২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

একই পরিবারের সবাই প্রতিবন্ধী

- নয়া দিগন্ত

সিলেটের বিশ্বনাথে একটি হতদরিদ্র পরিবারের ৪ জন সদস্যের সকলেই প্রতিবন্ধী। তাদের মধ্যে ৩ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী (অন্ধ) ও ১ জন শ্রবণ প্রতিবন্ধী (বধির)। তারা উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের পাঠানেরগাঁও (তালুজগত) গ্রামের মৃত মন্টাই মিয়ার মেয়ে রুবিনা বেগম (২৮), মিনারা বেগম (২৫), রুকসানা বেগম (১৮) ও ছেলে লিলু মিয়া (২৩)।

এতিম অসহায় এই প্রতিবন্ধীরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। অনাহারে-অর্ধাহারে কাটছে তাদের জীবন। কখনো একবেলা খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে উপোস থাকতে হচ্ছে এই পরিবারের সদস্যদেরকে।

জানা গেছে, পাঠানেরগাঁও (তালুজগত) গ্রামের মন্টাই মিয়া ও ফুলতেরা বেগম দম্পতির ঘরে জন্ম নেয় ৪ মেয়ে ও ১ ছেলে। দুই মেয়ে মিনারা বেগম, রুকসানা বেগম ও ছেলে লিলু মিয়া দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। বড় মেয়ে রুবিনা বেগম বধির (শ্রবণ প্রতিবন্ধী) হিসেবে জন্মগ্রহণ করেন।

রুকসানা বেগম জন্মের দুই বছর পর ১৬ বছর আগে হতদরিদ্র এই পরিবারের প্রতিবন্ধী সন্তানদের অভিভাবক তাদের পিতা মন্টাই মিয়া মরা যান। এরপর তাদের মা ফুলতেরা বেগম অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে কোনমতে সন্তানদের লালন পালন করেন এবং প্রায় ৮ বছর আগে পরিবারের বড় মেয়ে রুবিনা বেগমকে বিয়ে দেন। মেয়ের বিয়ের ৬ মাস পরই মারা যান ফুলতেরা বেগমও।

তিনি মারা যাওয়ার পর প্রতিবেশীরা ২য় মেয়ে অন্ধ (দৃষ্টি প্রতিবন্ধী) রুবিনা বেগমকে বিয়ে দেন। কিন্ত সে কিছু দিন সংসার করার পর বধির হওয়ায় সেই সংসার টিকেনি বেশিদিন। ফলে তাকে পিত্রালয়ে ফিরে আসতে হয়। বর্তমানে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ২ বোন ও ১ ভাইকে দেখাশুনা করছেন রুবিনা বেগম।

সরেজমিনে পাঠানেরগাঁও (তালুজগত) গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, মৃত মন্টাই মিয়ার প্রতিবন্ধী ৪ সন্তান অভিভাবকহীন অবস্থায় একটি কুড়েঘরে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে শ্রবণ প্রতিবন্ধী রুবিনা বেগম বলেন- ‘আমি কানে শুনি না। আমার দৃষ্টি প্রতিবন্ধী একমাত্র ভাই ও দুই বোনকে দেখাশুনা করছি আমি। তারা তিনজনের প্রতিবন্ধী ভাতায় এবং প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় কোন মতে চলছে আমাদের সংসার। আমরা কখনো খাই আবার কখনো উপোষ থাকি। আমাদের ভিটেমাটি ছাড়া আর কিছুই নেই।’

তাদের প্রতিবেশী ও গ্রামের অনেকের সাথে আলাপকালে জানা গেছে, ওই প্রতিবন্ধী পরিবারের দৃষ্টি প্রতিবন্ধী (অন্ধ) ২ মেয়ে ও ১ ছেলে সরকারি সামান্য ভাতা দিয়ে ৪ জনের পরিবার চালিয়ে যেতে অনেকটা হিমশিম খাচ্ছেন। পরিবারে উপার্জনের কোন ব্যক্তি না থাকায় কখনো একবেলা খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে উপোস থাকতে হচ্ছে তাদেরকে। অনাহারে-অর্ধাহারে কাটছে তাদের জীবন।

যার ফলে এ পরিবারের দুঃখ-কষ্ঠের সীমা নেই। মানবিক কারণে হলেও এই পরিবারের সদস্যদের প্রতিবন্ধী রক্ষা করার জন্য সরকারী-বেসরকারী সাহায্য একান্ত প্রয়োজন। যদি প্রতিবন্ধী ভাতা প্রদানের পাশাপাশি সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগে এই প্রতিবন্ধীদেরকে আর্থিক সহায়তা করা হয় তাহলে হয়ত অসহায় প্রতিবন্ধীদের বেঁচে থাকাটা সহজ হবে। এজন্য মানবিক কারণে হলেও সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগের পাশাপাশি বিশ্বনাথের প্রবাসী ও বিত্তবানদেরকেও এ অসহায় পরিবারকে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা বড়ই প্রয়োজন।


আরো সংবাদ



premium cement
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ২৮ এপ্রিল খুলে দেয়ার প্রস্তুতি, ক্লাস চলবে শনিবারও মিরসরাইয়ে জুস খাইয়ে অজ্ঞান করে লুট, মূল হোতা গ্রেফতার বৃষ্টি কামনায় ঈশ্বরগঞ্জে জামায়াতে ইসলামীর ইসতিসকার নামাজ আদায় কুবিতে আল্টিমেটামের পর ভিসির কার্যালয়ে তালা ঝুলাল শিক্ষক সমিতি সাজেকে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ শ্রমিক নিহতের খবরে ঈশ্বরগঞ্জে শোক দুর্যোগে এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি মৃত্যু কেন বাংলাদেশে? জবিতে ভর্তি পরীক্ষায় আসন বেড়েছে ৫০টি বিএনপি ক্ষমতায় আসতে মরিয়া হয়ে উঠেছে : ওবায়দুল কাদের মাটির নিচে পাওয়া গ্রেনেড মাইন মর্টার শেল নিষ্ক্রিয় করল সেনাবাহিনী অনির্দিষ্টকালের জন্য অনলাইন ক্লাসে যাচ্ছে জবি, বন্ধ থাকবে পরীক্ষা কুড়িগ্রামে রেলের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদ

সকল