হাওরে হোড়ায় বসতি
- তাহিরপুর (সুনামগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ২১ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:৩৫
সুনামগঞ্জের ১১টি উপজেলার হাওরগুলোতে সোনালী ফসল সংগ্রহে কৃষকরা ধান শুকানো খলায় হোড়া (অস্থায়ী বসতি, স্থানীয় ভাষায় হোড়া) তৈরি করেছেন। বাড়ি থেকে জমির দূরত্ব বেশি থাকার কারণে ধান সংগ্রহ ও তদারকি করার জন্য হোড়ায় বসতি শুরু করেছেন কৃষকরা।
বৈশাখ মাসের শুরুতেই এক ফসলী বোরো ধান ঘরে তোলার জন্য কৃষকের প্রাণপণ চেষ্টা, সারাদিন ঘাম ঝরানো কষ্ট। সব কষ্টই যেন আনন্দে পরিনত হয় সোনাবরণ ধানগুলো গোলায় তুলতে পারলেই।
তবে এর মাঝে প্রকৃতির বৈরি আচরণ কালবৈশাখী ঝড় ও শীলাবৃষ্টির ধান সংগ্রহের প্রধান অন্তরায়। কালবৈশাখী ঝড়, শীলাবৃষ্টি, বোরোধানে চিটাসহ নানান কারণে এবারও জেলার দিরাই, শাল্লা, তাহিরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশাসহ ১১টি উপজেলার হাওরগুলোতে কষ্টে ফলানো জমিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আরো আছে শ্রমিক সংকট। ফলে কৃষকরা দিশেহারা।
এসবের মধ্যেও থেমে নেই হাওরপাড়ের সংগ্রামী কৃষক। অতিরিক্ত টাকা দিয়ে হলেও শ্রমিক নিয়োগ করার চেষ্টা করেছেন নিজের পরিবার পরিজন নিয়ে। আর ইতোমধ্যেই পুরোদমে শুরু হয়েছে ধান কাটা আর মাড়াই বাছাইয়ে ব্যস্থ সময় পাড় করছেন তারা।
কৃষক সাদেক আলী জানান, তার কোন জমি নেই। তারপর বছরের খাবার জোগাড় করতে স্ত্রী সন্তান নিয়ে শনির হাওরে এক খণ্ড অনাবাদি উঁচু জমিতে ছন ও বাঁশ দিয়ে হোড়া বানিয়েছেন। গত এক সপ্তাহ ধরে এ হাওরেই রাত্রিযাপন করছেন। কৃষিকাজে স্বামী-স্ত্রীমিলে অন্যর জমি ধান কাটা থেকে শুরু করে মাড়াই,ঝাড়া,শুকানোর কাজ করছেন তারা।
সরেজমিন দেখা যায়, ধান ঘরে তোলার জন্য হাওরে শতাধিকছোট ছোট অস্থায়ী ঘর রয়েছে। বিশাল হাওরের এক কোনায় অস্থায়ী ছনের ঘরে রাত্রিযাপন করার জন্যই হোড়া তৈরি করা হয়েছে। ঝড়বৃষ্টি না হলে সারা রাত হাওরেই কাটান তারা।
তাহিরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, শীলাবৃষ্টিতে ধানের ক্ষতি হলেও হাওরে বাকি ধান তোলা নিয়ে কৃষকদের মধ্যে অন্যরকম উৎসাহ উদ্দীপনা বিরাজ করছে। উপজেলার বেশিসংখ্যক হাওরেই এখনও শ্রমিকসংকট রয়েছে। তারপরও আশা করছি ভালভাবেই ফসল ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর সুনামগঞ্জ জেলায় ১১টি উপজেলার ছোট বড় সবকটি হাওরে ২ লাখ ২৪ হাজার ৫শ ৫২ হেক্টর বোরো জমিতে চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এতে ১৪ লাখ মেট্রিক টন ধান উৎপাদন হওয়ার কথা, যার বাজারমূল্য হবে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা