২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫
`

উপজেলা পরিষদের জমি দখল করে আ’লীগ নেতার দোতলা বাড়ি

উপজেলা পরিষদের জমি দখল করে বানানো আওয়ামী লীগ নেতার দোতলা বাড়ি - নয়া দিগন্ত

জমির মালিক উপজেলা পরিষদ। খাজনা বা কর সেটাও পরিশোধ করে উপজেলা পরিষদ। কিন্তু সেখানে দোতলা বাড়ি বানিয়ে দিব্যি বসবাস করছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। ঘটনাটি ঘটেছে সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলায়। আর অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতার নাম মোহাম্মদ আলী। তিনি জেলার জামালগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি।

উপজেলা আ’লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী দলীয় ক্ষমতার দাপটে উপজেলা পরিষদের জায়গায় বহুতল ভবন নির্মাণ করে বেআইনী ভাবে দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এই জায়গার খজনা পরিশোধ করছে জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদ। এদিকে বহুতল ভবন নির্মাণ করে বসবাস এবং অবৈধ দখল উচ্ছেদে জেলা প্রসাশক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

বুধবার বিকেলে উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের মানিগাঁও গ্রামের বাসিন্দা শাহ মোঃ আবুল কাশেম বাদী হয়ে উপজেলা পরিষদের জায়গা থেকে অবৈধভাবে নির্মাণাধীন আওয়ামী লীগ সভাপতির ওই ভবনটি উচ্ছেদ করার জন্য জেলা প্রসাশক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, জামালগঞ্জ থানাধীন ১৮নং জে-এল সংক্রান্ত কামলাবাজ মৌজার এসএ খতিয়ান নং ৮৩২, আর এস ১৩০৩ খতিয়ানের এসএ-৩৭৬১, আরএস-৭২৪৫ দাগে ১৬ শতাংশ ভূমি এলএ কেইস নং ০১/৬৫-৬৬ মূলে টিডিসি, জামালগঞ্জ এর নামে অধিগ্রহণ করা হয় এবং তা যথারীতি গেজেটে প্রকাশিত হওয়ার পর উক্ত ভূমি ১২৯৫ নম্বর নামজারি খতিয়ানে সৃজন করা হয়। যার এসএ ৩৭৬১ দাগের ভূমি উপজেলা পরিষদের অধিগ্রহণকৃত হওয়ায় ভূমি মোকাদ্দমা নং ০৬/২০০৫ মূলে উপজেলা পরিষদের নামে ২নং খতিয়ানে রেকর্ড সংশোধন করা হয়েছে। বর্তমানে এসএ ৩৭৬১ নং দাগটি হালে ৭২৪৫ দাগে ভূমিতে উপজেলা পরিষদ জামালগঞ্জ দখলদার থেকে যথারীতি ভূমি উন্নয়ন করও পরিশোধ করে আসছে।

অনেকেই বলেছেন আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর প্রায় ৯-১০ বছর আগে উপজেলা সদরের বাসিন্দা মৃত আব্দুল লতিফ তালুকদারের ছেলে ও বর্তমান উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে উপজেলা পরিষদের সরকারি ওই ১৬ শতক জায়গা দখল করে নেন। পরে তিনি তার দখলকৃত ওই সরকারি জায়গায় একটি দ্বিতল ভবন নির্মাণ করে পরিবার নিয়ে বসবাস শুরু করেন। তিনি এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে কেউ প্রকাশ্যে কথা বলার সাহস পায় না।

এদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসক বরাবরে অভিযোগ দায়েরের খবরটি এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর থেকেই এ বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ আলী বলেন, আমি সরকারি জায়গা দখল করে বাড়ি নির্মাণ করিনি। ওই জায়গার মালিক ছিলেন সাইফুল ইসলাম নামে এক ব্যক্তি। আমি তার কাছ থেকে সাফ-কাওলা দলিল মূলে ওই জায়গাটি ক্রয় করে সেখানে বাড়ি নির্মাণ করেছি।

এ বিষয়ে জামালগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল বলেন, অভিযোগটি দেখে তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা চেয়ারম্যান শামছুল আলম তালুকদার ঝুনু মিয়া বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতির বাসভবনের ওই জায়গাটি সরকারি কিনা তা আমার জানা নেই। তবে এ নিয়ে তদন্ত করা হলেই সঠিক বিষয়টি বেরিয়ে আসবে বলে আমি মনে করি।

জেলা প্রশাসনের দায়িত্বে থাকা ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শফিউল আলম বলেন, এ বিষয়ে কয়েকজন আমার কাছে এসেছিলেন। আমি তাদেরকে মৌখিক না, লিখিত অভিযোগ দিতে বলি। অভিযোগটি এখনো আমার হাতে পৌঁছায়নি। অভিযোগটি হাতে এলে তদন্ত সাপেক্ষে এ বিষয়ে প্রযোজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement