর্যায়ে জ্ঞান হারিয়ে গেলে রুবেলকে তাহিরপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এই ঘটনায় পরদিন মীর্জা হাছন আলী ও তার দুই ছেলে নোমান মিয়া ও কালা মিয়াসহ সাতজনকে আসামি করে নিহত রুবেলের বাবা রনজিৎ বাদি হয়ে তাহিরপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে চার্জশীট দাখিল করে তাহিরপুর থানা পুলিশ। সোমবার সাক্ষ্য-প্রমাণ গ্রহণ ও শুনানি শেষে দন্ডাদেশ দেন বিচারক।

এসময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এডিশনাল পি.পি সোহেল আহমদ সইল মিয়া, বাদীপক্ষের আইনজীবী রবিউল লেইস ও আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জামিনুল হক উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement